গণতন্ত্রে নাগরিকের জানার অধিকার স্বীকৃত

0
886

সম্পাদকীয়ঃ-পুলওয়ামায় ভারতীয় সেনাদের উপর মর্মান্তিক জঙ্গি হানার পর পরই,ভারতীয় বায়ুসেনা পাকিস্তান বর্ডার অতিক্রম করে সেখানে জঙ্গি ঘাঁটি জৈশি মহম্মদের জঙ্গি সহ গুড়িয়ে দিয়েছে বলে ভারতীয় বায়ুসেনার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।বায়ুসেনা জানিয়ে দিয়েছে তারা লক্ষ্যভেদ করতে সফল হয়েছে।কত জঙ্গি ও ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে সে বিষয়ে কোন পরিসংখ্যান পেশ করে নি বায়ুসেনা।স্বাভাবিক ভাবেই তাদের দাবি নিয়ে কোন ভারতীয়ই কোন সন্দেহ বা সংশয় প্রকাশ করেন নি।বরং ভারতীয় বায়ুসেনার বিরত্ব ও সাহসকে বাহবা দিয়ে সকলেই তাঁদের মতামত প্রকাশ করেছেন।

দেশের একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক নেতা,থেকে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পর্যন্ত বায়ুসেনার প্রয়াসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।বায়ুসেনার বীরত্ব ও সাহস ভারতীয়দের যখন গর্বিত হওয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে তখনই লক্ষ্য করা গেল সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে দেশের সেনাবাহিনির কার্যকলাপকে ব্যবহার করতে একশ্রেণীর সংবাদ মাধ্যম ও কেন্দ্রীয় শাসক দলের কিছু নেতা মাঠে নেমে পড়লেন।আর তার ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনিকে নিযেও শুরু হয়ে গেল নোংরা রাজনীতির খেলা।আমরা কোনরকম অস্পষ্টতা না রেখে জানাতে চাই এই খেলাটা শুরু করেছেন বিজেপির কিছু নেতা ও কেন্দ্রীয় সরকারের মদতপুষ্ট কিছু মিডিয়া।বিজেপি যতোই দাবি করুক না কেন যে সেনা নিয়ে রাজনীতি করছে বিরোধীরা,সত্যিটা একেবারে তার উল্টো।আমরা যুক্তি ও তথ্য দিয়ে তা প্রমাণ করতে পারি।

প্রথমত কোন সাধারণ নাগরিক বা বিরোধী নেতা-নেত্রী কেউই বায়ুসেনার সাহস ও উদ্যম নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলেন নি।এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোধদয় সবার আগে ট্যুইট করে বাযুসেনার আক্রমণকে অভিনন্দিত করেন।তিনি পরিষ্কার জানান বায়ুসেনার কাজ ভারতীয়দের গর্বিত করেছে।একই বক্তব্য রাখেন রাহুল গান্ধী থেকে সকল বিরোধী নেতারাই।কিন্তু এরই মধ্যে বিজেপি মদতপুষ্ট মিডিয়া প্রচার করতে থাকে,৩৫০জন জঙ্গি ও অসংখ্য ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা।

এইসব মিডিয়ার সুরে সুর মিলিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং থেকে অমিত শাহরা বলতে থাকেন এত এত জঙ্গি নিকেশ করে ভারতীয় সেনারা প্রমাণ করলেন যে দেশ এক যোগ্য নেতার হাতে আছে।তার মানে সেনাদের সাফল্যকে বিজেপি নিজেদের সাফল্য বলে প্রচার করা শুরু করে,আর এখান থেকেই বিতর্ক শুরু হয়।বিরোধীরা জানতে চায় যেখানে সেনা কোন সংখ্যা বলছে না সেখানে বিজেপি নেতারা কোথা থেকে জানছেন এতজন মারা গেছে,সেক্ষেত্রে তো প্রমাণ দিতে হবে।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো যথার্থই বলেছেন

আন্তর্জাতিক সমস্ত মিডিয়া যে খানে বলতে পারছে না কত জঙ্গি মারা গেছে সেখানে বিজেপি নেতা ও তাদের অনুগত মিডিয়া কীকরে জানছে এতজন মারা গেছে?প্রামাণ না দিয়ে এ ভাবে বলা যায়!আসলে বিজেপি এই সংখ্যা বলে নির্বাচনে ফায়দা তুলতে চায় তাই দেশের সেনাকেও রাজনীতির ময়দানে নামিয়ে দিয়েছে।এখন খেলাটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে বিজেপি বলছে বিরোধীরা সেনার কাজ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে।বিরোধীরা নাকি পাকিস্তানের সুরে কথা বলছে।আশ্চর্য ব্যপার বিজেপি সেনা নিয়ে রাজনীতি করবে আর বিরোধীরা বসে বসে দেখবে তা হয় নাকি।

তাই বিরোধীরাও একযোগে প্রমাণ দাবি করতে শুরু করেছে।সেনা নিয়ে এই রাজনীতির খেলাটা শুরু করেছে বিজেপি,এখন তাকে প্রতিহত করতে বিরোধীরা যে রাজনীতি করবে সেটা অস্বীকার করা যায় কোন যুক্তিতে?আসল কথাটা হল গণতান্ত্রীক ব্যবস্থায় সকল নাগরিকের সব বিষয়ে জানার অধিকার থাকে,এটা মানুষের অর্জিত অধিকার,যে মন্ত্রী বা মিডিয়া মাতব্বর গলার শির ফুলিয়ে বলছেন সেনা নিয়ে কোন প্রশ্ন করা মানেই

দেশদ্রোহীতা,তারা গণতন্ত্র কাকে বলে তাই জানেন না।ভাল ইংরেজি বলতে পারলেই শিক্ষিত হওয়া যায় না শিক্ষিত হতে হলে দেশের সংবিধানটা পড়ে দেখতে হয়,জানতে হয় তার নিয়ম কানুন।আমাদের দুর্ভাগ্য এদেশের বড় মিডিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন অর্ণব গোস্বামির মত অশিক্ষিত ফেরেববাজরা,সাংবাদিকতাকে যারা প্রতিদিন কলঙ্কিত করে চলেছেন।এরা যতোই গলা চড়াক আমাদেরও পান্টা বলতে হবে গণতন্ত্রে নাগরিকেক জানার অধিকারটা স্বীকৃত,সেই জানার অধিকারের পক্ষে কথা বলে রাহুলগান্ধী বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা কোন অন্যায় করেন নি।

Previous articleরাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বড়মার শেষকৃত্যের কাজ সম্পন্ন হলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত মতুয়া ভক্তরা!
Next articleBOOK ADVERTISEMENTS FOR DESHER SAMAY INSTANTLY!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here