দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আগামী ১৮ জুলাইয়ের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মুকে মনোনীত প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করল গেরুয়া দল।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মনোনীত প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ অন্যান্যরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মু ওড়িশার একজন উপজাতি নেত্রী। নির্বাচিত হলে বছর চৌষট্টির দ্রৌপদী মুর্মু হবেন দেশের ইতিহাসে প্রথম উপজাতীয় মহিলা এবং দ্বিতীয় মহিলা যিনি শীর্ষ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত হবেন।
ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের বাসিন্দা দ্রৌপদী আদিবাসী সমাজের মানুষ। জাতিতে তিনি সাঁওতাল। অর্থাৎ সমাজের প্রান্তিক অংশের একজনকে বেছে নেওয়া হল রাষ্ট্রপতি ভবনের আগামী পাঁচ বছরের বাসিন্দা করার জন্য। ওড়িশার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে নির্বাচনে বিজেডির সমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন,আদিবাসীদের মধ্যে আরএসএসের সংগঠন একেবারে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত বিস্তৃত। সেই প্রভাবের জোরেই গত শতকের আটের দশকের শেষ লগ্নে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাতে ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল বিজেপি। যতদিন গিয়েছে, আদিবাসী সমাজে সঙ্ঘের প্রভাব বেড়েছে। পিছু হটেছে খ্রিস্টান মিশনারিরা। স্বভাবতই সেই প্রভাবকে আরও জোরদার করতেই সাঁওতাল সমাজের নারী দ্রৌপদীকে রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠাতে চাইছে আরএসএস।
অন্যদিকে দেশের বিরোধী দলগুলি মিলে মঙ্গলবারই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য তাঁদের সর্বসম্মত প্রার্থী হিসাবে চূড়ান্ত করেছে।
সূত্রের খবর, দিল্লিতে বিরোধীদলীয় বৈঠকে যশবন্ত সিনহার নাম প্রস্তাব করে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি সহ ১৮ টি রাজনৈতিক দল যশবন্ত সিনহার প্রার্থীপদে সমর্থন জুগিয়েছে।
এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, গোপালকৃষ্ণ গান্ধি এবং ফারুক আবদুল্লাহর একে একে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে নিজেদের সরিয়ে আনলে যশবন্ত সিনহার নামেই পাল্লা ভারী হয়।
ওড়িশার আদিবাসী এবং মহিলা মুখ দ্রৌপদী মুর্মুকে মনোনীত করে বিজেপি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিবৃতি দিয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এর আগে রাম নাথ কোবিন্দও ছিলেন উত্তরপ্রদেশের একজন দলিত নেতা। ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনিই ওড়িশার প্রথম মহিলা এবং উপজাতীয় নেত্রী যাঁকে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সংবাদ মাধ্যমকে জেপি নাড্ডা বলেন, “এই প্রথম একজন মহিলা উপজাতি প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আমরা আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য দ্রৌপদী মুর্মুকে এনডিএ-র প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করছি।”
যে দলগুলি বৈঠকে অংশ নিয়েছিল তাদের মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস, এনসিপি, তৃণমূল, সিপিআই, সিপিআই-এম, সমাজবাদী পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, এআইএমআইএম, আরজেডি এবং এআইইউডিএফ। কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং জয়রাম রমেশ, তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএমকে-র তিরুচি শিবা, সিপিআই-এম-এর সীতারাম ইয়েচুরি এবং সিপিআই-এর ডি রাজা এই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন।