পশ্চিম মেদিনীপুর : রাজ্যের হিমঘরগুলিতে এত আলু মজুত যে, তা কৃষক এবং বাজারের পক্ষে আশঙ্কাজনক, দাবি পশ্চিমবঙ্গ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের। সংগঠনের সহ-সভাপতি শুভজিৎ সাহা মঙ্গলবার জানান, মোট ৪৭৫টি হিমঘরে ৪.১ লক্ষ টন আলু রয়েছে। অর্ধেকই অন্য রাজ্যে ব্যবহারের। কিন্তু ২৮ নভেম্বর থেকে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী বাইরের রাজ্যে তা পাঠানো বন্ধ। অবিলম্বে সীমানা না খুললে পরের বছর নতুন আলু ঢুকতে সমস্যা হবে। চাষিদের ক্ষতি হবে। দামও আরও বাড়তে পারে। দেখুন ভিডিও
কয়েক দিন পরই বাজারে চলে আসবে নতুন আলু! কিন্তু কোল্ড স্টোরে এখনো মজুত লক্ষ লক্ষ প্যাকেট আলু। তাই মজুত আলুর ভবিষ্যৎ কি হবে এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ী থেকে কৃষকেরা। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মত ভিন রাজ্যে আলু পাঠানো বন্ধ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতার কাছে আর্জি ব্যবসায়ীদের হীমঘরে এখনও প্রচুর আলু মজুত রয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে সেই আলু বাইরে বার না-করা হলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। সেই কারণে অবিলম্বে বাইরের রাজ্যে আলু ‘রফতানি’তে কড়াকড়ি তুলে নেওয়া হোক।
এদিক আলু নিয়ে চরম তৎপরতা প্রশাসনের মধ্যে, ইতিমধ্যে জেলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে আলু জাতে কোন ভাবেই যেতে বা পারে, সেই জন্য রাজ্য সড়ক সহ বিভিন্ন জায়গায় কড়া প্রশাসনের নজরদারি। বিভিন্ন জায়গায় রাজ্য সড়কের উপর করা হয়েছে চেক পোস্ট। পশ্চিম মেদিনীপুরের আলু মূলত ঝাড়খণ্ড ও ছত্তীসগঢ়ে যায়।
কিন্তু এ বছর বাজারদর বেশি থাকায় আলু বাইরের রাজ্যে পাঠানোয় রাজ্য সরকার কড়াকড়ি শুরু করেছে বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী এক বার আলু ‘রফতানি’ বন্ধ করার কথা বলেছিলেন বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের উপায় ভেবে । তার পর থেকেই রাজ্যের সীমানায় আলুর গাড়ি আটকানো শুরু হয়।
এ নিয়ে আলু ব্যবসায়ীরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকেও বসলেও এখনও পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। আলু ব্যবসায়ী সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে হিমঘরে এখনও ১ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত রয়েছে। এর মধ্যে চন্দ্রকোনা এক ও দুই নম্বর ব্লক মিলিয়ে কোল্ড স্টোর গুলিতে এখনো আলু মজুত রয়েছে ১০ লক্ষ ৮১ হাজার ৬২০ প্যাকেট।
ভিন রাজ্যে আলু পাঠাতে না পারায় কোল স্টোরে যে মজুত আলু রয়েছে সেই আলু নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় কোল্ড স্টোর কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা।
সংগঠনের বার্তা, ডিসেম্বরে ৬.১ লক্ষ টন মজুতের মধ্যে ২ লক্ষ বেরিয়েছে। শীতের আনাজ ওঠায় বাদবাকির অর্ধেকও ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বেরোবে না। অথচ সরকারি নির্দেশ, ওই দিনের মধ্যেই হিমঘরগুলিতে আলুর মজুত ফুরোতে হবে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের পরে মার্চে ঢুকবে নতুন আলু। ফলে ডিসেম্বরে মজুত শূন্য না হলে প্রক্রিয়াটা থমকে যাবে। রাজ্য সেই মেয়াদে বাড়ালে নতুন আলুর জন্য সময়ে হিমঘর প্রস্তুত হবে না। এতে চাষিদের ক্ষতি হতে পারে। আলুর দাম বাড়তে পারে বাজারে।
এতেই বিপাকে পড়েছেন আলুর কারবারিরা। তাই তারা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন, আলু বাইরে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হোক। এখন দেখার কোল্ড স্টোরে মজুত আলুর ভবিষ্যৎ কি হয়।