দেশের সময় ,কলকাতা : রেশন দুর্নীতি মামলায় এবার তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিতে চলেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই চার্জশিটে নাম থাকবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস ও তার একাধিক সংস্থার। শঙ্কর আঢ্যর পাশাপাশি এই বিশ্বজিৎ দাসও প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের রেশন দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে উল্লেখ থাকতে চলেছে চার্জশিটে। এমনটাই ইডি সূত্রে খবর।
কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, বিশ্বজিৎ পাঁচ শতাংশ কমিশনে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দুর্নীতির টাকা বিদেশ পাচারে কাজ করতেন। ২০১৪-২০১৫ সালে রেশন দুর্নীতির সাড়ে তিনশো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি।ইডি’র অভিযোগ, এজেন্ট মারফত জ্যোতিপ্রিয়র রেশন দুর্নীতির নগদ টাকা পৌঁছে যেত এই ব্যবসায়ীর কাছে।এরপর তিনি সেই টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দিতেন হাওয়ালার মাধ্যমে বলে অভিযোগ।
এই সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিটেও অভিযুক্ত হিসেবে নাম থাকতে চলেছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। অপরদিকে, বিশ্বজিৎ একসময় শঙ্কর আঢ্যর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁর সংস্থায় ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। পরে নিজেই ব্যবসা শুরু করেন বলে অভিযোগ।
বস্তুত, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শঙ্কর আঢ্য ও তার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসকে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চলাকালীন বিপুল পরিমাণ হাওয়ালা সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়। গোয়েন্দা আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, শঙ্কর ঘনিষ্ঠ বিশ্বজিতের বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসা রয়েছে, সোনার ব্যবসা রয়েছে, এছাড়াও এক্সপোর্ট ইমপোর্ট সংস্থা রয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, জ্যোতিপ্রিয়র এজেন্টের দ্বারা বিশ্বজিতের কাছে নগদ টাকা পৌঁছে যেত। এরপর হাওয়ালার মাধ্যমে সেই টাকা বিদেশে পাচার করতেন তিনি। রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির দিতে চলা তৃতীয় চার্জশিটে সব বিষয়ে বিশদে উল্লেখ থাকবে বলে খবর।
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের একাধিক হেভিওয়েট। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ শঙ্কর এবং বিশ্বজিতের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক নথিপত্রও উদ্ধার করা হয়েছিল।
রেশন দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিল ইডি। সেখানে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা রেশন দুর্নীতি মামলায় বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে ইডি চার্জশিটে উল্লেখ করেছে। ইডি-র দাবি, সেই টাকা শঙ্কর আঢ্য নামে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সেই সূত্রেই শঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়। শঙ্করের নামও দ্বিতীয় চার্জশিটে উল্লেখ করে ইডি।
তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই পেঁয়াজের খোসার মতো সামনে আসছে একাধিক নতুন তথ্য।