দেশের সময় ওয়েব ডেস্ক: আইএস জঙ্গির স্ত্রী শামিমা বেগমের নাগরিকত্ব আগেই কেড়েছিল ইংল্যান্ড সরকার। আইএস যোগ থাকায় নিকাপত্তার কারণ দেখিয়ে এ বার শামিমাকে ঠাঁই দিতে নারাজ হল বাংলাদেশও।
বর্তমানে ইরাক সীমান্ত ঘেঁষা সিরিয়ার বাঘুজ়ে একটি শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন শামিমা। ১৫ বছরে তাঁর ব্রিটেন ছেড়ে সিরিয়া পাড়ি দেওয়া এবং আইএস জঙ্গিকে বিয়ে করার কাহিনী সংবাদ মাধ্যমের সূত্র ধরে গোটা বিশ্বের কাছেই এখন পরিচিত। আগের দুই সন্তানের মৃত্যুর পর তৃতীয় সন্তানকে সুস্থ পরিবেশে মানুষ করার জন্যই দেশে ফিরতে মরিয়া ছিলেন তিনি। ব্রিটেন ও বাংলাদেশ হাত তুলে নেওয়ায় স্বভাবতই সঙ্কটে পড়েছেন শামিমা। সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে বসেই সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘আমি ব্রিটেনের নাগরিক। বাবা, মা ব্রিটেনে রয়েছেন। আমাকে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি মর্মাহত, আমার সঙ্গে অবিচার করা হল।
ব্রিটেন হাত তুলে নিলে বিকল্প উপায় হিসেবে বাংলাদেশের কাছে আবেদন করে তরুণীর পরিবার। তবে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়, শামিমার মা বাংলাদেশি। কিন্তু শামিমা কখনও সেখানে যাননি। ফলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাওয়ার প্রশ্নই নেই। পাশাপাশি, সন্ত্রাসের বিষয়টাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জঙ্গি নাশকতা নিয়ে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে দেশে।
বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড দুই দেশই মুখ ফিরিয়েছে৷ ফলে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে চাইলেও আপাতত প্রশ্নের মুখে শামিমা ও তাঁর সন্তানের ভবিষ্যৎ।
জন্মসূত্রে বাংলাদেশি হলেও ইংল্যান্ডে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন শামিমা। বেথাল গ্রিন অ্যাকাডেমি স্কুলের মেধাবী ছাত্রী শামিমা দেশ ছাড়েন ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই সহপাঠী আমিরা আবেস ও কাদিজা সুলতানা। লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দর থেকে তাঁরা তিন জনে উড়ে যান তুরস্ক। সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে সিরিয়ায় ঢোকেন। ধর্মান্তরিত এক ডাচ জঙ্গিকে বিয়ে করে সংসার পাতেন। গত চার বছরে দু’বার অন্তঃসত্ত্বা হন, কিন্তু অপুষ্টি ও অনাহারে মারা যায় দু’টি বাচ্চাই। যে কোনও মূল্যে তৃতীয় সন্তানকে বাঁচাতে দেশে ফেরার আর্জি জানান শামিমা। কিন্তু তাঁর আবেদন গ্রাহ্য হয় না। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র সচিব সাজিদ জাভিদ তরুণীর বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেন, আইএস জঙ্গির স্ত্রীকে কোনওভাবেই দেশে ফিরতে দিতে রাজি নয় সরকার। তাঁর নাগরিকত্বও বাতিল করা হয়েছে।