দেশের সময়, ওয়েবডেস্কঃ দুয়ারে রেশন মামলায় ‘সুপ্রিম’ স্বস্তি রাজ্যের। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশের উপর সোমবার স্থগিতাদেশ দিল শীর্ষ আদালত। প্রসঙ্গত, এর আগে কলকাতা হাইকোর্টে দুয়ারে রেশন বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। আজ সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশর উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। ফলে, আপাতত দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু রাখার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকছে না রাজ্যের।
উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্যের রেশন ডিলারদের সংগঠন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল দুয়ারে রেশন প্রকল্পের বিরোধিতা করে। সেই সময় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কেবলমাত্র দুয়ারে রেশন প্রকল্প রদ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল তাই নয়, এর পাশাপাশি এই প্রকল্প সম্পূর্ণরূপে বেআইনি হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। রেশন ডিলারদের বক্তব্য ছিল, দুয়ারে রেশন প্রকল্প রাজ্য সরকার যে আইনের মাধ্যমে এনেছে, সেই ধরনের আইন প্রকৃতঅর্থে নেই।
এর পাশাপাশি এই প্রকল্পের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ অতিরিক্ত লোকবল এবং আর্থিক পরিকাঠামো প্রয়োজন, তাও পর্যাপ্ত নেই বলে দাবি ছিল রেশন ডিলারদের।
ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রেশন ডিলারদের পক্ষে রায় দেয় এবং রাজ্য সরকার দুয়ারে রেশন প্রকল্প দিতে পারবে না বলেও জানিয়েছিল হাইকোর্ট। এদিকে রাজ্য সরকারের অন্যতম একটি চর্চিত প্রকল্প হল এই দুয়ারে রেশন প্রকল্প। রাজ্য সরকারও তাই বিষয়টি নিয়ে হাল ছাড়তে চায়নি। এমন অবস্থায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের উপর এই ‘সুপ্রিম’ স্থগিতাদেশে আপাতত হাসি চওড়া হল রাজ্যের।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই বিষয়ে বলেন, “দুয়ারে রেশন মানুষকে অনেক উপকার দিচ্ছে। অনেক মানুষ নিজের হাতের কাছে রেশন পেয়ে যাচ্ছেন। বাংলার সরকার, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। তারা মানুষের পরিষেবা দেওয়ার জন্য সেই কাজ শুরু করেছেন।”
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “রেশন যেন ভালভাবে দেওয়া হয়। বিভিন্ন রাজ্য যেটা করেছে, লোকের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছে। কিন্তু দুয়ারে রেশনে তো আমাদের বাড়িতে পৌঁছাচ্ছে না। তাঁরা একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাচ্ছেন। এটায় খুব একটা লাভ হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন না। দুয়ারে রেশনের নাম করে পাড়ার কোনও একটি জায়গায় এসে হাজির হচ্ছে। এটা সরকারের প্রচারের প্রকল্প হতে পারে, কিন্তু কাজের কাজ কিছু যে হচ্ছে, তা নয়।”
বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, “আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে, স্বাভাবিকভাবে এতে আমাদের কোনও মন্তব্য থাকে না। পক্ষে বা বিপক্ষে আমাদের কোনও মন্তব্য নেই। আমরা রাজ্যের বাস্তব দিক নিয়ে বলতে পারি। জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য, কিছুটা নির্বাচনী সুবিধার জন্য এবং কার্যত মানুষকে ইমোশনালি প্রতারিত করার জন্য এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।”