Amit Shah in Bengal: ২৬ এ কীভাবে ‘বাংলা জয়’? অঙ্ক কষে বুঝিয়ে দিলেন শাহ

0
25

আগামী নির্বাচনেই বাংলায় সরকার গড়বে বিজেপি। রবির সাংগঠনিক সভা থেকে বারংবার সেই আত্মবিশ্বাসের কথাটাই তুলে ধরলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এমনকি, তার এই আত্মবিশ্বাস যে শুধুই কোনও ভাসমান ব্যাপার নয়, সেই কথাটাও অঙ্ক কষে নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন তিনি।

শাহের দাবি, বাংলায় বিজেপির সাফল্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, “২০১৭ সালের ভোটের পর আমরা প্রস্তুতি নিই। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে আমরা সাফল্য পাই। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ৭৭টি আসন জিতি। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে ৯৭টি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি এগিয়ে ছিল।”

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আর একটুই বাকি আছে! আপনারা ৪০ শতাংশ (ভোট) পেরিয়ে গিয়েছেন। আর চার-পাঁচ শতাংশ এগোতে হবে। আগামী নির্বাচনে আমাদের সরকার গঠন হবে। ২০১৭ সালে আমি বিজেপির সভাপতি থাকাকালীন বলেছিলাম, এখানে বিজেপির সরকার গঠিত হবে। আজ সেই দিন এগিয়ে এসেছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত দিন-রাত এক করে বাংলার প্রত্যেক ভোটারের কাছে যান। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আর কিছুটা এগোলেই আগামী নির্বাচনে আমাদের সরকার তৈরি হবে।’

বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদীর বার্তা নিয়ে যান তাঁদের কাছে। পুরো দেশ চাইছে এখানে দেশভক্তদের সরকার তৈরি হোক, তোষণের সরকার নয়। মমতাদিদি সোনার বাংলার স্বপ্ন তছনছ করে দিয়েছেন। দুর্নীতি, অনুপ্রবেশ, মহিলাদের উপর অত্যাচার, হিন্দুদের উপর অন্যায়ের উপর তাঁর রাজনীতি চলে।

মমতাদিদির আমলে এসএসসি দুর্নীতি, গরুপাচার কাণ্ড, লটারি কাণ্ড, কয়লা দুর্নীতি, একশো দিনের কাজে দুর্নীতি, আবাস দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতি, মিড ডে মিলে দুর্নীতি, পুর নিয়োগ দুর্নীতি, জিটিএ দুর্নীতি হয়েছে। বাংলার জনতার হাজার কোটি টাকা তৃণমূলের সিন্ডিকেটের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।”

তাঁর সংযোজন, ‘২০১৭ সালে আমি বিজেপির সভাপতি থাকাকালীনই বলে দিয়েছিলাম, এখানে বিজেপির সরকার গঠন হবে। আজ সেই দিন এগিয়ে এসেছে। ২০২৬ সালেই বিজেপির সরকার গঠন হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের বলব, দিন-রাত এক করে সমস্ত ভোটারদের কাছে যান। বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীর বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে দিন। গোটা দেশ চায় দেশভক্তদের সরকার তৈরি হোক।’

২০২৬ সালে বিজেপির সরকার: শাহ
ভোট-পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়েও তোপ দাগেন শাহ। তিনি বলেন, “এই বাংলায় ভোটের সময় এবং দিদি জয় পাওয়ার পরে শয়ে শয়ে বিজেপি কর্মীকে হত্যা করা হয়। দিদি, কত দিন বাঁচাবেন এদের? আমি বলছি আপনার (সরকারের) সময় এ বার শেষ হয়ে এসেছে। ২০২৬ সালে বিজেপি সরকার গঠন করবে। আমি মণ্ডল পদাধিকারীদের আশ্বাস দিচ্ছি, তৃণমূল সরকার বিদায় নিলেই আমাদের কর্মীদের হত্যায় অপরাধীদের মাটির তলা থেকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেব। গণতন্ত্রে হিংসা কখনও শোভনীয় নয়। দিদি, সাহস থাকলে, হিংসা ছাড়া নির্বাচন করিয়ে দেখুন। আপনার জামানত জব্দ করে দেবে বাংলার জনতা।”

নাগরিকত্ব নিয়ে মন্তব্য শাহের
শাহ বলেন, “চার দিন আগে শান্তনু ঠাকুর আমার কাছে এসেছিলেন। তিনি বলেন, সব হিন্দু শরণার্থীকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নোটিস দেওয়া হচ্ছে। আমি শান্তনুজিকে বলেছি, ভয় পাবেন না। যাঁরা নোটিস পাবেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের আওতায় আবেদন করান। তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা আমি করব। মমতাজির নোটিসে কারও ভয় পাওয়ার কারণ নেই। শরণার্থী ভাইয়েরা যাতে ভোটদানের অধিকার পান, সেই জন্যই মোদীজি সিএএ আইন এনেছেন।”

