দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূলের অভিযোগ খারিজ করে কড়া ভাষায় পাল্টা চিঠি কমিশনের। নন্দীগ্রামে গিয়ে আহত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর চোট নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই কমিশনে গিয়ে অভিযোগ জানায় রাজ্যের শাসক দল। চিঠিতে বলা হয়েছিল, ‘ডিজি বদলের পরই নন্দীগ্রামে তৃণমূল সুপ্রিমোর উপর হামলা হয়েছে।’ সেই অভিযোগ খারিজ করে উল্টে সংবিধানের ৩২৪ ধারা টেনে এসে শাসক দলকে তুমুল তুলোধনা করেছে কমিশন।
তৃণমূলের অভিযোগের জবাবে কড়া চিঠিতে প্রথমেই নির্বাচন কমিশন আপত্তি জানিয়েছেন ভাষা চয়নকে। তাদের মতে, ডিজি রদবদলের ব্যাপারটি টেনে এনে আদপে কমিশনকেই কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। চিঠিতে কড়া ভাষায় শাসক দলের সমালোচনা করে কমিশন জানিয়েছে, ‘ ডিজি বা ডিজিপি সরানোর সময় কখনই রাজ্য সরকারের সঙ্গে তা আলোচনা করা হয় না। সে নিয়মও নেই। কোনও বিশেষ উদ্দেশ্যে নিয়ে ডিজিকে সরায়নি কমিশন। এক্তিয়ারভুক্ত নিয়ম মেনেই ২ পর্যবেক্ষকের সুপারিশেই ডিজি বদল করা হয়েছে।’
একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। তাঁর সুরক্ষার গাফিলতি নিয়ে রাজ্যের কোর্টেই বল ঠেলেছে কমিশন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ভোটের নামে রাজ্য প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেয়নি কমিশন। রাজ্য প্রশাসনের দৈনন্দিন কাজ সামলাবে রাজ্য সরকারই।’
এদিন সকালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা কমিশনের অফিসে যান। নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনার পিছনে চক্রান্তের অভিযোগ করে শাসকদল। কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই রাজ্যে সংহতি বজায় ছিল। নির্বাচন কমিশন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)কে সরাল। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার পর সরানো হল রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর যে আঘাত হানল, তার পূর্বাভাস ছিল। বিজেপি সাংসদদের বক্তব্যে পরিষ্কার ছিল যে, তাঁর উপর আক্রমণ করা হতে পারে। ডিজি-কে সরানোর পরের দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় যে আক্রমণ হল, তার দায়িত্ব কার? আইনশৃঙ্খলা অবনতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি কমিশনে।’ এই চিঠিরই পাল্টা জবাবে তুলোধোনা কমিশনের।
পর্যবেক্ষকদের মতে, কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তৃণমূল হয়তো দেখাতে চাইছে যে নির্বাচন সদনের অতি সক্রিয়তায় তারা আক্রান্ত। আর তার মাধ্যমে সহানুভূতি কুড়োতে চাইছে। কমিশন কড়া জবাব দিয়ে বুঝিয়ে দিল এই দায় চাপানোর কৌশল দুর্ভাগ্যজনক শুধু নয়, সাংবিধানিক ব্যবস্থাকেও অসম্মান করা।