দেশের সময় ওয়েবডেস্ক : এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দ্বারস্থ অভয়ার বাবা-মা।
অমিত শাহের জন্মদিনের দিনই তাঁকে ইমেল পাঠালেন আরজি করে নির্যাতিতার বাবা। মঙ্গলবার সকালে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি শাহের সঙ্গে একবার বৈঠকে বসার আর্জি জানানো হয়েছে।
অভয়ার বাবা চিঠিতে জানিয়েছেন, অত্যন্ত মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন তাঁরা। সে কারণেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান। বৈঠকের জন্য প্রয়োজনে যে কোনও জায়গায় যেতে প্রস্তুত তাঁরা।
কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ এই দাবি করেছেন। মঙ্গলবার সকালেই এই মর্মে শাহকে ইমেল পাঠিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। তিনি লিখেছেন, মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর থেকেই প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন দম্পতি। অসহায় বোধ করেছেন উভয়েই। এমন অবস্থায় তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কিছু বিষয়ে আলোচনা করতে চান নির্যাতিতার বাবা-মা। আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শাহ কী ভাবছেন, তা-ও জানতে চান তাঁরা। সাক্ষাতের জন্য শাহের থেকে সময় চেয়েছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত , মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকের পর সোমবার রাতেই অনশন তুলে নিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অনশন তুললেও আন্দোলন থেকে সরে না আসার বার্তা দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র রাজ্যের মানুষের কথা চিন্তা করে এবং অভয়ার বাবা-মায়ের অনুরোধেই তাঁরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ঘটনাচক্রে, বুধবারই রাজ্যে আসার কথা ছিল শাহের। তবে সোমবার বিকেলেই জানা যায়, শাহের বঙ্গ সফর আপাতত বাতিল করা হয়েছে। কী কারণে সফর বাতিল হয়েছে, তা অবশ্য সরকারি ভাবে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, দুর্যোগ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই আপাতত রাজ্যে আসছেন না শাহ।
তবে সফর ‘বাতিল’ বলতে চাইছে না রাজ্য বিজেপি। তাদের কথা, সফর কেবল মাত্র স্থগিত করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে শাহ রাজ্যে এলে কি নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি? বা তাঁদের দেখা করার জন্য কি দিল্লিতে ডাকা হবে? এমন বেশ কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে।
ধর্মতলায় সোমবার রাতে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চেও ছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। গত রাতে নির্যাতিতার বাবা জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘এঁদের জন্য এক দিন না এক দিন আমার মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার ঠিক ছিনিয়ে আনব।’’
আন্দোলনকারীরাও জানিয়েছিলেন, সরকারের অনুরোধে নয়, নির্যাতিতার বাবা-মায়ের অনুরোধেই অনশন প্রত্যাহার করেছেন তাঁরা। এর পরেই মঙ্গলবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখার করার সময় চেয়ে ইমেল পাঠালেন নির্যাতিতার বাবা।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদের আঁচ গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। সরব হয়েছে নাগরিক সমাজও। নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবি-সহ মোট ১০ দফা দাবি নিয়ে ৫ অক্টোবর থেকে ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সোমবার নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর অনশন প্রত্যাহার করেন তাঁরা।