দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় শহিদ হন বাংলার যুবক বাবলু সাঁতরা। জইশ ই মহম্মদের করা এই হামলায় ৪৪ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হয়েছেন। সিআরপিএফের জওয়ান বাবলু তাঁদেরই এক জন। হাওড়ার বাউরিয়ার চককাশী রাজবংশী পাড়ার বাসিন্দা বাবলু রেখে গেলেন স্ত্রী ও চার বছরের মেয়েকে। সন্ধ্যায় সাঁতরা পরিবার এই চরম দুঃসংবাদ জানতে পারেন।
বৃহস্পতিবার শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে দিয়ে সিআরপিএফ জওয়ানদের ৫৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কনভয় যাচ্ছিল। ২৫০০ জওয়ানকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এই কনভয়েই বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। প্রথমে সেই কনভয়ে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। সেনা সূত্রে খবর, বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি গিয়ে ধাক্কা মারে সিআরপিএফ ট্রাকে। প্রায় ৩৫oকেজি বিস্ফোরক ছিল ওই ট্রাকে। জানা গিয়েছে, বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি চালাচ্ছিল জইশ জঙ্গি আদিল আহমেদ। বছর দেড়েক আগে জঙ্গি সগঠনে যোগ দিয়েছিল আদিল। এই
বিস্ফোরণেই নিহত হন ৪৪ জওয়ান। তারপর ছত্রভঙ্গ জওয়ানদের উপর গুলিবৃষ্টি করতে থাকে জঙ্গিরা। এই হামলার দায় নিয়েছে জইশ।
শুক্রবার কাশ্মীরে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং। সকালেই উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিকে সেনা সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে দিয়ে সিআরপিএফ জওয়ানদের ৫৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের একটি কনভয় যাচ্ছিল। ৭০টি ভ্যান ছিল কনভয়ে। ২৫০০ জওয়ানকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এই কনভয়েই বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। প্রথমে ঘটে আইইডি বিস্ফোরণ। সেনা সূত্রে খবর, ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক ভরতি একটি স্করপিও গাড়ি নিয়ে এক জঙ্গি কনভয়ের ভ্যানে ধাক্কা মারে। তার পরেই বিস্ফোরণ হয়। জানা গিয়েছে, বিস্ফোরক ভর্তি গাড়িটি চালাচ্ছিল জইশ জঙ্গি আদিল আহমেদ। বছর দেড়েক আগে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছিল আদিল। এই বিস্ফোরণেই নিহত হন ৪৪ জন জওয়ান। তার পরে ছত্রভঙ্গ জওয়ানদের উপর গুলিবৃষ্টি করতে থাকে জঙ্গিরা।
ঘটনার কিছু পরেই হামলার দায় স্বীকার করে নেয় জইশ-ই-মহম্মদ। কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হয় ভারত সরকারের তরফে। পাকিস্তানকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, জঙ্গিদের সাহায্য করা বন্ধ করুক ইসলামাবাদ। এবং তাদের (পাকিস্তানের) মাটিতে থাকা বিভিন্ন জঙ্গি ঘাঁটি নষ্ট করুক।
মর্মান্তিক এই ঘটনার পরে একটি বিবৃতিতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক বলে, এই জঙ্গি গোষ্ঠী (জইশ-ই-মহম্মদ) চালায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি মাসুদ আজ়হার। যাকে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানো এবং ভারতে হামলার জন্য পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
পাশাপাশি আমেরিকা এবং রাশিয়ার তরফেও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। কে কী বললেন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
রাষ্ট্রসংঘ: জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করছি। নিহত সেনাদের পরিবার, ভারতবাসী এবং ভারত সরকারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহত সেনারা দ্রুত সেরে উঠুক। ঘটনায় জড়িতদের আইনি বিচার ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে হবে।
আমেরিকা: ভারতে অবস্থিত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টার জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করেন। নিহতদের পরিবারকে অন্তর থেকে সমবেদনা জানিয়ে বলেন, জঙ্গি মোকাবিলায় আমেরিকা ভারতের পাশে রয়েছে।
বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই বিপর্যয়ের সময়ে আমরা ভারতের পাশে আছি। নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। যাঁরা জখম হয়েছেন, তাঁদের দ্রুত আরোগ্য প্রার্থনা করি।
শ্রীলঙ্কা: প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংঘে পুলওয়ামা জেলায় নৃশংস জঙ্গি হামলায় কড়া নিন্দা করেন। জানান, এটা ১৯৮৯-এর পর সব থেকে ভয়ানক জঙ্গি হামলা জম্মু ও কাশ্মীরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানান তিনি।
মালদ্বীপ: বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লা শাহিদ জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীবাহী কনভয়ে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করেন। নিহত এবং জখমদের পরিবারকে সমবেদনা জানান।
ভুটান: বিদেশমন্ত্রী টান্ডি দরজি কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার খবরে স্তম্ভিত এবং দুঃখিত। এই নারকীয় হামলার নিন্দা করেন তিনি। নিহতদের পরিবার এবং ভারত সরকারের পাশে থাকার বার্চা দিয়েছেন। আশা রেখেছেন, অপরাধীদের বিচার হবে।
ছবিগুলি সংগৃহীত,