দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সাতসকালেই খবর এসেছিল, সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল । এর পরে তাঁকে আনা হয় পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে, সিবিআইয়ের একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এর পরে বিকেলবেলায় আসানসোলের বিশেষ আদালতে তোলা হয় গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রতকে। সেখানে তাঁর ১৪ দিনের হেফাজত চায় সিবিআই হেফাজতের। অবশেষে ১০ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করলেন বিচারক।
এদিন অনুব্রত মণ্ডলকে লক্ষ্য করে জুতো উচিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে অনেকে৷ যদিও জুতো ছুড়ে মারেননি এক্ষেত্রে। তবে কালো জুতো তুলে প্রতিবাদ আসানসোল সিবিআই আদালত চত্বরে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নামার মুখে অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে সিবিআই আদালতে পৌঁছতেই দেখা গেল সেই ছবি।
আসানসোলের আদালত চত্বরে অনুব্রত মণ্ডলকে উদ্দেশ করে জুতো দেখানো হল। এদিন সকালেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তারপর
সিবিআই তাঁকে নিয়ে যায় পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে ৷
সেখান থেকে আসানসোলের বিশেষ আদালতে তোলা হয় কেষ্টকে। আদালত চত্বরে তাঁর দিকে জুতো দেখানো হয় বলে খবর।
আসানসোলের বিশেষ আদালত চত্বরে সকাল থেকেই ভিড় করে ছিলেন বাম এবং বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর তাঁদের মধ্যে উৎসবের আমেজ। কেষ্টকে আদালতে তোলার মুখে ‘চোর চোর’ বলে স্লোগানও দেন তাঁরা। ভিড়ের মধ্যে থেকে আওয়াজ ওঠে, ‘চোর চোর চোট্টা, বীরভূমের কেষ্টটা’। অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন বরাবরই।
আদালতে অনুব্রতকে দেখেই বিক্ষোভ যেন আলাদা মাত্রা পায়। স্লোগানের ঝাঁঝ বেড়ে যায়। পা থেকে জুতো খুলে কেউ কেউ অনুব্রতর দিকে তাক করেন। এছাড়া কেষ্ট মণ্ডলের দিকে নকুলদানাও ছুড়ে দেওয়া হয় বলে খবর।
কিছুদিন আগে ইডি হেফাজতে থাকাকালীন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে যখন জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য আনা হয়েছিল, তখন হঠাৎ এক মহিলা তাঁর দিকে জুতো ছুড়ে মারেন। পার্থবাবুর গায়ে অবশ্য তা লাগেনি। তিনি ততক্ষণে গাড়িতে উঠে পড়েছিলেন। সেই গাড়িতে লেগে নীচে পড়ে যায় জুতো।
দশ-দশবার সিবিআইয়ের হাজিরা এড়িয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রতিবারই শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দিয়েছেন তিনি। তবে দশমবার হাজিরা এড়ানোর পরেই কলকাতা থেকে সোজা বীরভূমে চলে যায় সিবিআইয়ের টিম। বৃহস্পতিবার সকাল সকাল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বোলপুরে কেষ্টর বাড়ি ঘিরে ফেলেন গোয়েন্দারা। সেখান থেকে ঘণ্টা দেড়েক পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আদালতের সামনে বহু মহিলাও এসেছেন এদিন। এমনই একজন রেখা মিত্র বলেন, “কী করেননি উনি। কয়লা থেকে শুরু করে, গরু থেকে শুরু করে, কী করেননি উনি? আমার কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। আমি ওনাকে দেখতে এসেছি। উনি যা করেছেন, প্রতিদিন তো টিভিতে দেখতাম। গরু চোর দেখতে কেমন, তাই এলাম। পুলিশ টুলিশ কিছু লাগবে না। আমার হাতেই ছেড়ে দিক না। দেখে নেব।”
প্রসঙ্গত, এদিন অনুব্রতর আইনজীবীর তরফে জামিনের আবেদনই করা হয়নি আদালতে। জানা গেছে, আজ রাতেই আসানসোল থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে অনুব্রতকে। সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ হল তাঁর।