দেশের সময়, ওয়েবডেস্কঃ প্রস্তুতি চলছিল অনেক বেশকিছু দিন ধরেই। কিন্তু তার পরেও কোথাও যেন ঝুঁকি নেওয়ার সাহসের অভাব হচ্ছিল। কারণ, দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছিল ভাটপাড়া-ব্যারাকপুরের মতো হয়ে যাবে না তো!
এবার জল গড়িয়েছে মাথার উপর দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিধাননগরের মেয়র পদ থেকে সব্যসাচী দত্তকে অপসারণের প্রক্রিয়া এক প্রকার শুরুই করে দিল তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, বিধাননগরের কাউন্সিলরদের নিয়ে রবিবার তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ওই বৈঠকেই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য সর্বসম্মত ভাবে শিলমোহর দেওয়া হবে।
এই প্রথম নয়, লোকসভা ভোটের আগে থেকেই তৃণমূলের গলার কাঁটা হয়ে গিয়েছেন সব্যসাচী। ভোটের আগে তাঁর বাড়িতে গিয়ে মুকুল রায় যেদিন লুচি আলুর দম খেয়েছিলেন, তার পরই তাঁকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মমতা। এমনকী উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তথা বালু ঘোষণা পর্যন্ত করে দিয়েছিলেন যে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হচ্ছে। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে সে জন্য বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এরই মাঝে দোলা সেন দিদিকে গিয়ে বোঝান, ভোটের আগে এই পদক্ষেপ করলে ভাল-র থেকে মন্দ হবে বেশি। সূত্রের মতে, ফিরহাদ হাকিমেরও মত ছিল তাই। সে যাত্রায় তাই পিছিয়ে আসে তৃণমূল।
ওদিকে সব্যসাচীও বুঝি ওঁর পরিণতি জানেন। ভাল করে হয়তো বুঝতে পারছেন, সুযোগ পেলেই দল তাঁকে ছেঁটে ফেলবে। তাই প্রতিনিয়ত দলকে বিড়ম্বনার ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যেমন লোকসভা ভোটের পরেই বলেছিলেন, সুজিত বসুর লেকটাউনে তৃণমূল বিজেপি-র কাছে পিছিয়ে, তাই সুজিতের ইস্তফা দেওয়া উচিত। দলের উচিত ওঁকে তৃণমূল থেকে বের করে দেওয়া। পরে এক দিন বলেছিলেন, ক্ষমতা থাকলে আমাকে সরিয়ে দেখাক। গত শুক্রবার একই ভাবে দলের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়েন সব্যসাচী।
এর পরেও সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এই বার্তাই যেতে পারে যে তৃণমূল দুর্বল হয়ে গিয়েছে। ফলে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা ছাড়া উপায়ন্তর নেই। দিন কুড়ি আগেই একবার সেই চেষ্টা শুরু করেছিলেন দিদি। পুরমন্ত্রী ববি হাকিমকে ডেকে প্রস্তুতি শুরুও করে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল সূত্রের খবর, তখন তাতে দলের মধ্যে থেকেই একাংশ নেতা সায় দেননি। এমনকী দিদিকে এও বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গিয়ে তৃণমূল ভোটাভুটিতে হেরে যাবে না তো!
তৃণমূলের এক নেতার কথায়, এখন যা অবস্থা ভোটাভুটির পরিণতির কথা না ভেবেই দলকে ঝাঁপ দিতে হবে। নইলে বেইজ্জতির অন্ত থাকবে না। সোমবারের বৈঠক থেকেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।