অর্পিতা দে ,কলকাতা:
হুজুগে বাঙালির বারোমাসে তেরো নয় চোদ্দ পার্বণ; ভোটপূজোশেষ এবার বাঙালির পাড়া মাতাতে মাঠে নেমে পড়েছে ওয়ার্ল্ডকাপ ক্রিকেট। রাত পোহালেই ইংল্যান্ডের মাটিতে শুরু হতে চলেছে২০১৯ এর ওয়ার্ল্ড কাপ ক্রিকেট।আর কলকাতাতেও শুরু হয়েগেছে সেই ক্রিকেটপুজোর প্রস্তুতি পর্ব, আর হবে নাই বা কেন বিশ্বকাপ বলে কথা যে।
উত্তরকলকাতার রামবাগান অঞ্চল, দুর্গাপুজোর সময় যাদের ডাকপরে নামজাদা সব ক্লাব থেকে প্যান্ডেল তৈরির কাজে, কালীপুজোর আগেই যে রাস্তার পাশে দেখতে পাওয়া যায় বড়োবড়ো সব হাঁ করা রাক্ষসের মুখ; বছরের অন্যসময় যাদের বানাতেদেখা যায় বেতের আর সোলার কাজের নানারকম জিনিস বিয়েবাড়ি অন্নপ্রাশন উপলক্ষ্যে সেই অঞ্চলটাই এখন ব্যস্ত বিশ্বকাপবানাতে।
প্রায় ১২ ফুট উচ্চতার বাঁশ আর থার্মোকলের তৈরী একটা পেল্লাইবিশ্বকাপ বানিয়ে বেশ খুশি রামবাগান অঞ্চলের ডেকোরেটার্সশিল্পী বিশ্বনাথ মাইতি; জানালেন বারাসাত এর এক শপিংমলেআগামী বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে সাজিয়ে রাখার জন্য এই অর্ডার তিনিপেয়েছেন।
তিনি প্রতিবারই বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপভোগ করেন ওদেখেন আর তাই এটা তিনি বেশ মন দিয়েই বানিয়েছেন এবংআশা করছেন এই বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষ্যে আরো অর্ডার তিনিপাবেন৷এতো গেলো ১২ ফুটের বিশ্বকাপ।গলির ভিতর একটু উঁকিমারলেই মিলবে ছোটবড় নানা সাইজের বিশ্বকাপ।
সবই অর্ডারএরআছে জানালেন আর এক ডেকোরেটার্স শিল্পী৷এই সব অর্ডারমূলত দিয়ে থাকেন স্থানীয় ক্রিকেট সংস্থা, ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিংমল গুলোই।এতদিন সবাই ব্যস্ত ছিল ভোট নিয়ে, বাংলার এইমল মাসের বাজারে বিশ্বকাপের দরুন কিছু অর্ডার তো মিললো৷এখানে প্রায় ২০০০ শিল্পী এই কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের নিত্যরুজিরুটি আসে এই বাঁশ, বেত, সোলার কারুকাজ থেকেই, যাবংশানুক্রমিক ভাবেই তারা করে আসছেন জানালেন বেতশিল্পীবিশ্বনাথ মাইতি।
বলেই আবার ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ১২ ফুটের ওইবিশ্বকাপ টার গায়ে সোনালী রং করতে, কারণ সন্ধ্যের মধ্যেই তাকেক্লায়েন্টের কাছে পৌঁছে দিতে হবে৷
উত্তর কলকাতারই আর এক প্রান্তে কুমারটুলির পটুয়াপাড়াতেদেখা গেলো আরো একজন শিল্পী কে, নঃ বিশ্বকাপ তৈরী তে নয়কিংবা কোনো প্রতিমার চক্ষুদানেও নয়৷ শিল্পী মিন্টু পালেরস্টুডিওয় যখন ঢুকলাম তিনি তখন ব্যস্ত ভারতীয় ক্রিকেট টিম এরঅধিনায়ক বিরাট কোহলির চোখের পাতা বসাতে৷ কাজে করতেকরতেই শিল্পী জানালেন, নিউটাউনের এক রেস্তোরাঁ থেকে এইঅর্ডার এসেছে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে বিরাট কোহলির এই ফাইবারেরমূর্তিটি বানানোর।
এর আগে বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে তিনিমেসি, নামার, পেলের মূর্তি বানিয়েছেন কিন্তু এবারে বর্তমানভারতীয় অধিনায়কের এই মূর্তি বানিয়ে বেশ গর্ব অনুভব করছেন৷শিল্পী জানালেন দিন পনেরো আগেই রেস্তোরাঁর কর্মকর্তারা এসেতাকে বিরাট কোহলির সেঞ্চুরি করার সময়ের কাগজে ছাপা একটিছবি দিয়ে বলে যান যে তারা বিরাটের এই সেন্ঞ্চুরী করার পর ব্যাটও হেলমেট হাতে তুলে রাখা মুহূর্তটিই ধরে রাখতে চান এই মূর্তিতে, সেইমতোই শিল্পী অধিনায়কের এই লাইভ মূর্তিটি বানিয়েছেন৷ আশা করছেন ভারত যদি সত্যি সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ওঠেনতাহলে নিশ্চই আরোও এরকম মূর্তি বানানোর অর্ডার তিনিপাবেন৷