দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ক্রমেই মাথাচাড়া দিচ্ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। একের পর এক দলীয় পদ ছাড়ছেন নেতারা। পরিস্থিতি বুঝতে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে রাজ্যে আসছেন বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আগামী মে মাসেই তিনি আসছেন বলে জানা গিয়েছে। সফর সূচিতে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। আলোচনা করবেন পরিস্থিতি নিয়ে।
বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে আগে কখনও দাঁতই ফোটাতে পারেনি বিজেপি। সেই নিয়ে খুব বেশি আশাও ছিল না। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রটি ছিল গেরুয়া শিবিরের দখলে। পরপর দু’বার এই আসনটি দখল করেছিল বিজেপি। সেই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শোচনীয় হার হয়েছে বিজেপির। তিন লক্ষেরও বেশি ভোটে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার কাছে পরাজিত হন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পল। অন্যদিকে বালিগঞ্জ আসনটিতে জমানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে বিজেপির।
গত লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে ১৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। রাজ্যজুড়ে উঠেছিল গেরুয়া হাওয়া। লোকসভা নির্বাচনের পর এবং গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে হিড়িক পড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগদানের। জেলায় জেলায় বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূল কর্মীরা।
যোগ দেন অনেক নেতাও। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রাজ্যের দুই প্রাক্তনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব ব্যানার্জি। এই চিত্রটাই আবার পাল্টাতে থাকে যখন তৃণমূল আবার রাজ্যের মসনদ দখল করে। একের পর এক তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতারা ফিরতে চেয়ে আবেদন করতে থাকেন।
সকলের আবেদনে সাড়া না দিলেও দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয় বেশ কয়েক জন নেতাকে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজীব এবং বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। আবার ফেরার আবেদন করেও ফিরতে পারেননি সোনালি গুহ এবং সরলা মুর্মুরা। আর শুধুমাত্র প্রাক্তন তৃণমূল নেতারাই নয়, স্থানীয়স্তরে অনেক বিজেপি নেতা-কর্মীই তৃণমূলে যোগ দেন। সেই সঙ্গে জেলায় জেলায় বিজেপিতে বাড়তে থাকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
কার্যত সময় যত গড়িয়েছে, ততই অন্তর্দ্বন্দ প্রকট হচ্ছে রাজ্য বিজেপিতে। রাজ্যে সদ্য হওয়া দুই উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার পর প্রকাশ্যেই রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হন নিচু তলার নেতা–কর্মীরা। সেই সঙ্গে দলীয় পদ থেকে ইস্তফাও বাড়তে থাকে।
মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং শিলিগুড়িতে দলীয় পদ ছেড়েছেন বেশ কয়েক জন বিধায়ক ও নেতা। বিজেপি সূত্রে খবর, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এবং সামাল দিতেই রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ। উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে একদিকে যেমন উঠবে রাজ্যে দলের ব্যর্থতার দিকটি, সেই সঙ্গে আলোচনা হবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকটিও।