দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রত্যাশা মতোই রবিবার (২৮ জানুয়ারি), বিকেলে এনডিএ-তেই ঘরওয়াপসি। রবিবার সকালে ইস্তফা দিয়ে বিকেলেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নীতীশ কুমার। এই নিয়ে নবমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন তিনি।
শপথ নেওয়ার সময় বিহার রাজভবনে উঠল মোদী মোদী স্লোগান। তাঁর সঙ্গেই ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরী। শোনা যাচ্ছে তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হবে।
রবিবার সকালে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইস্তফা দিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়েছিলেন কেন জোট ছেড়েছেন তিনি। নীতীশের বক্তব্য ছিল, অনেক ভেবেই ইস্তফা দিয়েছেন তিনি এবং সরকার ভেঙেছেন। তাঁর কথায়, ‘আমাকে বিরোধী জোটে সামিল করা হয়েছিল, কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল না।’
নীতীশ আরও জানান, দেড় বছর ধরে আরজেডি-কংগ্রেস জোটে থেকে কাজের কাজ কিছু হচ্ছিল না, তাই তিনি মহাজোট ছেড়ে দিলেন। শেষ কয়েকদিন ধরে তিনি নিজের দলের লোকের কথা, বাকি সকলের কথা শুনেছেন। তারপরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিন সম্রাট চৌধুরী ছাড়া, মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিজেপির বিজয় কুমার সিনহা, ডা. প্রেম কুমার, জেডিইউয়ের বিজেন্দ্র প্রসাদ যাদব, বিজয় কুমার চৌধুরী, শ্রাবন কুমার, হিন্দুস্তান আওয়ামি মোর্চার সভাপতি ডা.সন্তোষ কুমার সুমন, নির্দল বিধায়ক সুমিত কুমার সিং। এনডিএ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে এদিন বিহারে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগও দেন তিনি। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস)-এর সভাপতি চিরাগ পাসওয়ানও। গত নির্বাচনে এই চিরাগ পাসওয়ান তীব্রভাবে নীতীশের বিরোধিতা করেছিলেন। এনডিএ থেকে বেরিয়ে গিয়ে নীতীশের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিলেন। যা জেডিইউয়ের খারাপ ফলের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। তবে, নীতীশ এনডিএ ছাড়ার পরই, ফের এনডিএ-তে ফিরে এসেছেন চিরাগ। এদিন তেলে-জলে ফের মিশে গেল।
এদিকে নীতীশের দল দাবি করেছে, কংগ্রেসের কারণেই ‘ইন্ডিয়া’ জোট ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন নীতীশ কুমার। দলের নেতা এস কে ত্যাগীর দাবি, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসাবে ষড়যন্ত্র করে কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গের নাম বলানো হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়েই এই কাজ করিয়েছিল কংগ্রেস, এমনই দাবি জেডিইউ-এর।
বিহারে এই পালাবদলের পর, কংগ্রেস নেতারা এক যোগে নীতীশ কুমারকে প্রতারক বলে তাঁর সমালোচনা করেছেন। বিজেপি-জেডিইউ জোট সম্পর্কে, কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেছেন, “পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, নীতীশ কুমারের এই শিবির বদল পূর্বপরিকল্পিত ছিল। ইন্ডিয়া জোট ভাঙতে বিজেপি-জেডিইউ মিলে এই সমস্ত পরিকল্পনা করেছিল। নীতীশ কুমার আমাদের অন্ধকারে রেখেছিলেন, লালু যাদবকে অন্ধকারে রেখেছিলেন।” অন্যদিকে, ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস নেতা টিএস সিং দেও বলেছেন, “অবশ্যই নীতীশ আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। যদি মুখ্যমন্ত্রী থাকা এবং বিজেপির সঙ্গে কাজ করাই তাঁর লক্ষ্য হয়ে থাকে, তবে তিনি তো আগেও তা করতে পারতেন। তাদের হাতে আগেও প্রয়োজনীয় সংখ্যা ছিল। তাঁর আমাদের সঙ্গে আসার উদ্দেশ্য ছিল, তিনি আদর্শগতভাবে বিজেপির সঙ্গে একমত নন। তিনি বলেছিলেন, তিনি জনগণকে একটি বিকল্প শক্দিতি দিতে চান, যা জনস্বার্থে কাজ করবে। তবে, মনে হয় তাঁর কাছে তাঁর নিজের স্বার্থটাই সর্বাগ্রে আসে।”