দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ রাতভর সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ের শেষে সেনা সূত্রে খবর মিলল নিকেশ হয়েছে পুলওয়ামা সেনা কনভয়ে হামলার মূল চক্রী কামরান। সেই সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে আরও দুই জঙ্গির। পুলওয়ামার পিংলান গ্রামে জইশ জঙ্গিদের গোপন ডেরা রয়েছে খবর পেয়ে গতকাল রাতেই তল্লাশি অভিযান চালায় ভারতীয় সেনার ৫৫ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস। শুরু হয় সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াই। জঙ্গির গুলিতে প্রাণ যায় মেজর জেনারেল-সহ চার জওয়ানের। দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই স্থানীয়েরও।
সেনা সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার যেখানে আত্মঘাতী হামলা হয়েছিল তার থেকে ৬-৮ কিলোমিটার দূরে একটি বাড়িতে লুকিয়ে ছিল জঙ্গিরা। সেখানেই গা ঢাকা দিয়ে ছিল অবন্তীপোরায় সেনা কনভয়ে আইইডি হামলার মূল চক্রী কামরান। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ কামরানের সঙ্গেই আত্মঘাতী হামলার অপর চক্রী আবদুল রশিদ গাজিও সেই ডেরায় ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে সেনা। তবে এই বিষয়ে এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। একটি সূত্রে জানাচ্ছে, কামরান এবং আবদুল রশিদ গাজি একই ব্যক্তি। গুলির লড়াইয়ে হত জঙ্গিদের দেহ এখনও অবধি শনাক্ত করা যায়নি। তবে যে ভাবে সেনা ঘিরে রেখেছিল কামরান ও তার সঙ্গীদের, সেখান থেকে কামরানের বেঁচে ফেরা অসম্ভব ছিল, এমনটাও জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।
পিংলান গ্রামে একটি বাড়িতে বেশ কয়েক জন জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর পেয়ে রবিবার গভীর রাতে বাড়ি ঘিরে ফেলে সেনা। সঙ্গে ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ও সিআরপিএফ জওয়ানরাও। স্থানীয় সূত্রে তাঁরা জানতে পারেন, পুলওয়ামার পিংলান এলাকায় ২-৩ জন জঙ্গি লুকিয়ে আছে। সেখানে গেলে অতর্কিতে জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো শুরু করে জঙ্গিরা। পাল্টা উত্তর দেন জওয়ানরাও। তবে সেখানে ২-৩ জনের থেকে বেশি জঙ্গি ছিল বলেই জানা গিয়েছে সেনাবাহিনীর তরফে। রাতভর চলে এই গুলি বিনিময়। মৃত্যু হয় এক মেজর-সহ চার জওয়ানের। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মেজর ডি এস দোন্ডিয়াল,হেড কনস্টেবল সেভ রাম, অজয় কুমার ও হরি সিং।
সেনা সূত্রে খবর, এখনও গুলির লড়াই চলছে। পুরো এলাকা ঘিরে রয়েছেন জওয়ানরা। তল্লাশি চলছে জোরকদমে। এখনও এক, দু’জন জঙ্গির লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিনের ঘটনার পর সেনাদের অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন ডিজিপি এস পি ভেদ। তাঁর কথায়, “পুলওয়ামা কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড নিহত। ভারতীয় সেনাদের অভিনন্দন। সংঘর্ষে নিহত শহিদ সেনাদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।”
সেনা কনভয় হামলার অন্তত তিন মাস আগে থেকে জইশ-ই-মহম্মদের ফিদায়েঁ জঙ্গি আদিল আহমেদ দারকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছিল। এমনটাই জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র। আদিলকে আত্মঘাতী হামলার জন্য তৈরি করার দায়িত্বই ছিল কামরানের উপর। আইইডি বিশেষজ্ঞ কামরানের নেটওয়ার্ক ছিল সাঙ্ঘাতিক। তদন্তকারীদের কথায়, জঙ্গি সংগঠনের মাথা মাসুদ আজহারের অত্যন্ত বিশ্বাসভাজন ছিল কামরান। সেনা কনভয়ে গাড়িবোমা হামলার গোটা ছকটাই তারই মস্তিষ্কপ্রসূত। ছবি -সংগৃহীত,