ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান। তার সিনেমা মানেই ভক্তদের মাঝে ঈদের আনন্দ৷ তাইতো ঈদ কেন্দ্র করে ভক্তদের জন্য এবার ‘তুফান’ নিয়ে এলেন এই তারকা।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগামীকাল ১৭ জুন ইদের দিন বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে শাকিব-মিমি-র তুফান। ২৮ জুন ভারত তথা অন্যান্য দেশেও মুক্তি পাবে এই ছবি। বাংলাদেশের ১২৩টি সিনেমা হলে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘তুফান’৷ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা রায়হান রাফী।
শুধু সিঙ্গেল স্ক্রিন নয় তুফানের দাপট থাকবে বাংলাদেশের মাল্টিপ্লেক্সগুলোতেও। মুক্তির আগে ঢাকার মাল্টিপ্লেক্সগুলোর অনলাইন সাইটে ছাড়া হয়েছে তুফানের অগ্রিম টিকেট। যার মধ্যে বেশির ভাগ টিকেটই মুহূর্তেই ঝড়ের বেগে বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানা যায়৷
এবারের ঈদে তুফানই সবচেয়ে বড় বাজেটের সিনেমা। তাই দর্শক চাহিদার শীর্ষে রয়েছে এটি।
ট্রেলার আসবে, এমন কোনো পূর্ব ঘোষণা ছিল না। এক দিন পরই ঈদ, অনেকে হয়তো ধরেই নিয়েছিলেন যে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে ট্রেলার মুক্তি দেবেন না নির্মাতারা। তবে সবাইকে চমকে ১৫ জুন শনিবার রাতে প্রকাশ পায় ধুন্ধুমার অ্যাকশনে ভরপুর ট্রেলার। ২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই অন্তর্জালে আলোচনা চলছে। ক্যারিয়ারের আড়াইশ তম ছবির ট্রেলারে মেগাস্টার শাকিব খান যেন নতুন ম্যাজিক দেখালেন!
সোশ্যাল মিডিয়াতে এটি উন্মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাণ্ডব শুরু হয়। দুই বাংলার সিনেমা প্রেমীরা হুমড়ি খেয়ে এটি উপভোগ করছেন। ট্রেলার দেখে শাকিব বন্দনায় মুখর তারা! অনেকেই বলছেন, এই ‘তুফান’ হতে পারে ঢালিউডের রোল মডেল! পাশাপাশি রিভিউ দিচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ ছাড়াও জার্মান, অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান ও ব্রিটিশরা! যারা বাংলা সিনেমা বিমুখ তারাও জানাচ্ছেন, এই ‘তুফান’ হলে গিয়ে দেখবেন! এক কথায়, পুরো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠেছে তুফানময়!
প্রকাশের সাথে সাথে ট্রেলারটি ফেসবুকে ট্রেন্ডিংয়ে উঠে আসে। এমনকি শাকিব খানের ফ্যান পেইজ থেকে মাত্র দুই ঘণ্টায় মিলিয়ন ভিউস অতিক্রম করে। যা বাংলা ভাষাভাষী কোনো নায়কের ছবির ট্রেলারে আগে দেখা যায়নি।
সেই সঙ্গে চরকি ও এসভিএফের ইউটিউব চ্যানেল থেকে আলাদা ভাবে সাড়ে ৮ ও সাড়ে ৬ লক্ষাধিক ভিউস অতিক্রম করে; যা বাংলা সিনেমার ট্রেলারের ক্ষেত্রে বিরল ঘটনা!
হাজার হাজার নেটিজেন ট্রেলার দেখে ইউটিউব ও শাকিবের ফ্যান পেজের কমেন্ট বক্সে বলছেন, এমন কর্মাশিয়াল বাংলা সিনেমা দিয়ে সত্যিই বিশ্বজয় করা সম্ভব, আরও সম্ভব শাকিব খানের এই ছবি বক্স অফিসে শতকোটির ক্লাবে পৌঁছানো!
আবার কেউ কেউ লিখছেন, দুই বাংলা থেকে শাকিব খান একমাত্র নায়ক যিনি ইন্টারন্যাশনালি খেলার যোগ্যতা রাখেন!
ট্রেলারে শাকিব খান, চঞ্চল চৌধুরী, মিশা সওদাগর, গাজী রাকায়েত, সালাউদ্দিন লাভলুর মুখে বলা সংলাপগুলো বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। পাশাপাশি চোখ ফেরানো যায়নি, নতুন শাকিবের দুই ধরনের উপস্থিতি থেকে।
‘তুফান’র পরিচালক রায়হান রাফী; তিনি শাকিবের ২৫ বছরের ক্যারিয়ারে চেনা ছক ভেঙে নতুন ভাবে উপস্থাপন করলেন। পরিচালক বলেছেন, শাকিব খান যে কতো উন্নত মানের অভিনেতা, সেই প্রমাণ পাওয়া যাবে ‘তুফান’-এ।
ট্রেলারে দেখা মিললো নায়কোচিত শাকিব, তিনি গ্যাংস্টারের ভূমিকায় একের পর এক তীক্ষ্ণ সংলাপ, মারকাটারি অ্যাকশনে নজর কেড়েছেন। ঝলক মিলল মিমি চক্রবর্তীর ও নাবিলার। শাকিবের নায়িকা হিসাবে যোগ্য সঙ্গত করেছেন তারা৷ পর্দায় তাদের সঙ্গে রসায়ন যে দর্শক-মনে ছাপ ফেলবে, তার আভাস পাওয়া গেল।
‘তুফান’-এর অ্যাকশন প্রধান গল্পে ‘দুষ্টু কোকিল’ হয়ে রোম্যান্সের হালকা হাওয়া নিয়ে আসবেন মিমি চক্রবর্তী। দুই বাংলার উদ্যোগে তৈরি এই ছবিতে কাজ করে খুশি টলিপাড়ার নায়িকা। গল্প শুনেই তাঁর ভালো লেগেছিল। গোটা টিম প্রথম দিন থেকেই আপন করে নিয়েছিল তাঁকে। এমনটাই জানান ট্রেলার প্রকাশ্যে আসার পর।
শাকিবের কথায়, ‘তুফান ছবিতে কাজ করা সত্যিই দারুণ অভিজ্ঞতা। এর গল্প খুবই টানটান আর গোটা টিম প্রচুর মেহনত করেছে তাকে সিনেমার রূপ দেওয়ার জন্য। এমন কলাকুশলীদের সঙ্গে কাজ আমি সত্যিই খুবই খুশি আর আমার বিশ্বাস দর্শকও এই নিষ্ঠা, পরিশ্রম আর গভীরতা অনুভব করতে পারবে।’
শাকিব তো বটেই, তুফান-এর অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে থাকছেন চঞ্চল চৌধুরীও। তার শান্ত দৃষ্টি, তির্যক হাসি আর পরিমিত সংলাপেই যেন তুফানের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে চঞ্চল অভিনীত চরিত্রটি।
পর্দায় দুই তারকার দ্বৈরথ চাক্ষুষ করতে মুখিয়ে দর্শক। আর একদিন পরেই বাংলাদেশের ১২৩টি সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ঢালিউড নবাব শাকিবের ‘তুফান’।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আলফা আই, চরকি এবং ভারতের এসভিএফের প্রযোজনায় তৈরি হয়েছে ‘তুফান’।