Delhi Blast:আহতদের দেখতে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী, চক্রান্তে যারা জড়িত, তারা পার পাবে না ,বার্তা মোদীর

0
4

দুদিনের ভুটান সফর শেষ করে বুধবার দেশে ফিরেই বিকেলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন বিকেল সাড়ে ৫টায় নিরাপত্তা ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে পৌরোহিত্য করবেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগেই বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী। হাসপাতালে জখমদের সঙ্গে কথা বলেই এক এক্সবার্তায় সেই ছবিগুলি পোস্ট করে মোদী লিখেছেন, এই চক্রান্তের পিছনে যারা জড়িত, তারা কেউ পার পাবে না। আমি দিল্লি বিস্ফোরণে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুই দিনের ভুটান সফর শেষে রাজধানীতে ফিরে লালকেল্লার কাছে হওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের আহতদের দেখতে লোকনায়ক হাসপাতালে যান। তাঁর সফরকে ঘিরে হাসপাতালের বাইরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে একটি সাদা রঙের হুন্ডাই i20 গাড়িতে হওয়া বিস্ফোরণ লালকেল্লার কাছে যানজটপূর্ণ এলাকাকে কাঁপিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনে পুড়ে যায় একাধিক গাড়ি। এখন পর্যন্ত ১২ জন নিহত এবং ২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে যখন রাস্তায় যানবাহনের ভিড় ছিল চরম পর্যায়ে।

এই বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগেই নিরাপত্তা সংস্থাগুলি ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে, যাদের মধ্যে ৩ জন ডাক্তার। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক। তদন্তে উঠে এসেছে, এই চক্রটি পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মহম্মদ (JeM) এবং আনসার গজওয়াত-উল-হিন্দের সঙ্গে যুক্ত একটি “হোয়াইট-কলার” সন্ত্রাস মডিউল, যা জম্মু-কাশ্মীর, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ জুড়ে সক্রিয় ছিল।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন ড. মুজাম্মিল গনাই এবং ড. শাহীনের সাইয়েদ, দু’জনেই ফরিদাবাদের আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত। ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ৩৬০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার করা হয়েছে। আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়টি দিল্লি থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে ধৌজে অবস্থিত একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC)-এর অনুমোদিত।

বিস্ফোরণের সময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ড. উমর নবি, যিনি আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়েরই সহকর্মী ছিলেন। তিনি বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, মুজাম্মিল ও উমর লালকেল্লা এলাকার রেকি করেছিলেন বিস্ফোরণের আগে। তারা মূলত দীপাবলির ভিড়ের সময় একটি বড় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।

পরবর্তী টার্গেট ছিল প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান।
তদন্তকারীরা জানান, হামলায় ব্যবহৃত গাড়িতে বিপুল পরিমাণে ANFO, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও জ্বালানি তেলের মিশ্রণজাত উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক ভর্তি ছিল। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এটি একটি আত্মঘাতী হামলা ছিল এবং বিস্ফোরকটি একটি ম্যানুয়াল ডিটোনেটরের মাধ্যমে সক্রিয় করা হয়েছিল।

সূত্রের দাবি, বিস্ফোরণে ব্যবহার করা বিস্ফোরক সাধারণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া নমুনা পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই ঘটনার পর থেকে গোটা রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (NIA) ও দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। লালকেল্লা এলাকা ও সংলগ্ন সড়কগুলোতে তল্লাশি অভিযান চলছে, যাতে কোনো দ্বিতীয় বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকে।

https://x.com/narendramodi/status/1988541418915172514?t=6MMuTm4HiduucfMXos5W9Q&s=19

প্রধানমন্ত্রী মোদি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন এবং চিকিৎসকদের দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বলেন, “দোষীদের কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”

এই বিস্ফোরণ দেশের রাজধানীতে এক নতুন ধরনের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের ইঙ্গিত দিচ্ছে—যেখানে শিক্ষিত পেশাজীবীদের ব্যবহার করে সন্ত্রাস সংগঠনগুলি “হোয়াইট-কলার” মডিউল তৈরি করছে। তদন্তকারীরা এখন আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যোগাযোগের নেটওয়ার্ক খতিয়ে দেখছেন।

Previous articleদিল্লিতে বিস্ফোরণের জেরে সীমান্তে কড়া নজরদারি, জল পথেও টহল: দেখুন ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here