স্টার জলসার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘তুমি আশে পাশে থাকলে’- র পার্বতী এখন অনেকের ঘরের মেয়ে। আর এই সিরিয়ালের হাত ধরেই ছোটপর্দায় অঙ্গনা রায়ের ডেবিউ। ” ছোটবেলা থেকেই টেলিভিশন দেখে বড় হয়েছি তাই এই প্ল্যাটফর্মে কাজ করার একটা ইচ্ছে তো বরাবরই ছিল কিন্তু নিজেকে তৈরি করার জন্য একটু সময় নিয়েছি। খুব ছোটবেলায় তরুণ মজুমদারের ছবি দিয়েই আমার অভিনয়ের হাতে খড়ি।
প্রখ্যাত পরিচালকের ‘আলো’- ছবিতে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি ” বললেন অঙ্গনা। তারপর অবশ্য পড়াশোনাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
অভিনেত্রী বলেন, “আমার মা চাইতেন আগে পড়াশোনাটা ঠিক করে শেষ করি, তারপর কেরিয়ার দিকে পা দিই। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পড়া শেষ করে পুরোপুরি কাজে মন দিই। তবে কলেজে পড়াকালীনই ওয়েব সিরিজ ‘সেই যে হলুদ পাখি’- র কাজ করেছিলাম।”
ছোটবেলায় অঙ্গনা সেভাবে কখনোই অভিনয় করেন নি। ভালো গান গাইতেন। তবে কলেজে এসে বন্ধুরা মিলে নাটকের একটা গ্রুপ তৈরি করেন। তখন থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভালবাসা গভীর হয়। পরবর্তীকালে একের পর এক ওয়েব সিরিজ এবং পাশাপাশি বাংলা চলচ্চিত্রে নিজের অভিনয়ের লিস্ট লম্বা করতে থাকেন। ‘আলো’ ছাড়া বাকি ছবি ছিল ‘হোম কামিং’, ‘ মিসেস আন্ডারকভার’,’ লুকোচুরি ‘, ‘ রক্তকরবী’ আর এবছর তথাগত মুখোপাধ্যায়ের পথ কুকুরদের নিয়ে ছবি ‘ পারিয়া’। অভিনেত্রী জানান, ” এ বছরটা আমার কাছে খুব স্পেশাল। কারণ ২০২৪ শে ‘পারিয়া ‘ ছবি রিলিজ করে। অন্যদিকে শিলাদিত্য মালিকের ‘লুকোচুরি ‘ ছবি আবার নতুন করে বহু হলে এসেছে।
বর্তমানে নন্দনেও ছবিটি প্রদর্শিত হচ্ছে। ‘তুমি আশেপাশে থাকলে’ মেগার কাজের মাধ্যমেও দর্শকদের সঙ্গে একটা যোগাযোগ তৈরি হয়েছে।” প্রথম সিরিয়াল প্রসঙ্গে অঙ্গনা একটু উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ” এর আগে ওয়েব সিরিজ বা চলচ্চিত্রের কাজ করে আমার ভালো লেগেছে কিন্তু এখন আরও ভালো লাগছে যে প্রচুর মানুষ রোজ আমাকে দেখছেন পার্বতী রূপে।
তবে শুরুতে খুব এক্সাইটেড ছিলাম যে সিরিয়ালে দ্বৈত ভূমিকায় অভিনয় করছি। কখনও পারো আবার কখনও পার্বতী। কোন দৃশ্যে একসঙ্গে দুজনেই। বিশেষ করে ভূতের চরিত্র, বেশ মজা লাগছিল। আজকাল বাইরে কোন পাবলিক প্লেসে গেলে দর্শকরা আমাকে পার্বতী বলে যে ভালোবাসা দেয় তাতে আমি আপ্লুত ।”
অন্যদিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হৈচৈ-এ ‘সেই যে হলুদ পাখি’, ‘পাপ’, ‘তানসেনের তানপুরা’, ‘মোহমায়া’, ‘শ্রীকান্ত ‘,’ ইন্দুবালার ভাতের হোটেল’- প্রত্যেকটিতেই তিনি নিজের পৃথক স্বাক্ষর রাখেন। শিল্পীর কথায়, “প্রত্যেকটা চরিত্রকেই আমি অত্যন্ত যত্ন সহকারে তৈরি করে একটা আলাদা ছাপ রাখার চেষ্টা করি।” তিনি আরও বলেন, ” ২০২০ তে ‘তানসেনের তানপুরা’ ওয়েব সিরিজটি আমার জীবনে একটা বড় পাওয়া। বলা যায় বড় ব্রেক ছিল। সিরিজটি সে বছর ব্লক বাস্টার হয়, আরেকটি বিশেষ ব্যাপার ছিল বিশিষ্ট সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব এ আর রহমান একটি সাক্ষাৎকারে এই সিরিজের উল্লেখ করেছিলেন।”
সঙ্গীতের মধ্যেই অভিনেত্রী জীবনের রসদ খুঁজে পান তাই সুযোগ পেলেই গানের জগতে ডুবে যান। তবে ভালোবাসেন গল্পের বই পড়তেও, বিভিন্ন ধরনের সিনেমাও দেখার চেষ্টা করেন। কখনও গল্পের বই আবার কখনও সিনেমা দেখা- এই ভাবেই চলে অবসর যাপন। তবে অঙ্গনা অভিনয়ের মাধ্যমে বহু মানুষের প্রশংসা ও ভালোবাসা নিয়ে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে চান। আরও অনেক সাফল্যের স্বপ্ন দেখেন।