দেশের সময়, বনগাঁ: বনগাঁ: বনগাঁয় বোমা বিস্ফোরণে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। পুলিশকে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার এবং আরও বেশি খবর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বনগাঁর বিস্ফোরণের ঘটনায় ইতিমধ্যেই অসিত অধিকারী ও বাপ্পা বিশ্বাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার তাদের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশ করে বনগাঁ থানার পুলিশ। এদিকে ধৃত ওই দুই অভিযুক্তর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ধৃতরা তৃণমূলের সমর্থক বলে দাবি করছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসক শিবির।
বনগাঁ পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর দেবদাস মণ্ডলের দাবি, বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ধৃত অসিত অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। বিজেপি কাউন্সিলরের দাবি, ‘অসিত অধিকারী তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডা। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপাই রাহার ছত্রছায়ায় ওই ব্যক্তি থাকে। আমাদের কাছে খবর আছে, গতকালের ঘটনার পর তারা দু’জন মৃত কিশোরের বাড়িতে সেটিং করতে গিয়েছিল।’ বিজেপি কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘এই জঘন্য অপরাধের চরম শাস্তি হওয়া উচিত। প্রশাসন যেন এর সঠিক তদন্ত করে। পাপাই রাহার সঙ্গে ওই অভিযুক্তকে কেন দেখা গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখুক পুলিশ।’
এদিকে বিজেপি কাউন্সিলরের এই অভিযোগকে পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর পাপাই রাহা। তৃণমূল কাউন্সিলর পাল্টা বলেন, ‘দেবদাস মণ্ডল বামফ্রন্ট আমলের দাগী দুষ্কৃতী। উনি যে ছবির কথা বলছেন… আমরা জনপ্রতিনিধি, আমাদের কাছে বিভিন্ন লোক আসেন। কিন্তু অসিত অধিকারীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, সেটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ তৃণমূল কাউন্সিলরের সাফ বক্তব্য, ‘দুষ্কৃতীর কোনও রং থাকে না। তৃণমূল কখনও দুষ্কৃতীদের নিয়ে চলে না। ২০২১ সালে বিজেপি এখানে জেতার পর দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে।’
শাসক দলের কাউন্সিলরের বক্তব্য, ‘একটি বাচ্চা মারা গিয়েছে। তখন সেই শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকা আমার কর্তব্য। সেই কারণেই আমি সারাক্ষণ সেখানে ছিলাম। কিন্তু উনি যদি প্রমাণ করতে পারেন, অসিত অধিকারীর সঙ্গে গতকাল আমি ওনার বাড়ি গিয়েছি, তাহলে যা শাস্তি হবে মাথা পেতে নেব। কিন্তু যদি উনি প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে আমি ওনার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছিল মৃত কিশোরের পরিবারের সঙ্গেও। কিশোরের বাবা প্রশান্ত রায় বলেন, ‘আমার যা যাওয়ার, তা চলে গিয়েছে। তাকে আমি আর ফিরে পাব না। এই ধরনের কাজ যাতে আর না হয়, সেই ব্যবস্থা যেন করা হয়। কে তৃণমূল, কে বিজেপি… এসবের মধ্যে আমি যেতে চাই না।’ একইসঙ্গে প্রশান্তবাবু এও জানিয়েছেন, পাপাই রাহা তাঁর বাড়িতে এলেও অভিযুক্ত অসিত অধিকারী তাঁর বাড়িতে আসেননি। বিজেপির অভিযোগ ‘ফালতু কথা’ বলেই জানাচ্ছেন তিনি।