

অর্পিতা দে ও রেশমী দাস : কলকাতা: পাঁচ বছরের বিরতির পর অবশেষে ভারত ও চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা (India China Direct Flights) পুনরায় চালু হল। করোনা মহামারি এবং ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এই সরাসরি পরিষেবা ফের খুলের কলকাতা–গুয়াংজু রুটের (Kolkata Guangzhou Flight) হাত ধরে। রবিবার চীনে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং এই খুশির খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিশ্চিত করেছেন। তিনি লেখেন, ‘চীন ও ভারতের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে।’

আজ, ২৬ অক্টোবর রাত ১০টায়, কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইন্ডিগোর বিমান 6E1703 গুয়াংজুর উদ্দেশে পাড়ি দিচ্ছে। এটি ভারতের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর প্রথম ফ্লাইট, যা করোনা পরবর্তী এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক রুটে পরিষেবা শুরু করছে। দেখুন ভিডিও
আগামী ৯ নভেম্বর থেকে সাংহাই–নয়াদিল্লি রুটেও সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই রুটে প্রতি সপ্তাহে তিনটি উড়ান থাকবে। এছাড়াও, ইন্ডিগো শীঘ্রই দিল্লি–গুয়াংজু রুটেও নিয়মিত পরিষেবা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা বর্তমানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায়।

ভারত ও চিনের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ ছিল করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে, ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের কারণে পরিস্থিতি অন্য মোড় নেয়। দুই দেশের সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষ এবং কূটনৈতিক উত্তেজনার কারণে আকাশপথও বন্ধ ছিল। তবে ২০২৪ সালের অক্টোবরে উভয় দেশ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পেট্রোলিং সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। এটি সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের বড় পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরাসরি বিমান সংযোগ পুনরায় শুরু হওয়ায় শুধু যাত্রীদের ভ্রমণ সহজ হবে না, বরং এই পরিষেবা দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা, বিনিয়োগ ও পর্যটন সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কলকাতা–গুয়াংজু রুটের এই প্রথম ফ্লাইট শুধু যাত্রার সুযোগ নয়, এটি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। আগামী মাসে সাংহাই ও দিল্লি রুটের উদ্বোধন হলে বাণিজ্য, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে আরও অনেক নতুন সুযোগ তৈরি হবে। পাঁচ বছর পর পুনরায় খুলছে আকাশপথ, যা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা, যোগাযোগ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।

জানাগেছে আপাতত সপ্তাহে তিন দিন চলবে এই পরিষেবা। ধীরে ধীরে চাহিদা বাড়লে বাড়বে ফ্লাইটের সংখ্যা। এক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ যেমন বলছেন, উড়ান চালু হওয়া হয়তো দেখতে একটা ছোট পদক্ষেপ। কিন্তু দুই দেশের বাণিজ্যে এটা একটা বিরাট পদক্ষেপ হতেই পারে। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, আগামী মাসগুলিতে বাণিজ্য-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের দিকে ঝুঁকতে পারে দুই দেশ।



