দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর তার জন্য সরাসরি ডিভিসি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফের ম্যানমেড বন্যার অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ খাল এবং বাঁধ সংস্কার না করার জন্য ঝাড়খণ্ড সরকারের বিরুদ্ধেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এরপর-
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বলেছেন, রাজ্যে ২২ লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত। প্রায় এক লক্ষ বাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মুখ্যসচিব বলেছেন, এই বর্ষায় দু’বার প্লাবনের মুখোমুখি হতে হল বাংলাকে। বহু জায়গায় জল নামার আগেই ফের এই পরিস্থিতি। যা সামগ্রিক ভাবে পরিস্থিতিতে গুরুতর করে তুলেছে। দামোদর ও অজয় নদী নিয়েই মূল সমস্যা বলে জানিয়েছে নবান্ন। ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে দামোদর, দ্বারকেশ্বরের মতো একাধিক নদী বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে।
এদিন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী আরও বলেছেন, মাইথন ব্যারাজ থেকে বৃহস্পতিবার ৪৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয় বেলা বারোটায়। এক ঘণ্টা কাটতে না কাটতে বেলা একটায় ফের এক লক্ষ কিউসেক জলা ছাড়া হয়। তারপর রাত সাড়ে আটটায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার কিউসেক ছাড়ে মাইথন। শুক্রবার সকালে সওয়া আটটা থেকে থেকে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার কিউসেক জল ধারাবাহিক ভাবে ছাড়া হচ্ছে। এদিন দুপুরেই বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ডিভিসির ঘাড়ে দায় চাপিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই পরিসংখ্যান দিলেন মুখ্যসচিব।
নবান্নের তরফে বলা হয়েছে এখনও পর্যন্ত আরামবাগে দুটো, খানাকুল ১ ও ২ নম্বর ব্লকে দুটি বাঁধ বেধেছে। বাঁকুড়ার বড়জোরা, হাওড়ার উদয়নারায়নপুর বীরভুমের নানুর ব্লকে বাঁধ ভেঙেছে একটি করে। বৃহস্পতিবার ভোর তিনটেয় ঝাড়খন্ডের শিকাতিয়া ব্যারাজ থেকে ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। এদিন সকাল পৌনে দশটা নাগাদ ফের এক লক্ষ ২০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে ঝাড়খণ্ড।
আসানসোল, বারাবনি, রানীগঞ্জে আর্মি নামানো পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনা। তিন কলাম সেনাবাহিনী পানাগড় থেকে আসানসোলে পাঠাতে হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান ও হুগলিতে তিন কলাম করে ও হাওড়াতে দুই কলাম সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। ২৫টি এনডিআরএফ টিম মোতায়েন করা হয়ছে বিভিন্ন জেলায়। পাশাপাশি আরো আটটি টিম অন্য রাজ্য থেকে আনা হচ্ছে। উদ্ধারকার্যে নেমেছে এসডিআরএফও। ঘাটালে বাড়ি চাপা একটি শিশু-সহ মোট দু’জন মারা গিয়েছেন। উদ্ধারকাজ, ত্রাণ বণ্টন ইত্যাদি খতিয়ে দেখার জন্য আইএএস অফিসার ও মন্ত্রীদের জেলা ভাগ করে দায়িত্ব দিয়েছে নবান্ন। তবে মুখ্যসচিবের কথাতেই স্পষ্ট, পুজোর আগে এই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে।
বন্যা কবলিত জেলাগুলির জন্য একজন করে আইপিএস-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।কোন জেলায় কোন আইএএস:
পশ্চিম বর্ধমান – রাজেশ পাণ্ডে
হুগলি – মনোজ আগরওয়াল
বাঁকুড়া-অভিনব চন্দ
বীরভূম-বিজয় ভারতী
পশ্চিম মেদিনীপুর – এম ভি রাও
হাওড়া – মনিশ জৈন