দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ শুক্রবার দু’টি মামলায় জঙ্গি নেতা হাফিজ মহম্মদ সৈয়দের (26/11) বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করল পাকিস্তানের সন্ত্রাসদমন আদালত। লস্কর-ই-তৈবার প্রতিষ্ঠাতা এবং জামাত উদ দাওয়ার প্রধান হাফিজকে (26/11) মোট ৩১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁর সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সেই সঙ্গে তাঁকে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়েছে। একটি সূত্রে খবর, হাফিজের (26/11) তৈরি করা একটি মসজিদ ও মাদ্রাসাও পাকিস্তানের সরকার অধিগ্রহণ করবে।
জানা গিয়েছে, হাফিজ সইদের নামে বেআইনিভাবে একটি মাদ্রাসা এবং গির্জা তৈরি করা হয়েছিল। সেগুলিও অধিগ্রহণ করবে আদালত। ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানাও দিতে হবে এই সন্ত্রাসবাদীকে।
২০২০ সালে এই সন্ত্রাসবাদীকে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ দমনকারী আদালত। এছাড়াও ৭০ বছর বয়সী এই সন্ত্রাসবাদী আরও বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত।
২৬/১১ হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’কে মূলত সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগই ছিল। প্রথমে তাকে সাতদিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজত দেওয়া হলেও পরে তা বাড়িয়ে ১৪ দিন করা হয়। সইদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের আর্থিক মদতের স্রেফ একটি নয়, সব মিলিয়ে অন্তত ২৩টি মামলা রয়েছে।
আর্থিক নয় ছয়ের অভিযোগ-ও রয়েছে সিটিডি মামলাগুলি পাক পাঞ্জাবের পাঁচটি শহরের বিভিন্ন আদালতে রুজু হয়। তাদের অভিযোগ, আল-আনফাল ট্রাস্ট, দাওয়াতুল ইরশাদ ট্রাস্ট এবং মুয়াজ বিন জাবাল ট্রাস্টের মতো বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সন্ত্রাসের জন্য আর্থিক অনুদান সংগ্রহ করত এই চক্রী।
৭০ বছর বয়সী হাফিজের (26/11) বিরুদ্ধে অতীতে সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ যোগানোর অভিযোগ ছিল। ২০২০ সালে তাঁর ১৫ বছরের কারাদণ্ড হয়। এর আগে পাকিস্তানে কয়েকবার গৃহবন্দি করা হয়েছে হাফিজকে। ছাড়া পাওয়ার পরে পাকিস্তানের নানা জায়গায় তিনি ভারতের বিরুদ্ধে ভাষণ দিয়ে বেড়িয়েছেন। সেজন্য তাঁর কোনও শাস্তি হয়নি।
২০১৯ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আমেরিকা সফরের আগে হাফিজকে গ্রেফতার করা হয়। তখন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করে বলেছিলেন, ১০ বছর ধরে অনুসন্ধান চালানোর পরে হাফিজকে গ্রেফতার করা গিয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি জানায়, ২০০১ সাল থেকে সইদ আটবার গ্রেফতার হয়েছেন ও ছাড়া পেয়েছেন।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইতে জঙ্গি হামলার পিছনে হাফিজই ছিলেন মূল চক্রী। ওই হামলায় ১৬৬ জন নিহত হন। ২০১৭ সালে হাফিজ ও তাঁর চার সঙ্গী পাকিস্তানে গ্রেফতার হন। কিন্তু ১১ মাস বাদে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।