Bengal Bjp: দিনে উত্তর ২৪ পরগণা – রাতে নদীয়া! রাজ্য বিজেপি-তে এখন চড়ুইভাতি – রাজনীতি!

0
608

দেশের সময়,বনগাঁ: রাজ্য বিজেপি-তে ফের চড়ুইভাতির আয়োজন। গত কয়েকদিন ধরে যে ভাবে ক্ষোভ-বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্র করে একের পর এক ‘পিকনিকে’ জেরবার রাজ্য বিজেপি। এমনকী পরিস্থিতি এমন, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ শান্তনুকে বিজেপির বিরোধী দলনেতা বলে কটাক্ষ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ফের পিকনিকে শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর অনুগামীরা।

কয়েকদিন ধরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের গলায় বিদ্রোহের সুর শোনা যাচ্ছে। বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাদের নিয়ে একাধিক বৈঠক এবং বনভোজনও করেছেন তিনি। এরপরই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে, রাজ্য বিজেপির দুই নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এবং রীতেশ তিওয়ারিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে দল। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে, শান্তনু ঠাকুরের প্রসঙ্গ টানেন জয়প্রকাশ।  তিনি বলেন, আমি দলবিরোধী কোনও মন্তব্য করিনি। আমি শান্তনু ঠাকুরের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম।

বিক্ষোভ আবহে প্রথম পিকনিক হয় গত ১৭ জানুয়ারি বনগাঁর নহাটা-তে। দ্বিতীয়টি হয় গত ২৩ জানুয়ারি গোবরডাঙায়। গৈপুরে পুরমণ্ডলের সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগানবাড়িতে ৷

বৃহস্পতিবার তৃতীয় পিকনিক হল গাইঘাটা থানার ঠাকুর নগর ষ ষ্ঠী তলা (পূর্ব মন্ডল এক ) এ৷ যদিও শান্তনু ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, মতুয়া-ক্ষোভ, হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ এবং নতুন রাজ্য ও জেলা কমিটি নিয়ে দলের অন্দরের বিক্ষোভের আবহে বিজেপি-র ‘বঞ্চিত’ কর্মীদের চাঙ্গা করতে রাজ্য জুড়ে পিকনিকের কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাত৮ টা নাগাদ ফের কল্যাণী সেন্ট্রাল পার্কে আরও একটি পিকনিক হওয়ার কথা। আগামীকাল গাইঘাটাতেও পিকনিক হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, ”সবাই পিকনিক করুক। দলের কর্মীদের চাঙ্গা করতে এমন করা হয়েই থাকে।”

ঘটনাচক্রে এদিন বনগাঁর নহাটার বনভোজনে উপস্থিত ছিলেন পদ্মশিবিরের রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়া রীতেশ তিওয়ারি, সায়ন্তন বসু, বর্তমান কমিটির মুখপাত্র তথা প্রাক্তন সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার, বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া-সহ অনেকেই। তবে, বৃহস্পতিবার গাইঘাটার পিকনিকে তাঁদেরকে দেখা না গেলেও এদিনের চড়ুইভাতিতে যা ভিড় হয়েছিল, তাতে বিজেপি-র অন্দরে আলোড়ন কমছে না।

বিজেপির (Bengal BJP) নতুন রাজ্য কমিটিতে মতুয়াদের প্রতিনিধিত্ব না-থাকায় দলীয় হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে আসা দিয়ে এই প্রতিবাদের শুরু। তারপর থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) বেসুরো হয়েই চলেছেন।

একাধিকবার বিক্ষুব্ধ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন বনগাঁর সাংসদ। কলকাতার পোর্টট্রাস্ট গেস্টহাউসে বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতৃত্বের বৈঠকও হয়েছে। তারপর গত ১৭ জানুয়ারি ফের পিকনিককে সামনে রেখে মিলিত হন তাঁরা। এরপর থেকে একের পর এক পিকনিক, যে কারণে বিজেপির বিড়ম্বনা আরও বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর দলের অবস্থানকেই তুলে ধরেন। চড়ুইভাতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন,”আমি বিজেপির কৃষ্টি কালচার সম্পর্কে কিছু বলতে পারব না। এটা সম্পূর্ণ ওই দলের ব্যাপার। বিজেপি কেন্দ্রে এক বাংলায় আর এক ধরনের , তবে গর্ব করে বলতে পারি তৃণমূল দলটা ওই দলের মতো নয় ৷, নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ ঠাকুর বাড়িতে এসেছিলেন কিন্তু মতুয়াদের জন্য কিছুই করেননি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিলে সেই প্রতিশ্রুতির ফল কাজের মাধ্যমে দেন৷ ঠাকুর বাড়ির উন্নয়ন করেছেন৷ বিজেপির মিথ্য প্রতিশ্রুতি বুঝতে পারেনি মতুয়ারা৷ এখন সকলেই বুঝেছেন যে শান্তনু ঠাকুর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-র কথায় সিএএ (CAA ) নিয়ে মিথ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৷ অনেকেই সেই সময় তৃণমূল ছেড়ে চলে গিয়েছেন আবার ফিরেও এসেছে।

বুধবার,চাকদায় গিয়ে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) CAA নিয়ে ফের সুর চড়ান শান্তনু। বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ অবহেলিত হয়েছেন। আমাদের কথা কেউ ভাবেনি। সব দল স্বার্থ বজায় রাখতে আমাদের ব্যবহার করে যাচ্ছে। আমাদের আওয়াজ বাড়াতে হবে।
গতবছর এরাজ্যে প্রথম দফা বিধানসভা ভোটের দিন, বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে, মতুয়া সমাজের সবচেয়ে বড় পীঠস্থান, হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মভিটেয় শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন তাঁর দলের সাংসদ শান্তনু। তিনি বলেন,  প্রধানমন্ত্রী ওড়াকান্দিতে গেছিলেন। গুরুত্ব উপলব্ধি করে গিয়েছিলেন। 

এই প্রসঙ্গে মমতা ঠাকুর বলেন, শান্তনু ঠাকুর নিজেই বলেছিলেন ঠাকুর বাড়িকে রাজনীতি মুক্ত করবেন, ঠাকুর বাড়ি থেকে কেউ ভোটে দাঁড়ালে ভোট দেবেন না, অথচ তিনিই সব থেকে বেশি করে ঠাকুর বাড়িকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যাবহার করেছেন৷ মতুয়া ভক্তরাও তাঁর কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন৷ বিজেপির মিথ্য প্রতিশ্রুতিতে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন শান্তনুও এখন  বুঝেছেন বলেই এসব বলেছেন।

সব মিলিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) CAA ইস্যুতে বিজেপির অন্দরে টানাপোড়েন থামার লক্ষণ নেই। 

Previous articleMamata Banerjee : ফের পাড়ায় মিলবে এক গুচ্ছ পরিষেবা, দুয়ারে পৌঁছবে মমতার ১৪ দফতর ! কবে কিভাবে জানুন
Next articleপ্রাক্তন বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ শেঠ নামাঙ্কিত সেতু নির্মাণ হল বনগাঁ পুরসভার উদ্যোগে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here