দেশের সময় : ভরি ভরি সোনার গয়না পাননি এবার ৷ তেমন জাঁকজমকও আর নেই। পুজোর আয়োজনে বোলপুরের তৃণমূলের কার্যালয়ের মতো ঠাটবাটও নেই। তবে তাতে কী, মা তারার ভক্ত । আসানসোলের সংশোধনাগারেই মা কালীর ছবিতে জবাফুলের মালা পরিয়ে, নকুলদানা আর কলা দিয়ে পুজো দিলেন অনুব্রত মণ্ডল ।
রাখি পূর্ণিমার দিন বাড়ি ঘিরে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই । নিজাম প্যালেসের জেরাপর্ব মিটিয়ে আপাতত অনুব্রত মণ্ডলের ঠিকানা আসানসোল জেল। কৌশিকী অমাবস্যার প্রাক্কালে জানা গেল অনেকটা ওজনও কমে গিয়েছে গরু পাচার মামলায় ধৃত তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতির।
তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই কৌতূহল তৈরি হয়, কত ছিল আর কত হল?
এদিকে সংশোধনাগারে মায়ের কোনও বিগ্রহ নেই। তবে মা কালীর একটা ছবি আছে। আজ সকাল সকাল স্নান সেরে জেল চত্বরে একটা মার্বেল পাথরের বেদিতে সেই ছবি রেখে তাতে মালা পরিয়ে, সামনে নকুলদানা, কলার নৈবেদ্য সাজিয়ে, ধূপ দেখিয়ে নাকি ভক্তিভরে পুজো সেরেছেন অনুব্রত। সকাল থেকে কিচ্ছুটি নাকি দাঁতে কাটেননি তিনি। পুজো সেরে বিস্কুট দিয়ে এক কাপ লাল চা খেয়েছেন।
বীরভূমের বরপুত্রের কালীপুজোর আয়োজন দেখার মতো। নিজের হাতে পরিপাটি করে বীরভূম জেলা কার্যালয়ের কালীপুজোয় প্রতিমাকে প্রায় ৩০০-৫০০ ভরি সোনার গয়নায় সাজিয়ে পুজো করেন অনুব্রত।
সেই ১৯৮৮ সাল থেকে জেলা অফিসে পুজো হয়ে আসছে। তখন তৃণমূল তৈরি হয়নি। কংগ্রেস দফতরে অনুব্রত মণ্ডলের উদ্যোগেই পুজো হত। দলীয় কর্মীরা পুজোর সমস্ত দায়িত্বে থাকলেও সবটাই পরিচালনা করতেন অনুব্রত নিজে।
দলের শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে তাঁর পুজোর জাঁকজমকও উত্তরোত্তর বেড়েছে। নিয়মকানুন অবশ্য জেলা সভাপতির বাড়ির মতোই। নিজে হাতেই প্রতিমাকে সোনার গয়নায় সাজান। এ বছর অবশ্য ব্যাপারটা আলাদা। তাঁর ঠিকানা এখন আসানসোলের সংশোধনাগার। অগত্যা সেখানেই নকুলদানা দিয়ে মাকে পুজো দিলেন অনুব্রত মণ্ডল।
শুক্রবার কৌশিকী অমাবস্যা। বৃহস্পতিবার অনুব্রতর শারীরিক পরীক্ষা হয়েছিল। সেখানে দেখা যায় তাঁর ওজন দাঁড়িয়েছে ১০৯ কেজি ৯০০ গ্রাম! যে নার্স অনুব্রতর ওজন মাপেন তিনি সে কথা বলতেই নাকি অনুব্রত বলে ওঠেন, “আমার তো ১২০ কেজি ছিল। তাহলে কমে গিয়েছে।”
একটা পূর্ণিমা থেকে অমাবস্যার মধ্যে ১০ কিলো ওজন কমিয়ে ফেলা মামুলি ব্যাপার না। ডায়েটে থাকা বহু স্থূলকায় মানুষ তপস্যা করেও এতটা মেদ ঝরাতে পারেন না। কিন্তু অনুব্রতর কার্যত হুহু করে ওজন কমেছে।
তাঁর ভারী চেহারার জন্য তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও বহুবার ধমক খেয়েছেন। একাধিক সাক্ষাৎকারে কেষ্ট মণ্ডল বলেছেন, দিদির বকুনির চোটেই বাড়িতে তাঁকে ট্রেড মিল কিনতে হয়েছে। রোজ সকালে নিয়ম করে হাঁটতেন সেখানে।
কিন্তু সেসব করেও অনুব্রত যে স্লিম হয়েছিলেন বা মেদ ঝরাতে পেরেছিলেন এমনটা বলা যাবে না। তবে সিবিআই হেফাজতের পক্ষকালেই দশ কিলো ওজন কমে গিয়েছে অনুব্রতর।
ইডি হেফাজতে পার্থরও ওজন কমেছিল। ভুবনেশ্বর এইমসের মেডিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ ছিল পার্থর ওজন ১১১ কেজি। দিন পনেরো পর জোকা ইএসআইতে তাঁর শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায় ওজন কমে গিয়েছে ১০৮। তবে অনুব্রতর ওজন বেশ অনেকটাই কমে গিয়েছে।