দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বারাসতে গ্রামবাসীকে চড় মেরে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন এক তৃণমূল কর্মী। দিদির রক্ষাকবচ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। তাঁকে অভিযোগ জানাতে গিয়েই তৃণমূল কর্মীর হাতে চড় খান এক গ্রামবাসী। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধীরা সরব হয়েছেন। ওই তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতারের দাবিও উঠেছে। এই ঘটনাকে নিন্দা করতে গিয়ে পাল্টা মার দেওয়ার নিদান দিয়ে বসলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। হুগলিতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘দিদির দূতরা অভিযোগ শুনতে না চাইলে বেঁধে রেখে অভিযোগ শোনান। আর কেউ যদি চড়-থাপ্পড় মারে, তবে পাল্টা মারুন।’
প্রসঙ্গত, শনিবার বারাসাতের ১ ব্লকের ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের সাইবনা গ্রামে ‘দিদির দূত’ হয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষ। রাধামাধবের মন্দিরে পুজো সেরে মন্দিরের চাতালেই বসেন গ্রামবাসীদের অভাব অভিযোগ শুনতে। সেইখানে গ্রামের মহিলা ও পুরুষরা নিকাশি ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট এবং পানীয় জল নিয়ে মন্ত্রীর কাছে অভাব অভিযোগ জানাতে আসেন। সেখানেই গ্রামের এক যুবক গলা তুলতেই এক তৃণমূল কর্মী মুখ চেপে ধরেন। তারপর গালে সপাটে চড় মারেন।
কুন্তল ঘোষ নামে ওই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারের দাবিতে ধর্নায় বসেছে বিজেপির যুব মোর্চা। হুগলির জিরাটে সেই ধর্নামঞ্চে রবিবার যান লকেট। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হুগলির সাংসদ বলেন, ‘দিদির দূতেরাই দুর্নীতিগ্রস্থ, তাঁরা আবার যাচ্ছেন মানুষের অভাব অভিযোগ শুনতে। মানুষের অভিযোগ শুনতে যাচ্ছেন আর অভিযোগ জানালেই চড় থাপ্পড় মারছেন।’
এরপরই উপস্থিত জনতার উদ্দেশে লকেট বলেন, ‘কেউ যদি চড় মারে, তবে আপনারা ছেড়ে দেবেন না। আপনারাও চার-পাঁচটা দিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘দিদির দূতেরা যদি অভিযোগ না শোনে তবে ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে বসিয়ে রেখে, বেঁধে রেখে অভিযোগ শোনান। সরকার তাঁদের, পঞ্চায়েত তাঁদের, তাঁরা কেন মানুষের জন্য কাজ করবেন না? আবার অভিযোগ করতে এলে থাপ্পড় মারা। আমি সামনে থাকলে ঘুরিয়ে চারটে থাপ্পড় মারতাম।’
লকেট আরও বলেন, ‘ দিদির দূত, দিদিকে বলো, সুরক্ষাকবচ বিভিন্ন রূপে রূপে আসছে। যেমন বহুরূপী হয়, ঠিক তেমন। একই জিনিস ঘুরে ঘুরে আসছে। সব এক, সব চোর ডাকাত। এরা মানুষকে ভয় দেখাতে আসছেন, আপনারা কেউ ভয় পাবেন না।’
লকেটের এই মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল। হুগলির জেলা যুব তৃণমূল নেত্রী রুনা খাতুন বলেন, ‘ মাননীয় সাংসদ কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি বারবার একই ঘটনা ঘটান। তিনি সেই নেত্রী যিনি নিজের গাড়ির কাচ ভেঙে সাম্প্রদায়িকতা করতে গিয়েছিলেন। তিনি সবসময় গুন্ডারাজ কায়েম করার চেষ্টা করেন। আমি খুব অবাক হলাম দিদির প্রকল্প গুলো তিনি মুখস্ত বলে দিলেন। দিদির সুরক্ষা কবজ, দিদির দূত, দিদিকে বলো সবই।
তিনি বলেছেন দিদির দূতেরা নাকি দিদির ভূত। ভূত দেখলে যাঁরা ভয় পাওয়ার তাঁরাই পাচ্ছেন। বিজেপি ভয় পাচ্ছে, এই উন্নয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে গেল তারা বাংলা ছেড়ে পালানোর রাস্তা পাবে না।’