দেশের সময় : কলকাতা থেকে বনগাঁ লোকাল ট্রেনে চেপে সহজেই পৌঁছে যেতে পারেন ইছামতী নদী তীরের প্রান্তিক জনপদ বনগাঁয়। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বনগাঁ শহর-সংলগ্ন ছয়ঘরিয়া এলাকায় প্রত্নস্তুপের মাঝে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সংঘর্ষ করছে প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটো ঠাকুরদা গৌরহরি বন্দ্যোপাধায়ের বাড়ি। রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এই শহরে জন্মগ্রহণ করেননি বা এখানে বসবাসও করতেন না কিন্তু পারিবারিক দুর্গাপুজোর সময় যেখানেই থাকুন না কেন এখানে চলে আসতেন।
আর সেকারণে আজও এলাকার মানুষজন রাখালদাসকে নিজেদের লোক বলেই মনে করেন।রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটো ঠাকুরদাদার বাড়ি খুঁজতে একটু সময় লাগবে কারণ রাখালদাস কে ছিলেন তা অনেকেই ঠিকমতো জানেন না। এমনিতেই রাখালদাস বাঙালির কাছে ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়া এক ঐতিহাসিক! যার কৃতিত্বকে ব্রিটিশরা যেমন চতুরভাবে চেপে দিয়েছিল ঠিক একইভাবে বাঙালিরাও তাকে কেমন যেন অবহেলায় চাপা দিয়ে ফেলেছে। তাঁর লেখা বই সহজে মেলে না, মেলে না তাঁকে নিয়ে খুব একটা লেখাপত্র। হয়ত তাই আজ রাখালদাসকে মহেঞ্জোদারো সভ্যতার মত আবিষ্কার করতে হচ্ছে, খুঁজতে হচ্ছে।
ফলকহীন দরজা পার হলেই বিশাল উঠোন, দালান বাড়ি। প্রায় তিনশো বছর আগে রাখালদাসের ঠাকুরদা গৌরহরি বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঠাকুর দালানে দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন। গৌরহরি বন্দ্যোপাধ্যায় একদিন স্বপ্নে অদ্ভুত দর্শন এক দেবীমূর্তি দেখতে পান। যে দেবীমূর্তির কিনা দশটি হাতের মধ্যে দু’টি হাত কেবল বড়। বাকি আটটি হাত বেড়ালের মতো ছোটো ছোটো। স্বপ্নাদেশ পাওয়া দেবীর আদলেই নির্মিত হয় মূর্তি। আর তার নাম হয়ে যায় ‘বেড়ালহাতি দুর্গা’। একসময় সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত বলির প্রথা চালু ছিল বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে। পরে তা বন্ধ হয়ে চিনি-নাড়ু দিয়ে নৈবেদ্য দেওয়ার প্রথা চালু হয়।
দেখুন ভিডিও