Narendra Modi in Bengal: কৃষ্ণনগরে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সুকান্ত-শুভেন্দুর,পৃথক বৈঠকে ডাক পেলেন শান্তনু ঠাকুর , কী নিয়ে আলোচনা?

0
170

কৃষ্ণনগরে সভা শেষ হতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঞ্চের পিছনে একটি অস্থায়ী ঘরে বৈঠক করেন সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গেও বৈঠক হয়।

দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: ভোট আবহে একটানা দু’দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বঙ্গ সফর আগে দেখা যায়নি। লোকসভা ভোটের মুখে আরমবাগ থেকে কৃষ্ণনগর ছুটলেন মোদী। দিনকয়েক পরই ফের বাংলায় আসছেন মোদী। সফরের মাঝেই শনিবার বঙ্গ বিজেপির দুই নেতার সঙ্গে বৈঠক সেরে নিলেন নরেন্দ্র মোদী। এদিন প্রথমে প্রশাসনিক সভা ও পরে জনসভায় যোগ দেন মোদী। তার মাঝেই নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। প্রায় ২২ মিনিট একান্তে বৈঠক করেন তাঁরা। একদিকে সন্দেশখালি ইস্যুতে উত্তপ্ত রাজ্য, অন্যদিকে ভোট আসন্ন, তার মধ্যে এই বৈঠক নিয়ে বাড়ছে জল্পনা। কী এমন আলোচনা হল?

উল্লেখ্য ,শুক্রবার সন্ধ্যায় আরামবাগের সভা থেকে এসে সোজা কলকাতার রাজভবনে ঢুকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পর থেকে রাত পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের দলের প্রধানমন্ত্রী রাজভবনে রাত্রিবাস করলে সাধারণত দলের উচ্চমার্গের নেতারা গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। কংগ্রেস আমলে এমন উদাহরণ ভূরি ভূরি আছে। কিন্তু শুক্রবার বিজেপি নেতাদের কারও সঙ্গেই দেখা করেননি মোদী।

ফলে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই রাজ্য বিজেপি মহলে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়েছে— কী কথা হল মোদীর সঙ্গে দিদির।

এদিকে শনিবার  প্রকাশ্যে এসেছে যে ছবি, সেখানে দেখা যাচ্ছে মোদীর সামনে বসে রয়েছেন সুকান্ত ও শুভেন্দু।

শনিবার কৃষ্ণনগরের সভার পরে  প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সভার শেষে মোদী মঞ্চ থেকে নেমে পিছনে তাঁর বিশ্রামের জন্য তৈরি ঘরে যান। সেখানেই সুকান্ত-শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর প্রায় ১৫ মিনিট বৈঠক হয়। সেখানে অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হওয়ার আগেই সুকান্তরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজভবনে মমতার সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে?

বিজেপি সূত্রের খবর, মমতার সঙ্গে তাঁর রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা হয়নি বলেই সুকান্ত-শুভেন্দুকে জানিয়েছেন মোদী।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে একই কথা বলেছিলেন মমতাও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘রাজনীতি কম, গল্প হয়েছে বেশি।’’ একই কথা মোদীও শনিবার তাঁর দলের রাজ্য স্তরের দুই শীর্ষনেতাকে জানিয়েছেন। তিনিও বলেছেন, রাজনীতির চেয়ে তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর খোশগল্পই হয়েছে বেশি। যা জেনে খানিক ‘আশ্বস্ত’ই হয়েছেন সুকান্ত-শুভেন্দু।

এর পরেই শুরু হয় সুকান্ত-শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠক। মিনিট পনেরোর ওই বৈঠকে মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ ছাড়াও কিছু আর্জি জানান সুকান্তেরা। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, শুধু তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা নন, রাজ্যের বেশ কয়েকজন পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। এঁদের বিরুদ্ধেও কেন্দ্রের তরফে পদক্ষেপ চাই।

রাজ্য পুলিশ এবং প্রশাসনের কয়েকজনের নাম করেই অভিযোগ জানানো হয়। বলা হয়, ওই আমলারা শাকদ তৃণমূলের ক্যাডারের মতো কাজ করছেন। আইএএস এবং আইপিএসরা যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে চাকরি করেন, তাই বিভিন্ন দুর্নীতিতে তাঁদের যোগের বিষয়ে তদন্ত করানোর দাবিও জানানো হয়। তবে সেই আর্জি সম্পর্কে মোদী কী বলেছেন, তা জানা যায়নি। আলোচনা নিয়ে রাজ্য বিজেপি অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবেও কিছু জানায়নি। তবে মোদী বৈঠকের ছবি প্রকাশ করেছেন তাঁর এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডলে। সেখানে বাংলার বিজেপি কর্মীদের সাহসের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

সুকান্ত-শুভেন্দু বৈঠক শেষে ঘর ছাড়তেই মোদী ডেকে নেন বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে। তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাও বটে। লোকসভা নির্বাচনের আগে মতুয়াদের নিয়ে বিজেপির চিন্তা রয়েছে। কারণ, ভোটের আগে হয়ে যাবে বলে কথা দিলেও এখনও কেন্দ্র সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংক্রান্ত অধিনিয়মের বি়জ্ঞপ্তি জারি করেনি। এর উপর সম্প্রতি আধার কার্ড ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে রাজ্যে। সেই সমস্যা সমাধানের দায়িত্বও রয়েছে শান্তনুর উপরে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সে সব নিয়েই মোদীর সঙ্গে কথা হয়েছে শান্তনুর।

সূত্রের খবর, নদিয়া সাংগঠনিক জেলা নিয়ে কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে, একই সঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করা নিয়েও হয়েছে আলোচনা। আরও জানা যাচ্ছে, যে এ রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।

সম্প্রতি সন্দেশখালিতে যেতে গিয়ে বারবার বাধা পেয়েছেন সুকান্ত-শুভেন্দুরা। ১৪৪ ধারা জারি করা নিয়েও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। সেই বিষয়ে বঙ্গ বিজেপির নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

উল্লেখ্য, এদিন সুকান্ত মজুমদার ও শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সিএএ কার্যকর করার বিষয়ে আলাদা করে কোনও কথা হয়নি কারণ সিএএ যে কার্যকর হবে, তা ঠিক হয়ে গিয়েছে। সুকান্ত বলেন, “সিএএ তো হয়েই গিয়েছে। এ নিয়ে আর কোনও কথা নেই। এবার নির্দেশিকা তৈরি হবে। সিএএ লাগু হবে। উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্ব পাবে।”

Previous articleNarendra Modi KrishnanagarVisit সন্দেশখালির মহিলারা ‘দুর্গা’বললেন মোদী , বাংলায় ৪২ আসনেই জয়ের প্রতিশ্রুতি চাইলেন কৃষ্ণনগরে দেখুন ভিডিও
Next articleABHISHEK: ব্রিগেডের জনসভার পর আরও ৫ টি জনসভা করবেন অভিষেক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here