দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মহারাষ্ট্র, দিল্লির মতো বাংলাতেও কোভিডের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলায় বাকি দফার ভোটগুলি গুটিয়ে এনে এক দফাতেই করার দাবি জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন তিনি বলেছেন, কোভিড পরিস্থিতিতে ৮ দফায় ভোট করানোর বিরুদ্ধে আমরা বরাবরই সওয়াল করেছি। কিন্তু তা শোনা হয়নি। এখন যে হেতু নতুন করে কোভিডের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তাই কমিশনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি যে বাকি দফার ভোটগুলিকে গুটিয়ে এক দফাতেই করা হোক। তাতে সংক্রমণ ছড়ানো অনেকটাই আটকানো যাবে।
তাৎপর্যপূর্ণ হল এ ব্যাপারেও আবার বামেদের সঙ্গে মতান্তর রয়েছে মমতার। গতকাল বামেরা ঘোষণা করেছেন, কোভিডের সংক্রমণ নতুন করে ছড়ানোর কারণে তাঁরা বড় জনসভা আর করবেন না। এ ব্যাপারে এদিন একটি সংবাদমাধ্যম মমতার প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল। তাতে দিদি বলেন, ওরা পাচ্ছে না তাই খাচ্ছে না। এমনিতেই ওদের সভায় লোক হচ্ছে না। তাই ওরা এ সব কথা বলছে।
তাঁর কথায়, ‘সংযুক্ত মোর্চার প্ল্যানে আই ডোন্ট সাপোর্ট’। অর্থাৎ বাকি দফার ভোট একত্রে করার পক্ষে মমতা, কিন্তু জনসভা ছোট করার পক্ষে তাঁর সায় নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিজেপি মুখপাত্র সায়ন্তন বসু বলেন, বাংলায় কোভিড ব্যাবস্থাপনা কত খারাপ ছিল তা মানুষ ভাল করে জানেন। কোভিডের সময়ে মিষ্টির দোকান খুলে রাখা, আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা গোপন করা, ফুলের বাজার খুলে দেওয়া—কী করেননি উনি। আসলে কোভিডের ছুতো দেখিয়ে ভোট এক দফায় করিয়ে ছাপ্পা ও লুঠের ধান্দা রয়েছে ওদের। সেটি কখনওই হবে না।
এখন প্রশ্ন হল, এ ব্যাপারে কমিশন কী ভাবছে? জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, চার দফার ভোট গুটিয়ে ১ দফায় সেরে ফেলার ব্যাপারে কোনও আলোচনাই হয়নি। তেমন সম্ভাবনা খুবই কম। পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ হবে ১৭ এপ্রিল। তা নির্ধারিত দিনেই হবে। বাকি ৩ দফার ভোট হবে যথাক্রমে ২২, ২৬ এবং ২৯ এপ্রিল। সেই নির্ঘণ্ট বদল হচ্ছে না।
তবে কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, ভোটের প্রচারে বেরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি যাতে কোভিডের বিধিনিষেধ মেনে চলে সে ব্যাপারে সতর্ক করবে নির্বাচন সদন। বড় জনসভা না করে সামাজিক দূরত্ব রেখে ছোট সভা করা, সভায় উপস্থিতদের বাধ্যতামূলক ভাবে মাস্ক পরা ইত্যাদি সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে কমিশনের তরফে অনুরোধ করা হবে।
কমিশনের এক অফিসারের কথায়, বাংলায় একাধিক দফায় ভোট করানোর উদ্দেশ্য হল নির্বাচনকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করা। যাতে ভোটের দিন এলাকায় যথাযথ সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশ দিয়ে ভোট করানো যায়। তা ছাড়া কোভিডের কারণে বুথে সমস্ত রকম সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি ইভিএমের বোতাম টেপার জন্য ট্রান্সপারেন্ট গ্লাভস দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের। সেই সঙ্গে মাস্ক পরা, ভোটের লাইনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদিও সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। ফলে সমস্যা সেখানে হচ্ছে না। সমস্যা হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলির সভা ও রোড শো-তে। তারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলেই সুষ্ঠু ও নিরাপদ ভাবে ভোট করানো সম্ভব।