দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছিল প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মারামারিতে। ওই ঘটনায় ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির জেরে এক জনের মাথাও ফেটেছে। প্রকাশ্যেই পিস্তল উঁচিয়ে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যায় বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের নিরাপত্তারক্ষীকে। রাত পোহালেই ভবানীপুর বিধানসভায় উপনির্বাচন। যা নিয়ে পুলিশি তৎপরতা তুঙ্গে। অর্থাৎ আগামী কাল, বৃহস্পতিবার ভোটের দিন যাতে এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল লালবাজার। কোনও নেতা বা মন্ত্রীর দেহরক্ষী যাতে অস্ত্র নিয়ে বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে ঢুকতে না পারেন, বাহিনীর আধিকারিকদের তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ভোট শেষ হওয়া না পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৫ জনের বেশি কেউ জমায়েত করতে পারবে না।
ভবানীপুরে ভোটের দিন যাতে বহিরাগতেরা ঢুকে গোলমাল পাকাতে না পারে, তার জন্য মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার হোটেল এবং অতিথিশালাগুলিতে নজর রাখছে পুলিশ। সেখানে বাইরে থেকে কারা এসে উঠেছেন, তাঁরা কেন শহরে এসেছেন, সে সব খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট থানাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন সিপি। এর পাশাপাশি আজ, বুধবার থেকেই পুলিশ আধিকারিকদের এলাকায় টহল বাড়াতে বলা হয়েছে। ভোটের দিন বাইরের কাউকে ভোটকেন্দ্রের আশপাশে দেখলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও এলাকার বিভিন্ন হোটেল এবং গেস্ট হাউসে বহিরাগতদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মঙ্গলবার কলকাতার নিউ মার্কেট, ভবানীপুর থানা ও বন্দর এলাকার ওয়াটগঞ্জ এবং একবালপুর থানার পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। নির্দেশ দেওয়া হয় ভবানীপুরের উপনির্বাচন যাতে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হয় সেই জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
জানা গিয়েছে, ভবানীপুরে মোট ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। প্রত্যেকটি বুথেই থাকছে আধাসেনা। ৯৮টি ভোট কেন্দ্রে মোট ২৮৭টি বুথ রয়েছে। যার মধ্যে ভবানীপুর থানা এলাকায় সর্বাধিক বুথ রয়েছে। সেখানে বুথের সংখ্যা ৯৯টি।
এলাকায় টহলদারির জন্য থাকছে ২২টি সেক্টর মোবাইল, দিন ও রাতে ২৩টি করে আরটি মোবাইল, ন’টি করে হেভিরেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, ফ্লাইং স্কোয়াড, স্ট্যাটিক সার্ভাইলেন্স টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স। থাকছে ১৩টি কুইক রেসপন্স টিম, তিনটি ডিভিশন স্ট্রাইকিং ফোর্স। নিরাপত্তার নজরদারিতে রাস্তায় থাকবেন একজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, চারজন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, ১৪ জন করে ডেপুটি কমিশনার ও অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার। থাকছে তিনটি অতিরিক্ত কন্ট্রোলরুম, ৩৮টি পুলিশ পিকেট, ইভিএম এসকর্ট করার জন্য ১৪১ টি গাড়ি। থাকছে দুটি স্ট্রং রুমও।
এক পুলিশকর্তা জানাচ্ছেন, গত বারের মতোই ভবানীপুর কেন্দ্রের ভোট শান্তিতে শেষ করতে তৎপর লালবাজার। তার জন্য ওই বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় গত কয়েক দিন ধরে নাকা তল্লাশিও চলছে।