দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে মাওবাদী হামলার কথা মনে পড়ে? ২০১০, ২৮ মে। প্রায় এক যুগ পর সেই মহল্লা অর্থাৎ ঝাড়গ্রামের মানিক পাড়ায় পড়ল মাওবাদী পোস্টার । সাদা কাগজে, অপটু হাতে লাল কালি দিয়ে যা লেখা হয়েছে তা বেশ চড়া দাগের।
এদিন মানিকপাড়া বাজার এলাকায় মাওবাদী পোস্টার দেখা যায়। একুশের বিধানসভা ভোটে ‘খেলা হবে’ স্লোগানকে কার্যত আন্তর্জাতিক করে তুলেছিল তৃণমূল। সেই স্লোগানকে ধরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা খেলার হুঁশিয়ারি লেখা রয়েছে পোস্টারে।
মানিকপাড়া থেকে যে পোস্টার উদ্ধার হয়েছে তাতে লেখা, ‘কিষেনজি অমর রহে। এতদিন তৃণমূল খেলেছে। এবার মাওবাদীরা খেলবে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে।’ পুলিশ এসে সেই পোস্টার উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে বটে, তবে আতঙ্ক ক্রমশ গভীরে যাচ্ছে জঙ্গলমহলে।
বিকেল গড়ানোর আগেই ঝাড়গ্রাম জেলায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে তালা পড়ে যাচ্ছে। নেতারা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, প্রশাসনের অ্যালার্ট রয়েছে। মাওবাদীদের টার্গেট কারা তা প্রকাশ্যে পোস্টারে লিখে জানান দিয়েছে নিষিদ্ধ দলটি। সেসব পোস্টারে নিচুতলার দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল নেতাদের নিশানা করা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। এপ্রিলের গোড়ায় মাওবাদীদের ডাকা বনধে যে ছবি তৈরি হয়েছিল জঙ্গলমহলে তাতে অনেকের মনে ভেসে উঠে ছিল ১৫-১৭ বছর আগের ছবি।
এর মধ্যেই শনিবারের বারবেলায় গুলি চলেছে ঝাড়গ্রাম শহরে। তার পিছনেও মাওবাদীরা রয়েছে বলে সন্দেহ। কেন? গোয়েন্দা সূত্রে প্রশাসন জানতে পেরেছিল, মাওবাদীরা জঙ্গলমহলজুড়ে বাইক ছিনতাইয়ের ছক কষছে। এদিন একটি বাইক ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময়েই দুই দুষ্কৃতী গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। তাই সবটা মিলিয়ে অনেকে মনে করছেন, মাওবাদীরাই যুক্ত এর পিছনে।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার রানীবাঁধের একাধিক তৃণমূল নেতা জেলা পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। আবার ঝাড়গ্রামে সন্ধে নামার আগেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শাসকদলের পার্টি অফিস। জ্ঞানেশ্বরীর মহল্লায় কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে পড়ল পোস্টার। সব মিলিয়ে পুরনো আতঙ্কের ছবি জায়গায় জায়গায়।