দেশের সময়: আজ কবিগুরুর ১৬২তম জন্মদিন। গানে-গল্পে-কবিতায় রবি-বরণ৷ জোড়াসাঁকো থেকে শান্তিনিকেতন। রাজ্যজুড়ে সাড়ম্বরে উদযাপন করা হচ্ছে পঁচিশে বৈশাখ। শুধু এ রাজ্য নয়, দেশ-বিদেশেও পালন করা হবে কবিগুরুর জন্মদিন।
বাংলা ও বাঙালির জন্য এক গৌরবময় দিন। এইদিনটিকে বাঙালি নাচ, গান, নাটকে আনন্দে-হরষের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করে। প্রতি বছরের মতো এবছরও বনগাঁর ত্রিকোণ পার্ক-এর মণীষাঙ্গণে এদিন সকালে কবিগুরুর মূর্তিতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় তাঁর জন্মজয়ন্তী উদযাপন৷
ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ৭ মে তাঁর জন্মদিন। তবে এই দিনটি বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ীই উদযাপিত হয়। ১২৬৮ সালের ২৫ শে বৈশাখের পূণ্য লগ্নে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ । এই দিনটি রবীন্দ্র জয়ন্তী হিসেবে পালিত হয়। বৈশাখ মানেই নববর্ষ ও কবিগুরুর জন্মজয়ন্তী পালন। বাঙালিদের জন্য দু’টিই উৎসবের দিন। বাঙালির নতুন বছরও শুরু হয় রবি-স্মরণে। দেখুন ভিডিও
বাঙালির জীবনে, সুখে-দুঃখে, প্রেমে, উৎসবে, সবেতেই এখন রবি ঠাকুরের গানে-কবিতায়। কবিগুরু শুধু একজন সাহিত্যিক, লেখক বা কবিই নন। তিনি একাধারে গায়ক, সুরকার, চিত্রশিল্পী- সর্বোপরি একজন দীপ্তিময় নক্ষত্র।
তাঁর জন্মদিন পালন করতে গিয়ে নিজেই লিখেছেন ‘২৫ বৈশাখের রবি ঠাকুর’। এ দিন ঘিরে কবির অনুভব কেমন ছিল, নানা ভাবে তা ধরা পড়েছে তাঁর লেখনীতে, বক্তব্যে। এই তারিখটি কবি কাটিয়েছেন কখনও শান্তিনিকেতনে, কখনও পুরী, আলমোড়া, কালিম্পংয়ে, সুদূর ফ্রান্স বা তেহরানেও। সেই সব লেখায় দেখা যায় কবির অন্তর্লোকের আশ্চর্য উন্মোচন।
জন্মদিন নিয়ে তাঁর বিশেষ কোনও অনুভূতি থাকলেও, কবি তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করেননি। ১৩১৭ বঙ্গাব্দে বোলপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবর্ধনা-ভাষণে কবি তাঁর জন্মদিনের কথা উল্লেখ করেন। বলেছিলেন, “কতো পঁচিশে বৈশাখ চলে গিয়েছে, তারা অন্য তারিখের চেয়ে কিছুমাত্র বড়ো করে আমার কাছে প্রকাশ করেনি।”
‘জন্মোৎসব’ প্রবন্ধে লিখেছিলেন, “উৎসব হচ্ছে জীবনের কবিত্ব, যেখানে রস সেইখানেই তার প্রকাশ।… আজ আমার জন্মদিনে তোমরা যে উৎসব করছ, তার মধ্যে যদি সেই কথাটি থাকে, তোমরা যদি আমাকে আপন করে পেয়ে থাক, আজ প্রভাতে সেই পাওয়ার আনন্দকেই যদি তোমাদের প্রকাশ করবার ইচ্ছা হয়ে থাকে, তা হলেই এই উৎসব সার্থক।”