দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ মুখ্য সচিব পদ থেকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসর নিলেও তাঁকে শোকজ নোটিস পাঠাল কেন্দ্র।নর্থ ব্লক সূত্রের খবর, কলাইকুণ্ডা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা ইয়াস-পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যসচিব কেন কেন অনুপস্থিত ছিলেন সে ব্যাপারে কৈফিয়ত চেয়ে ওই নোটিস পাঠানো হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৫(১) ধারা অনুযায়ী তাঁর কাছে সেই নোটিস পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি আশিস সিং।
কেন্দ্রের ওই নোটিসে আরও বলা হয়েছে, মুখ্য সচিবের জন্য বৈঠকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করা হয়েছিল। তিনি বৈঠকে যোগ দেবেন কিনা সে ব্যাপারে খোঁজ নিতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে ঢুকে কেন তিনি সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে যান তা জানতে চাওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার অবশ্য এমন কোনও নোটিসের কথা স্বীকার করেনি। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মঙ্গলবার সকালে নর্থ ব্লকে রিপোর্ট করতে বলার জন্য যে নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল, সেটিই সর্বশেষ নোটিস বলে নবান্ন সূত্রের দাবি।
মোদ্দা অর্থ হল, বিতর্ক এখনও মেটেনি। বরং গোটা ঘটনায় কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের পথ অনেকটাই প্রশস্ত হয়েছে বলে অনেকের ধারণা। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, প্রশাসনিক এই টানাপোড়েনের নেপথ্যে আসলে রাজনৈতিক স্রোত বইছে। বিজেপির অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর শর্তকে লঙ্ঘন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলার ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির জন্য তিনি ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ দাবি করছেন। অথচ কেন সেই প্যাকেজ দাবি করা হচ্ছে তা প্রধানমন্ত্রীর ডাকা রিভিউ মিটিংয়ে তিনি ব্যাখ্যা করতেও প্রস্তুত নন। মাত্র দেড় মিনিটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে একটা রিপোর্ট পেশ করেছেন তিনি। কেন তিনি সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকলেন না, কারণ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ রাজনীতির জন্য বাংলার স্বার্থকে তিনি জলে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করছেন না।
আবার তৃণমূলের অভিযোগ, রিভিউ মিটিংয়ের নামে রাজনীতি করেছে কেন্দ্র। যে ভাবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে পোস্টিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা নিতান্তই দাদাগিরি। এটা সহযোগিতা মূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মন্ত্র নয়। বাংলায় শাসক দলের এক নেতার কথায়, এটা ঠিক যে রাজ্যের অফিসারকে কেন্দ্রে বদলির নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সেই নিয়মের যখন অপব্যবহার করা হয়, স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাউকে শায়েস্তা করতে তার প্রয়োগ করা হয়, তখন আখেরে প্রতিষ্ঠানই দুর্বল হয়। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী জমানায় ধারাবাহিক ভাবে প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার কাজটাই চলছে।