অর্পিতা বনিক, দেশের সময়,Desher Samay – শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। ক্যালেন্ডারের হিসেব বলছে, বাঙালির সেরা উত্সব মাকি আর মাত্র ৭৫ দিন। তারপরই বেজে উঠবে বোধনের শঙ্খ। দেখুন ভিডিও –
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের জন্য তৈরি হচ্ছে গোটা রাজ্য।তবে এবার আর কোনও অংশে ত্রুটি রাখতে চান না শিল্পী থেকে উদ্য়োক্তারা। রথ যাত্রা শেষ হতেই কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন এ বছর পুজোর একমাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যাবে একাধিক অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি। সেই মতো কলকাতা ও জেলার একাধিক পূজা মন্ডপগুলি তাদের এবারের পুজো প্যান্ডেল ও থিমের পরিকল্পনা যথারীতি শুরু করে দিয়েছে। দুর্গাপূজা যত এগিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বনগাঁর পটুযা পাড়ায় ৷
যদিও গত দু’বছর করোনা ও লকডাউনের কারণে সেই অর্থে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে দুর্গাপূজা করা হয়নি বলে মৃৎশিল্পীদেরও প্রতিমা বায়না কম ছিল। তবে এ বছর চিত্রটা অনেকটাই বদলেছে। তারা আশা করছেন পূর্বের মতো করোনার প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারন না করলে এবারে দুর্গাপুজো হবে স্বাভাবিকভাবেই।
যথারীতি দেশ এবং বিদেশের থেকে ঠাকুরের বায়না পেতে শুরু করেছেন মৃৎশিল্পীরা। সেই কারণেই চরম ব্যস্ততার মধ্যে বর্তমানে দিন কাটছে তাঁদের।
মৃৎশিল্পীরা যথারীতি মন্ডপে গিয়ে নিজ হাতে প্রতিমা গড়ছেন। সুতরাং বলাই বাহুল্য প্রায় আড়াই বছর পর আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজা।
সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে “দুর্গাষষ্ঠী”, “মহাসপ্তমী”, “মহাষ্টমী”, “মহানবমী” ও “বিজয়াদশমী” নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় “দেবীপক্ষ”। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে “অকালবোধন” বলা হয়।
কালিকা পুরাণ ও বৃহদ্ধর্ম পুরাণ অনুসারে, রাম ও রাবণের যুদ্ধের সময় শরৎকালে দুর্গাকে পূজা করা হয়েছিল। হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, শরৎকালে দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন। তাই এই সময়টি তাদের পূজা যথাযথ সময় নয়। অকালের পূজা বলে তাই এই পূজার নাম হয় “অকালবোধন”।
এই দুই পুরাণ অনুসারে, রামকে সাহায্য করার জন্য ব্রহ্মা দুর্গার বোধন ও পূজা করেছিলেন। কৃত্তিবাস ওঝা তার রামায়ণে লিখেছেন, রাম স্বয়ং দুর্গার বোধন ও পূজা করেছিলেন।
দুর্গাপূজা সমগ্র্র্র ভারতে প্রচলিত। তবে বাঙালি সনাতনী সমাজে এটি অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। আশ্বিন বা চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে দুর্গা মহাপূজা করা হয়। অবশ্য তন্ত্র শাস্ত্র মতে সকল স্থানই দুর্গার স্থান। সকল সময় দুর্গাপূজার সময়।
যাইহোক, বছরে মূলত চারটি নবরাত্রি আসে। তার মধ্যেে দুটি গুপ্ত নবরাত্রি। চারটি নবরাত্রিতেই শ্রী দূর্গার মহাপূজা হয়। আশ্বিনের নবরাত্রি পূজা শারদীয়া পূজা এবং বসন্তের নবরাত্রির পূজা বাসন্তীক দুর্গাপূজা নামে পরিচিত।
এ বছর দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট
মহালয়ার তারিখ –২৫ সেপ্টেম্বর, রবিবার ৷
- দুর্গাপুজোর তারিখ
- মহাপঞ্চমী – ৩০ সেপ্টেম্বর , রবিবার
- মহাষষ্ঠী – ১ অক্টোবর, শনিবার
- মহাসপ্তমী – ২ অক্টোবর, রবিবার
- এবারের দুর্গাপুজোর নির্ঘন্ট জানুন
- মহানবমী- ৪ অক্টোবর , মঙ্গলবার
- মহাঅষ্টমী – ৩ অক্টোবর, সোমবার
- মহাদশমী- ৫ অক্টোবর, বুধবার
প্রতিবছর দূর্গা পুজো বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে হয়ে থাকে। কালিকা পুরাণে বলা হয়েছে, অষ্টাদশভূজা মহিষাসুরমর্দিনী উগ্রচন্ডার বোধন করা হবে কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে, ষোড়শভূজা ভগবতীর বোধন করা হবে, কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে এবং চতুর্ভূজা ও দশভূজা মহিষাসুরমর্দিনী বিগ্রহেবোধনন করা হবে যথাক্রমে শুক্ল প্রতিপদ এবং শুক্লা ষষ্ঠীতে। দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যাটির নাম মহালয়া; এই দিন হিন্দুরা তর্পণ করে তাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদন করে। দেবীপক্ষের শেষ দিনটি হল কোজাগরী পূর্ণিমা। এই দিন হিন্দু দেবী লক্ষ্মীর পূজা করা হয়। কোথাও কোথাও পনেরো দিন ধরে দুর্গাপূজা পালিত হয়। সেক্ষেত্রে মহালয়ার আগের নবমী তিথিতে পূজা শুরু হয়।