বিয়ে উপলক্ষ্যে গোটা বাড়ি জুড়ে বিয়ের আয়োজন চলছে আত্মীয়–পরিজনেরাও আসতে শুরু করেছেন। কিন্তু গোটা বিয়েবাড়িটাই যেন পরিণত হয়েছে একটি রক্তদান শিবিরে। দেখুন ভিডিও
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর কালুপুর গ্রামের বাসিন্দা পাত্রী সঞ্চয়িতা রায় নিজের বিয়ে উপলক্ষ্যে বিয়ের আগের দিন বাড়িতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন ৷পাত্রী সঞ্চয়িতা পেশায় আইনজীবী ৷
ছোটবেলা থেকেই সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার মানসিকতায় তৈরি হয়েছে সঞ্চয়িতা। আর এমন মানসিকতা তৈরি হওয়ার পেছনে ভূমিকা রয়েছে সঞ্চয়িতার নিজের গ্রাম বনগাঁর কালুপুরের উনাই নেতাজী সেবা প্রতিষ্ঠানের।
সঞ্চয়িতা জানান, বেশ কয়েক বছর আগে এক আত্মীয় অসুস্থ হওয়ার কারণে একপ্রকার রক্তের অভাবেই শেষ পর্যন্ত আর ফিরতে পারেন নি। পাশাপাশি এমনও হয়েছে, তাঁরই আর এক আত্মীয়াকে রক্ত দান করে বাঁচিয়ে তুলেছে তাঁর এলাকার ওই সেবা প্রতিষ্ঠান।
এমনই এক পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা ক্রিমিনোলজিতে স্নাতকোত্তর সঞ্চয়িতা একটা সময় থেকে প্রতি বছর রক্তদানে সামিল হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তার মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতেই নিজের বিয়ে উপলক্ষ্যে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজনের পরিকল্পনা তার ৷
সঞ্চয়িতার কথায়, ‘অনেক জায়গাতেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়। কিন্তু বিয়ে উপলক্ষ্যে তেমন একটা দেখা যায় না। মা চেয়েছিলেন, যদি এমন কিছু করা যায়।’
সঞ্চয়িতার এমন ইচ্ছে জানার পর তাঁর বাড়িতে শিবির করার ব্যাপারে সর্বতভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার। সঞ্চয়িতার এই উদ্যোগে খুশি তিনিও ৷
সঞ্চয়িতার বিয়ে উপলক্ষ্যে বিয়ের আগের দিন বৃহস্পতিবার তাঁর নিজের বাড়িতে বসেছিল এই রক্তদান শিবির। আর সেখানে নিজেও রক্ত দান করলেন সঞ্চয়িতা। পাশাপাশি, নিমন্ত্রিত আত্মীয়দের মধ্যে অনেকেই রক্ত দান করলেন। এদিনরক্তদান শিবিরে অন্তত ৪০ জন রক্তদাতা রক্তদান করেন বলে জানা গেছে ৷
পাএ অঞ্জন আইচ,বলেন মূলত আমার হবু স্ত্রীর ইচ্ছাতেই আমরা এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছি খুবই ভালো লাগছে রক্তদান করতে পেরে এবং পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে বলতে চাই আপনারাও এভাবে এগিয়ে আসুন রক্তদান করুন ৷ সঞ্চয়িতার এই উদ্যোগ সমাজের অন্যদেরকেও উৎসাহিত করবে বলে আশা করছেন তিনি৷
হবু নব দম্পতিরদের বিয়ের প্রাককালে এমন উদ্যোগ গড়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়ায় আগামী দিনে আরো অনেক মানুষকে প্রেরণা যোগাবে বলে মনে করছেন কালুপুরের বাসিন্দারা৷