অনুপ্রবেশ নিয়ে সরব শাহ
শাহ বলেন, “বাংলার ভোট শুধু বাংলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে না। বাংলার ভোট দেশের সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দেশের সীমান্তকে বাংলাদেশিদের জন্য খুলে দিয়েছেন। তাঁর আশীর্বাদে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। আপনারাই বলুন, অনুপ্রবেশ আটকানো উচিত কি উচিত নয়? দিদি কি আটকাতে পারবেন? ভাইপো আটকাতে পারবেন? অনুপ্রবেশ শুধুমাত্র পদ্ম সরকার আটকাতে পারবে।”


‘সিঁদুরের অপমান’! তোপ শাহের
শাহ বলেন, “আমি বাংলার মাতৃশক্তির কাছে অনুরোধ করছি, আগামী নির্বাচনে অপারেশন সিঁদুরের উপর প্রশ্ন তোলা মমতাজিকে সিঁদুরের দাম বুঝিয়ে দিন। মা-বোনেরা বুঝিয়ে দিন, সিঁদুরের অপমান করার অর্থ কী!”

শাহ বলেন, “কিছু দিন আগে পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তানের পাঠানো সন্ত্রাসবাদীরা আমাদের নির্দোষ নাগরিকদের ধর্ম জিজ্ঞেস করে করে পরিবারের সামনে হত্যা করেছে। আপনারা বলুন, পাকিস্তানের পাঠানো ওই সন্ত্রাসবাদীদের শাস্তি দেওয়া উচিত কি না? মোদীজি অপারেশন সিঁদুর করে ঠিক করেছেন কি করেননি? আমরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছি, এয়ার স্ট্রাইক করেছি। এখন অপারেশন সিঁদুর করে (পাকিস্তানের) ১০০ কিলোমিটার ভিতরে গিয়ে ওদের (জঙ্গিদের) হেডকোয়ার্টার ধ্বংস করে দিয়েছি। কয়েকশো সন্ত্রাসবাদীকে মেরে ফেলা হয়েছে।” এর পরেই শাহ বলেন, “এতে দিদির পেটে যন্ত্রণা হচ্ছে। বাংলার লোকেরা যখন সেখানে মারা গেলেন, তখন দিদি এই যন্ত্রণার কথা বললে ঠিক ছিল। তখন কিছু বলেননি। এখন মোদীজি যখন অপারেশন সিঁদুরের পরে এখানে এলেন, তখন একটি বাজে রাজনৈতিক মন্তব্য করে অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতা করা হল। আপনি অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতা করেননি। আপনি দেশের কোটি কোটি মা-বোনের ভাবাবেগ নিয়ে খেলা করেছেন।”

ওয়াকফ নিয়ে শাহ
অমিত শাহ বলেন, “মমতাদিদি ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা করে কার পক্ষ নিচ্ছেন? পুরো বাংলা চাইছে ওয়াকফ ভাল ভাবে চলুক, পারদর্শিতা আসুক, নির্দোষদের জমি যাতে দখল না-হয়ে যায়, সরকারি জমি যাতে অধিগ্রহণ না-হয়। কিন্তু মমতাদিদি এর বিরোধিতা করছেন। ২০২৬ সাল পর্যন্ত যত বিরোধিতা করার করুন, তার পরে আর মুখ্যমন্ত্রীই থাকবেন না।”

উল্লেখ্য, এই সভা বাংলায় ঝিমিয়ে পড়া বিজেপি নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য ছিল বলেই মত পদ্ম শিবিরের। আর শাহের প্রত্যয়ী মনোভব, সেই কাজ কিছুটা হলেও করতে পেরেছে বলেই মনে করছে রাজ্য বিজেপি। ছাব্বিশ যে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে পাখির চোখ, এদিনের বৈঠক থেকে বারংবার বুঝিয়ে দিয়েছেন শাহ। তাঁর ভাষণের শুরু থেকে শেষ, প্রতি মুহূর্তে উঠে এসেছে বাংলা জয়ের কথাই।

Previous articleMousumi Chatterjee আউল গান নিয়ে কাজ করতে চান লোকসংগীত শিল্পী মৌসুমী চ্যাটার্জী : দেখুন একান্ত সাক্ষাৎকার
Next articleWeather Update ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস দশা হতে পারে শহরবাসীর ,উত্তরবঙ্গে ঢুকেছে বর্ষা ,দক্ষিণে কবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here