Lata mangeshkar : গান স্যালুটে বিদায় সুর সম্রাজ্ঞীর, লতার মরদেহে মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী, উপস্থিত উদ্ধব–শাহরুখরা

0
800

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রবিবার সকালে ৮ঃ১৪ নাগাদ ৯২ বছর বয়সেই ছেড়ে চলে গেলেন সুর সম্রাজ্ঞী। ২৮ দিন ধরে করোনার সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি হাসপাতালের বেডে। সঙ্গে ছিল ফুসফুসে সংক্রমণও। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাল্টি অর্গান ফেলিওয়ের ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এদিন এরপর যা হল৷

শিবাজি পার্কে জনসমুদ্র। তাঁদের প্রিয় শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হয়েছেন তাঁরা। কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছিল গোটা চত্বর। এদিন রাজনীতি, সিনেমা, সঙ্গীত, ক্রীড়া জগতকে এক ছাদের তলায় এনে দাঁড় করালেন তিনি।

তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। গলার জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন তাঁর ভক্তদের। প্রতিটি সঙ্গীত প্রিয় মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ‘আইকন’। সাধারণ মানুষ থেকে সমস্ত ক্ষেত্রের বিশিষ্ট মানুষের ভিড়ে শিবাজি পার্ক ভরে গিয়েছে।

তাঁর গানের মধ্যে দিয়েই তাঁকে স্মরণ করা হয়েছে এই শিবাজি পার্ক। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদার মধ্যে দিয়ে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। গান স্যালুটের মধ্যে দিয়ে বিদায় জানানো হল সঙ্গীতের ঈশ্বরকে।

তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী মোদী। ২০০০ বর্গফিটের শিবাজি পার্কটি শেষকৃত্যের জন্য বিশেষভাবে ঘেরা হয়। দুপুর ১টা থেকে সেখানে সাধআরণ মানুষের জমায়েক শুরু হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই, লতা মঙ্গেশকারকে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। 

এদিনের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তেমনই উপস্থিত ছিলেন, সপরিবারে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, রাজ ঠাকরে, শরদ পাওয়ার, অজিত পাওয়ার, পীযূষ গোয়েল। পরিবারের তরফ থেকে উপস্থিত ছিলেন ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর, বোন ঊষা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে । উপস্থিত ছিলেন শাহরুখ খান, আমির খান, রণবীর কাপুর, বিদ্যা বালন, জাভেদ আখতারের, শঙ্কর মহাদেবনের মত ব্যক্তিত্ব। আর ছিলেন তাঁর ‘পুত্র’ শচীন তেন্ডুলকার।

এদিন হাসপাতাল থেকে লতা মঙ্গেশকারের দেহ নিয়ে আসা হয় তাঁর বাসভবন ‘‌প্রভুকুঞ্জ’‌–এ। সেখানে আশা সহ লতার বোনেরা এবং পরিবার শেষ শ্রদ্ধা জানান। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে মেয়ে শ্বেতাকে নিয়ে যান অমিতাভ বচ্চন। অনুপম খের, জাভেদ আখতার, সঞ্জয় লীলা বনশালিও শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন।

এর পরেই সেখান থেকে ফুলে সাজানো গাড়ি রওনা হয় শিবাজি পার্কের উদ্দেশে। সামনে ছিল গায়িকার বিরাট এক ছবি। যে কফিনে রাখা ছিল লতার দেহ, তা মোড়া ছিল জাতীয় পতাকায়। রাস্তার পাশে তখন অগুনতি মানুষের ঢল। উৎসুক হয়ে চাওয়াচাওয়ি করছে। একবার শেষ দেখা দেখতে চান প্রিয় গায়িকাকে।

এর পর শিবাজি পার্কে পৌঁছল দেহ। তাঁর মরদেহে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মোদী। তারপর একে একে উপস্থিত সকলেই পুষ্পস্তবক দিয়ে সুর সম্রাজ্ঞীকে বিদায় জানান। তাঁর মরদেহের সামনে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করলেন সকলেই।

সেখানেই প্রোটোকল মেনে শ্রদ্ধা জানালেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, তাঁর স্ত্রী, ছেলে আদিত্য ঠাকরে। শ্রদ্ধা জানালেন শচীন তেণ্ডুলকার, তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি তেণ্ডুলকর, শাহরুখ খান, শারদ পাওয়ার, সুপ্রিয়া সুলে, রাজ ঠাকরে, শঙ্কর মহাদেবন, রণবীর কাপুররা। 

