দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ ফের একবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তরবঙ্গ। বৃহস্পতিবার রাতে কম্পন অনুভূত হয় শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৪.৩। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ভূটানের থিম্পু থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে। মৃদু কম্পন অনুভূত হলেও সম্প্রতি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কেঁপে উঠল উত্তরবঙ্গ।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ১৬ মিনিটে কম্পন অনুভূত হয়েছে ডুয়ার্স-সহ গোটা জলপাইগুড়ি জেলা। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.২। এখনও পর্যন্ত বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের খবর মেলেনি।
জলপাইগুড়ি ছাড়াও আলিপুরদুয়ারে অনুভূত হয়েছে কম্পন। জানা গিয়েছে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভুটানের থিম্পু। গভীরতা অন্তত ১০ কিলোমিটার।
কম্পন অনুভূত হতেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন সাধারণ মানুষ। আতঙ্কে শঙ্খধ্বনি দিতে দেখা যায় মহিলাদের। আলিপুরদুয়ারের এক ব্যাবসায়ী সুমন কর্মকার বলেন, ‘‘প্রথমে একটা হালকা ধরনের কাঁপুনি ছিল। তার পর সেটাই এক ঝটকায় বেড়ে যায় হঠাৎ। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম খুব। পরে বুঝতে পারি ওটা ভূমিকম্প। আশপাশের লোকজন সবাই চিৎকার করছিল। তাই শুনে সবাই দোকানঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসি।’’
উত্তরবঙ্গ কেঁপে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দেদার পোস্ট হতে শুরু করে। অনেকেই ভূমিকম্প অনুভব করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে শুরু করেন ফেসবুকে। কেউ কেউ আবার নিজেদের মার্ক সেফ হিসেবেই চিহ্নিত করেন টুইটার ও ফেসবুকে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের শেষেই ভার পর্যটনের মরশুমের মধ্যেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল গ্যাংটক (Gangtok)। কম্পন অনুভূত হয়েছিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতেও। উৎসস্থল ছিল দার্জিলিং থেকে ৬৫ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৪.৩। শিলিগুড়িতে কম্পন অনুভূত হয়। স্থানীয়দের পাশাপাশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা। রাত ৯টা বেজে ৫০ মিনিট নাগাদ ভূমিকম্প প্রথম অনুভূত হয় পূর্ব সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল মূলত গ্যাংটকের থেকে ১৮ কিলোমিটার পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্বে। যা দার্জিলিং থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬ কিলোমিটার গভীরে এই কম্পনটি হয় বলে জানা গিয়েছে। শিলিগুড়িতেও এই কম্পন অনুভূত হয়। এছাড়া ভূটান এবং নেপালেরও বেশ কিছু এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই নিয়ে একাধিকবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তরবঙ্গ। অন্যদিকে, কিছুদিন আগেই কেঁপে ওঠে শহর কলকাতাও। শুধু কলকাতা নয়, উত্তরবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, মণিপুর এবং বাংলাদেশেও অনুভূত হয় কম্পন। ভারত মায়ানমার সীমান্তে ভূমিকম্প হয়। আফটার শকে কেঁপে ওঠে কলকাতা, বাংলাদেশ সহ একাধিক রাজ্য। ন্যাশানাল সেন্টার ফর সিসমোলজির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কম্পন অনুভূত হয় ৩০ সেকেন্ডে জন্য। ভূমিকম্পের উৎস মিজোরামের থানজাউল থেকে ৭৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। মাটির ১২ কিলোমিটার গভীরে অনুভূত হয় কম্পন। শুধু কলকাতা নয়, কেঁপে উঠেছে ওপার বাংলাও। কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.১। কম্পন অনুভূত হওয়ার পরেই মিজোরামের এক নেটিজেন লেখেন, ‘এটি দীর্ঘতম ভূমিকম্প যা আমি অনুভব করেছি।’