দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে যেধন্দ তৈরি হয়েছে তা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে জেলায় জেলায়। শুক্রবার সন্ধে থেকে চলা সেই বিতর্কে চুপ ছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার লখনউ যাওয়ার আগে দিদি জানিয়ে দিলেন, সুব্রত বক্সী আর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সই করা তালিকাই চূড়ান্ত। এর বাইরে কোনও কিছু নেই।
রবিবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে এই প্রার্থীতালিকা প্রসঙ্গেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দুটো তালিকা প্রকাশ হয়েছিল। একটা ফেসবুক পেজে দেওয়া হয়েছিল। পরে একটি তালিকা পার্টি অফিস থেকে দেওয়া হয়েছিল। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ দাবি করেছিলেন, দুই তালিকার মধ্য বিশেষ কিছু ফারাক নেই। ২,২৭২টি ওয়ার্ডের মধ্যে খুব বেশি হলে ১০০-১২০টি প্রার্থীর নাম এদিক-ওদিক রয়েছে।
শুধু তাই নয়, পার্থদের তালিকা তুলে অভিষেক দেখাতে চেয়েছিলেন, সেই তালিকাও ত্রুটিপূর্ণ। মৃত মানুষকে প্রার্থী করার মতো ঘটনাও রয়েছে সেই তালিকায়। কিন্তু মমতা এদিন স্পষ্ট করে দিতে চাইলেন, বক্সী-পার্থদের সই করা তালিকাই চূড়ান্ত। ওটাই পার্টির তালিকা। তাতেই দলনেত্রী হিসেবে তাঁরও সায় রয়েছে।
ঘটনা হল, শুক্রবার সন্ধ্যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের সাংবাদিক সম্মেলনের পর ফেসবুক পেজ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দিনহাটা থেকে ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত সমস্ত পুরসভার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু, তৃণমূল নেতৃত্ব জানায় ওই তালিকা ফেক।
অর্থাৎ পার্থবাবুরা যে স্পাইরাল বুক দেখিয়ে প্রার্থী ঘোষণা করেছিলেন তার সঙ্গে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের তালিকার মিল নেই।
এরপর দীর্ঘ বৈঠক করে পার্থ, বক্সীরা সিদ্ধান্ত নেন, আর সাংবাদিক বৈঠক করবেন না। আসল তালিকা, যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন রয়েছে সেটা জেলা সভাপতিদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তাই হয়েছে। কিন্তু ঘটনা হল, শুক্রবার সন্ধের পর সোমবার সন্ধে হতে চলল, এখনও সেই ফেক তালিকা সর্বভারতীয় তৃণমূলের ফেসবুক পেজে জ্বলজ্বল করছে।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব নিয়ে রাজনৈতিক মহল তো বটেই, দলের কর্মীদের মধ্যেও যে আলোচনা শুরু হয়েছে তাতে মমতার এদিনের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। এক বাক্যে মমতা বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, কোনটা আসল, কোনটা নকল। বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে যখন দিদি একথা বলছিলেন, তখন তাঁর অভিব্যক্তিতেই স্পষ্ট হয়েছে গোটা ঘটনায় তিনি কতটা বিরক্ত।