• মন্ত্রধ্বনির মাঝে জ্বলে উঠল চন্দন কাঠের চিতা • দেওয়াল হল গান স্যালুট, এর পর মরদেহ থেকে জাতীয় পতাকা তুলে পরিবারের হাতে দেওয়া হল • শ্রদ্ধা জানালেন রণবীর কাপুর, শঙ্কর মহাদেবনরা • একে একে শ্রদ্ধা জানালেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল, এনসিপি সুপ্রিমো শারদ পাওয়ার, এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে, রাজ্যের মন্ত্রী, সচিবরা • পুষ্পস্তবক দিলে শাহরুখ খান। হাত তুলে করলেন প্রার্থনা • এর পর সস্ত্রীক শ্রদ্ধা জানিয়ে গেলেন শচীন তেণ্ডুলকার।

শবদেহর চারপাশ প্রদক্ষিণ করে মালা দিলেন • শ্রদ্ধা জানালেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। সঙ্গে স্ত্রী এবং ছেলে আদিত্য • শিবাজি পার্কে পৌঁছলেন নরেন্দ্র মোদি। মঞ্চ করে শায়িত লতার দেহ। সেই মঞ্চে উঠে পুষ্প স্তবক দিলেন তিনি। জানালেন শেষ শ্রদ্ধা • লতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মুম্বইয়ে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমান বন্দরে হাজির উদ্ধব–পুত্র আদিত্য ঠাকরে। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ

• শিবাজি পার্কে উপস্থিত ছিলেন শচীন তেণ্ডুলকার, স্ত্রী অঞ্জলি, শাহরুখ খান। লতাকে ‘‌মা’‌ বলতেন শচীন। অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটারকেও ছেলের চোখেই দেখতেন লতা। • উপস্থিত পরিবারের সদস্যরা, ছিলেন বোন আশা ভোঁসলে, নাতনি শ্রদ্ধা কাপুর • লতার মরদেহ শায়িত শিবাজি পার্কে। শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত অগুনতি সাধারণ মানুষ৷

ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ এবং দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের প্রাপক, লতা মঙ্গেশকর ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন তিনি। তাঁর চলে যাওয়া যে সঙ্গীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি, তা সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করেছেন।

তাঁর মৃত্যুতে গোটা দেশে দু’দিন রাষ্ট্রীয় শোক পালন করার কথা ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। মুম্বই সরকার আগামীকাল ছুটিও ঘোষণা করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সকলের প্রিয় পাত্র ছিলেন লতা।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অধুনা মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে জন্মেছিলেন লতা।

বাবা-মায়ের দেওয়া নাম হেমা মঙ্গেশকর। লতার বাবা পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন বিখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এবং মঞ্চাভিনেতা। মা সেবন্তি দেবী। তাঁদের পারিবারিক পদবী ছিল হারিদকর। পরিবারসূত্রে মঙ্গেশকরেরা ছিলেন গোয়ার মঙ্গেশ মন্দিরের পুরোহিত। সেই যোগসূত্রের কথা মনে রেখেই দীননাথ হারিদকর উপাধি পাল্টে তাঁদের পদবী রাখেন মঙ্গেশকর। চার সন্তানের মধ্যে হেমাই বড়।

৫ বছরের ছোট্ট লতা তানপুরা হাতে অবলীলায় তুলে নিলেন পুরিয়া ধানেশ্রীর মতো সুকঠিন রাগ। এর দু’বছরের মাথায় বাবার সাথে মঞ্চে গান গেয়েছেন, কিশোর চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন লতা। একক শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার সুযোগ আসে এর পরেই। লতা তখন ন’বছরের কিশোরী।

১৯৪৩ সালে মারাঠি ছবি গজভাউ’য়ে প্রথমবার হিন্দিতে গান গাওয়ার সুযোগ এল। ১৯৪৫ সালে মাস্টার বিনায়কের সঙ্গেই বম্বে’তে পা রাখলেন লতা মঙ্গেশকর।তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি মানুষের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছিল। অনেকেই মনে করেন, সরস্বতী যেন স্বয়ং লতা রূপে ধরা দিয়েছিলেন পৃথিবীতে।

Previous articleবনগাঁয় তৃণমূল-বিজেপিকে হারানোই লক্ষ্য! প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে কিছু আসনে কংগ্রেসকে সমর্থনের বার্তা বামেদের
Next articleWeather Updates: মাঘের শেষে শীতের ঝোড়ো ব্যাটিং,বঙ্গে ফের পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ভ্রকুটি, কী বলছেন আবহবিদরা?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here