বাংলায় করোনা ছড়ালে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী দায়ী হবেন: মমতা

0
844

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দু’দিন আগে একটি জনসভা থেকে দিদি অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপির বহিরাগতরা করোনা ছড়িয়ে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। শনিবার পূর্বস্থলীর সভা থেকে সেই দায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘাড়েও চাপাতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন মমতা বলেন, “বাংলায় করোনা ছিল না। বাইরে থেকে গুন্ডাদের নিয়ে চলে এসেছে। পাড়ায় পাড়ায় বসে রয়েছে। হোটেল, গেস্টহাউস, বাড়ি ভাড়া নিয়ে রয়েছে। সবার করোনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চ সাজানোর কাজ যে করে, সে-ও বাইরের। এখানে করোনা ছড়ালে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী দায়ী হবেন।”

কোভিড পরিস্থিতিতে গতকাল সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল নির্বাচন কমিশন। সেখানে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, শেষ তিন দফার ভোট এক দফায় করে নেওয়া হোক। কিন্তু তাতে বিজেপি, বাম-সহ বিরোধীরা আপত্তি জানায়। কমিশনও দফা কমানোয় সায় দেয়নি। তবে নির্বাচন সদন জানিয়েছে, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম দফার ভোটে প্রচারের সময় কমবে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধে সাতটা পর্যন্ত প্রচার করা যাবে। ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে বন্ধ করতে হবে প্রচার। এদিন তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন মমতা।

পূর্বস্থলীর সভা থেকে মমতা বলেন, “কমিশনকে বললাম দফা কমিয়ে দিতে। তা না করে প্রচারের মেয়াদ কমিয়ে দিল। কারণ বিজেপি-র আর তেমন প্রচার নেই। এই পা নিয়ে প্রচার করে বেড়াচ্ছি। তা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার দিনগুলো নষ্ট করে দিল। আগামী দিনে যে কেন্দ্রে ভোট, বিজেপি জানে তার একটাতেও জিতবে না। তার জন্যও প্রচারের সময় কমিয়ে দিল।”

দেশে করোনা বাড়ছে অথচ প্রধানমন্ত্রী ভোটের প্রচার করে বেড়াচ্ছেন বলেও সমালোচনা করেন দিদি। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী অক্সিজেন-সহ অন্যান্য উপকরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় বলছে, তিনি ভোট প্রচারে ব্যস্ত!

এখানেই শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিয়মিত এরাজ্যে সভা নিয়েও নিশানা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, ‘রোজ দেখছি প্রধানমন্ত্রী ,কলকাতায় আসছেন। কোভিড নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। কোভিড বাড়িয়ে দিয়েছে ওরা। গত ৫ মাস কোভিড ছিল না। তখন যদি ইনঞ্জেকশনটা দিয়ে দিত তাহলে এভাবে করোনা আসত না। আপনাদের বলব মাস্কটা পড়ুন। এখনও আমাদের রাজ্যে যতটুকু কোভিড হয়েছে তা বহিরাগতদের জন্য। বারবার বলছি বাহিরাগতরা এসে বসে আছে। ওদের করোনা আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে।’

বাংলায় করোনা বাড়ছে হু হু করে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বাকি তিন দফা ভোট একসঙ্গে করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠক করে সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের বাকি তিন দফা ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে যেমন প্রচার বন্ধ রাখা হচ্ছে, তেমনি সন্ধ্যে ৭টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনও প্রচার করা যাবে না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন সেই বিষয়টি নিয়েও সুর চড়িয়ে কেন্দ্রকেই দায়ী করলেন তৃণমূল নেত্রী।

উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন ধরে বেড়েই চলেছে রাজ্যের করোনা সংক্রমণ। যেখানে এপ্রিল মাসের শুরুতেও দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৫০০-র মধ্যে এখন তা বেড়ে প্রায় ৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ হাজার ৪৭ জন। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৫০৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র কলকাতাতেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। কলকাতার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা সংক্রমণের নিরিখে রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। বিগত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৯২ জন, মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের।

Previous articleগাইঘাটার নির্দল প্রার্থী সজল বিশ্বাস প্রচারে ঝড় তুলছেন
Next articleক্ষমতায় এসে সমস্ত সরকারি টাকা চুরির তদন্ত করে দোষীদের জেলে পাঠানো হবে : দিলীপ ঘোষ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here