দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘ সম্পর্ক ছিন্ন করে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন অমরিন্দর সিং। নিজের দল গড়েছিলেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল বিজেপি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। নিজের গড়েই হারলেন পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। পাটিয়ালার প্রিন্স দাঁড়িয়েছিলেন পাটিয়ালা সদরেই।
কিন্তু ঝাড়ু–ঝড়ে বেসামাল হলেন প্রবীণ রাজনীতিক। হেরে গেলেন। আপ–এর অজিত পাল সিং কোহলি জিতলেন ওই আসনে। পাঞ্জাবে ১১৭টি বিধানসভা আসনে ৯১টিতেই এগিয়ে রয়েছে আপ। এর মধ্যে কয়েকটিতে ফল ঘোষণা হয়েছে। সেখানে জিতেছে কেজরির দল।
অমরিন্দর যে এভাবে হারতে পারেন, সেকথা আগেই বলেছিল কংগ্রেসের একাংশ। শীর্ষ নেতারা বলেছিলেন, ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে ’প্রতিষ্ঠান–বিরোধী হাওয়া’ রয়েছে। উদ্ধত আচরণ মানুষ মেনে নিতে পারছেন না। তাছাড়া আম আদমির ধরাছোওয়ার বাইরে তিনি। এসব ভরাডুবি হতে পারে কংগ্রেসেরও। সে কারণেই তাঁর নেতৃত্ব এবার ভোটে যেতে চায়নি কংগ্রেস। কংগ্রেসের সে আশঙ্কাই সত্যি হল। নিজেই হারলেন অমরিন্দর।
তবে ক্যাপ্টেন–হীন কংগ্রেসও কিন্তু কোনও ছাপই ফেলতে পারেনি। এমনকী একের পর এক হেভিওয়েট নেতাও হেরেছেন। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি পর্যন্ত জিততে পারেননি। অমৃতসর পূর্ব থেকে হারলেন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধু। তিনি এর মধ্যেই অভিনন্দন জানিয়েছেন আপ–কে।
বলেছেন, ‘মানুষের কণ্ঠ আসলে ঈশ্বরের কণ্ঠ’। দু’টি আসনে দাঁড়ালেও জিততে পারলেন না বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি। ভাদৌর, চমকর সাহিবে হারলেন তিনি। আপ–ঝড়ে পাঞ্জাবে অন্য দলের হেভিওয়েটরাও পর্যুদস্ত। লাম্বিতে প্রকাশ সিং বাদল, জালালাবাদে সুখবীর সিং বাদল পিছিয়ে রয়েছেন।
The voice of the people is the voice of God …. Humbly accept the mandate of the people of Punjab …. Congratulations to Aap !!!
— Navjot Singh Sidhu (@sherryontopp) March 10, 2022
পাঞ্জাবে মোট আসন ১১৭টি। ফল ঘোষণার শুরু থেকেই এগোচ্ছিল আপ। বেলা বাড়তে বোঝা যায়, ঝাড়ু চিহ্নের সমর্থনে ঝড় বয়ে গিয়েছে পাঞ্জাবে। বেলা আড়াইটের খবর, ৯২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে আপ। এর মধ্যে বেশ কিছু আসনে আপ প্রার্থীদের জয় ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। খান তিনেক আসনে আপের মার্জিন সামান্য। তবে বাকিগুলোয় বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল।
পাঞ্জাবের কংগ্রেসের কোন্দল তুমুল আকার নিয়েছিল। সিধুর সঙ্গে ক্যাপ্টেনের ঝগড়ায় হাইকম্যান্ড মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অমরেন্দ্র সিংকে সরিয়ে চান্নিকে নিয়ে আসে। এরপর নতুন দল গড়েন ক্যাপ্টেন। গত কয়েক মাসে চান্নির সঙ্গে সিধুর কোন্দলও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধীরা। দেখা গেল চান্নি তো হেরে গেলেন দুই কেন্দ্রেই। নতুন দল গড়ে বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করেও লাভের লাভ হল না ক্যাপ্টেনের।
প্রকাশ সিং বাদলের শিরোমণি আকালি দল এক সময়ে বিজেপির জোট সঙ্গী ছিল। তাঁর পুত্রবধূ হরসিমরত বাদল কৌর ছিলেন নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য। কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে মন্ত্রিসভা ছেড়ে চলে এসেছিলনে হরসিমরত। বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছিল আকালি দলও। কিন্তু কোনও কিছুতেই কাজ হল না। সব মিলিয়ে চারটে আসনে এগিয়ে রয়েছে শিরোমণি আকালি দল। হেরে গেলেন প্রকাশও। সর্বভারতীয় হোক বা আঞ্চলিক দল—সবারই মাটি ধসিয়ে দিয়েছে আপ।