
কলকাতা : ভোটার তালিকা নিয়ে স্ক্রুটিনির কাজের আগে মেগা ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বিকেল চারটে থেকে তৃণমূলের সমস্ত বিধায়ক, পুরনিগমগুলির মেয়র, ডেপুটি মেয়র এবং চেয়ারম্যান, জেলা সভাপতিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মেগা বৈঠকে বসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসকদলে রদবদল অনিবার্য। সে সিদ্ধান্তের কথা পরিষ্কার করে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া কবে হবে, কী তার খসড়া সে নিয়ে জল্পনা-কল্পনা এখনও রাজ্য-রাজনীতিতে জিইয়ে রয়েছে। রদবদল বিষয়ক চর্চার আবহেই শনিবারের মহাবৈঠক থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন ২২ তারিখের মধ্যে নতুন জেলা সভাপতিদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই বৈঠকের বহর যে যথেষ্ট বড় তা আন্দাজ করা গিয়েছিল আগেই। এ কথা বলার কারণ রাজ্যসভা এবং লোকসভার সমস্ত সাংসদকে তো বটেই, জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ গোটা জেলা পরিষদকে থাকতে বলা হয় আজকের আলোচনায়। বলা হয়, পুরসভাগুলির চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন। এর সঙ্গেই থাকবে তৃণমূলের পুরো রাজ্য কমিটিও।
তখনই খানিকটা আন্দাজ করা গিয়েছিল, শুধু ‘ভূতুড়ে ভোটার’ অভিষেকের ইস্যু হতে পারে না। সে কথা সত্যি করে দিয়েই এদিন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন ২২ তারিখের মধ্যে জেলা এবং ২৮ তারিখের মধ্যে ব্লক সভাপতিদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তার মানে সবাইকেই বদল করা হবে এমনটা নয়। নতুন ও পুরনো সভাপতিদের নাম একসঙ্গে করেই তালিকা পেশ করা হবে।
পাখি পড়ার মতো করে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে অভিষেক এও জানিয়ে দিয়েছেন, যে সমস্ত জায়গায় পার্টি দুর্বল সেখানে কড়া নজর দিতে হবে। আর সভাপতি নির্বাচনে অগ্রাধিকার পাবে এক এবং একমাত্র পারফরম্যান্স।
প্রায় এক বছর পরে অভিষেক এত বড় আকারে নিজে থেকে বৈঠক ডেকেছেন। শেষ বার বৈঠক করেছিলেন গত লোকসভা ভোটের আগে। গত বছরের ২ জুনের পর চলতি বছরের ১৫ মার্চ। ২৮৫ দিনের ব্যাবধানের মাঝের যে সময়টা, সেখানে অভিষেকের ‘চুপচাপ’ থাকা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তিনি যে ছাব্বিশের ভোটের একটা নকশা আঁকতে শুরু করে দিয়েছিলেন তা আজকের বৈঠক থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই বৈঠকে দলের প্রায় ৪,৫০০ নেতা উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, রাজ্যের ‘ভুয়ো ভোটার’ ধরতে আগেই কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যসভা এবং লোকসভার সমস্ত সাংসদকে এই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। পাশাপাশি ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক, সংখ্যালঘু, মহিলা— সমস্ত শাখা সংগঠনের জেলার নেতৃত্বও এই বৈঠকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।