দেশেরসময় ওয়েবভেস্কঃ মোদীর সঙ্গে আলাদা বৈঠক নয়, দিল্লি যাওয়ার আগ সাফ জানিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। নভেম্বরেই জানা গিয়েছিল ডিসেম্বরের শুরুতেই দিল্লি পাড়ি দিচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। আগামী বছর জি-২০ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করছে ভারত। তার প্রস্তুর জন্য দেশ জুড়ে প্রস্তুতি সভা হবে। সেই কারণেই প্রস্তুতি সভা শুরু হচ্ছে। .
দেশের রাজনৈতিক দলগুলির প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর ডাকা ওই বৈঠকে যোগ দিতেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান হিসেবে আজ দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে চারদিনের সফরে যাওয়ার আগে সাফ জানিয়েছেন, আলাদা ভাবে মোদির সঙ্গে কোনও বৈঠক থাকছে না এবারের সফরসূচিতে।
বিমান বন্দরে দাঁড়িয়েই আজ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি নেতারা বাইরে থেকে টাকা, গুণ্ডা নিয়ে আসছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “রাজনৈতিকভাবে লড়াই করুন, অন্যভাবে নয়।’ বৈঠক শেষ করে সোমবার দিল্লিতেই থাকবেন তিনি। সেখান থেকে রাজস্থান যাবেন মমতা ব্যানার্জি। আজমের ও পুস্করে যাবেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে তিনি নিজেই জানিয়েছেন, ‘রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই দুই ধর্মস্থানেই বিশেষ রেল পরিষেবার ব্যবস্থা করেছিলাম। বহু দিন ধরেই যাওয়ার ইচ্ছে ছিল।’
প্রসঙ্গত, রবিবার উত্তরবঙ্গে একটি গাড়ি আটক করে তার টায়ার থেকে ৯৪ বান্ডিল টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার এ ঘটনা নিয়ে এদিন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
জি২০ সংক্রান্ত (G-20) সর্বদল বৈঠকে যোগ দিতে এদিন দিল্লিতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি এই সব টাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দিয়ে বাংলায় ঢোকাচ্ছে। টাকা ঢোকাচ্ছে, সেই সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও ঢোকাচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা থাকায় পুলিশ কিছু তল্লাশি চালাতে পারছে না। আর এ ভাবেই ওরা অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে রাজ্যে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ নিঃসন্দেহে বিস্ফোরক। শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি ছুতোয় নাতায় বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে এনআইএ তদন্তের দাবি করেও বাংলায় অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে। গত শনিবার কাঁথির কাছে ভূপতিনগরে একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। ওই ঘটনার পরও এনআইএ তদন্তের দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের অভিযোগ বিজেপি, নিজেরাই বোমা ফাটাচ্ছে, তার পর তৃণমূলের উপর দোষ চাপিয়ে এনআইএ তদন্তের দাবি করছে। যাতে এনআইএ-কে দিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করানো যায়।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন দিল্লি যাওয়ার সময়ে বলেন, আমি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদেরও অনুরোধ করব যে এভাবে অস্থিরতা তৈরি করবেন না। রাজনৈতিক ভাবে লড়ার চেষ্টা করুন।
বিজেপি অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ খারিজ করতে চেয়েছে। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, বাংলায় কারা বেআইনি ভাবে টাকা করেছে, কাদের বাড়িতে টাকা লুকোনো থাকছে তা সবাই দেখতে পাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মনগড়া কথা বললেও কেউ বিশ্বাস করবেন না।
রবিবার ঘটনাটি ঘটেছিল জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়িতে। বিহারের নম্বর প্লেট লাগিয়ে একটা কালো রঙের গাড়ি জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ার দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটি তখন আটক করে জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ। তার পর তল্লাশি চালিয়ে গাড়িটির টায়ারের ভিতর থেকে ৯৪টি কালো প্লাস্টিকে মোড়া টাকার বান্ডিল পাওয়া যায়। গাড়িতে একটা স্টেপনি তথা অতিরিক্ত টায়ার ছিল। লোহার পাত দিয়ে সেই টায়ারটি খুলতেই বেরিয়ে আসে মোটা মোটা টাকার বান্ডিল।