দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সকাল ১০ টায় নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল।
বৃহস্পতিবার সকাল নটা ৫০ মিনিট। নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে পৌঁছেছিল তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গাড়ি ৷ নামার পর দেখা গিয়েছিল তিনি বাঁ হাত দিয়ে নিজের বুক চেপে ধরে রয়েছেন। আর ডান হাত ছিল দেহরক্ষীর কাঁধে। দুপুর ১ টা ৫৫ মিনিট। নিজাম থেকে বেরিয়ে গেলেন অনুব্রত। দেখা গেল গাড়িতে উঠেই ইনহেলার নিচ্ছেন তিনি। তারপর তাঁর গাড়ি চলে যায় এসএসকেএম হাসপাতালের দিকে।
ফলে ছবি দেখে অনেকেই মনে করছেন, ফের অসুস্থ বোধ করছেন কেষ্ট মণ্ডল। যদিও একটি সূত্রের দাবি, এদিন তাঁর এসএসকেএম হাসপাতালে রুটিন চেকআপ রয়েছে৷
সূত্রের খবর, অনুব্রত এদিন সিবিআই দফতরে পৌঁছে জানিয়েছেন, দুপুর ২ টোয় তাঁর এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর অ্যাপয়ন্টমেন্ট রয়েছে। তাই ২ টো বাজতে ১০ মিনিট আগে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে সিবিআই সূত্র জানাচ্ছে, অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ সম্পূর্ণ হয়নি। তাঁকে আরও জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে। তাই তাঁকে আবার ডাকা হবে।
এর আগে নিজামে আসার পথেই এসএসকেএমে ইউটার্ন করে ঢুকে গিয়েছিল অনুব্রতর গাড়ি। কিন্তু গতকাল বুধবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিবিআই হাজিরা শেষে নিজাম প্যালেস ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জানা যায়, গরু পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির সামনে হাজিরা দিতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল।
গত মাসে চিঠি দিয়ে অনুব্রত ২১ মে পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছিলেন সিবিআইয়ের কাছে। তিনি জানিয়েছিলেন চিকিত্সকদের পরামর্শ মেনে তাঁকে চলতে হচ্ছে। সেই সময়সীমা পার হওয়ার আগে নিজে থেকেই কেষ্ট মণ্ডল সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। এদিন তাঁকে জেরা করেন গোয়েন্দারা।
এদিন এসএসকেএমে পৌঁছে প্রথমে জরুরি বিভাগের সামনে যান কেষ্ট মণ্ডল। তারপর সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় উডবার্ন ওয়ার্ডে। যেখানে কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন বীরভূমের এই তৃণমূল নেতা।
এদিন জেরা শেষে এসএসকেএম হাসপাতালে ঢোকার সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, তিনি কি অসুস্থ? জবাবে মাথা নাড়িয়ে অনুব্রত বলেন, ‘হ্যঁা’।
সূত্রের খবর, ২০ মিনিট গেস্ট রুমে বসানো হয় তাঁকে। এর পর ১৫ তলা থেকে অনুব্রতকে নিয়ে যাওয়া হয় ১৬ তলায়। সকাল ১০টা ১০ থেকে তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৈরি ছিল ৭ পাতায় ৩৬টি প্রশ্ন। তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন গরুপাচার মামলার তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য। সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তব ও এসপি রাজীব মিশ্রের উপস্থিতিতে জেরা করা হয়।
প্রথম দফায় ২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর ১৫ তলায় এনে ফের দ্বিতীয় দফার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে। গরু পাচার কাণ্ডে এনামুল হককে গ্রেপ্তার করে জেরা করে সিবিআই। তার পরেই উঠে আসে অনুব্রতর নাম।