Dooars: ইতিহাসের গল্প শোনাতে শুরু হচ্ছে ‘ভিজিট ডুয়ার্স ২০২৪’

0
406

দেশের সময়: সালটা ১৮৬৫। কোচবিহারের মহারাজার হয়ে ভুটানের সঙ্গে যুদ্ধে শামিল হলেন ব্রিটিশরা। দীর্ঘ সংঘর্ষের পর ভুটানের হাত থেকে ডুয়ার্সকে পুনরুদ্ধার করল ইংরেজ সরকার। ঐতিহাসিক সেই ‘ডুয়ার্স যুদ্ধ’ দিয়েই বোধ হয় শুরু হয়েছিল ইতিহাস লেখা। যার মাইলস্টোন সিঞ্চুলা চুক্তি। তারপর তিস্তা দিয়ে বয়ে গিয়েছে কত না জল।

তবুও আজও অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়া ডুয়ার্স বহন করে চলেছে তার হেরিটেজ। আজও ডুয়ার্সের পথে কান পাতলে শোনা যায়, কে যেন ফিসফিসিয়ে সেই ইতিহাসের গল্প বলে চলেছেন। গল্পকার আর কেউ নন, সার্জন রেনি। ১৮৮৬ সালে তাঁর লেখা ‘ভুটান অ্যান্ড দ্য স্টোরি অব ডুয়ার ওয়ার’ বই থেকেই তো ডুয়ার্সকে চিনতে শেখা শুরু। রেনির হাত ধরেই ডুয়ার্সের ১৮ দুয়ারের সঙ্গে পরিচয়। আর এই দুয়ার থেকেই যে ডুয়ার্স তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।


তিস্তা থেকে অসমের তেজপুরে ধানসিঁড়ি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ডুয়ার্সে কী নেই! বক্সা ফিডার রোড ধরে ভুটানের পুনাখা পর্যন্ত হেরিটেজ ট্রেড রুট। তবে এই পথে শুধু যে বাণিজ্য হয়েছে তা নয়। এই পথ ধরেই এসেছেন দলাই লামা থেকে ভূ-পর্যটক হিউয়েন সাঙ, তালিকা দীর্ঘ। তাঁরা রেখে গিয়েছেন কত না স্মৃতি। ১৮ দুয়ারের অন্যতম ময়নাগুড়ির সদরখই দুয়ার দিয়েই ঢুকেছিলেন হিউয়েন সাঙ। আর অসমের তেজপুরের কাছে চার দুয়ার দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন দলাই লামা।


ব্রিটিশরা দুয়ারগুলিকে তিনভাগে ভাগ করেছিলেন। বেঙ্গল দুয়ার, কোচবিহার দুয়ার ও অসম দুয়ার। রেনির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ছ’টি দুয়ার ময়নাগুড়ি, ডালিমকোট, চার্মুচি, লক্ষ্মী, ভলকা ও বক্সা আমাদের রাজ্যে পড়েছে। বাকি বারোটি অসমে। উত্তরবঙ্গের পর্যটন বিশেষজ্ঞ রাজ বসুর কথায়, ডুয়ার্সের হেরিটেজ রক্ষায় এই দুয়ারগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, এই দুয়ারগুলির সঙ্গে যেমন মিশে রয়েছে ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক হেরিটেজ, তেমনই এই পথে বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসার হয়েছে। একদিকে ডুয়ার্সে ৫৬টি জনজাতির মেলবন্ধনে গড়ে উঠেছে সাংস্কৃতিক হেরিটেজ, আবার এখানকার পথে-ঘাটে মিশে রয়েছে কয়েকশো বছরের ঐতিহাসিক হেরিটেজও।

যা চাক্ষুস করতে ছুটে আসেন গোটা বিশ্বের পর্যটকরা। কিন্তু তাঁরা শুধু ডুয়ার্সের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখেই ফিরে যান। অধরা থেকে যায় ডুয়ার্সের হেরিটেজকে কাছ থেকে জানা ও চেনা। বিশ্বের পর্যটকদের সামনে ডুয়ার্সের সেই হেরিটেজ ১৮ দুয়ারকে তুলে ধরতেই এবার নয়া উদ্যোগ। শুরু হচ্ছে ‘ভিজিট ডুয়ার্স ২০২৪’ কর্মসূচি। যার লক্ষ্য, ডুয়ার্সের মানুষকে নিজের এলাকার হেরিটেজ সম্পর্কে সচেতন করা। যাতে তাঁরাই হয়ে উঠতে পারেন একজন দক্ষ গাইড।

Previous articleTilting Train : ‘টিল্টিং ট্রেন’ আসতে চলেছে ভারতে! বিস্তারিত রইল
Next articleSuvendu Adhikari: ‘মমতাকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করব,: শুভেন্দু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here