দেশের সময়, বনগাঁ: দলকে ব্ল্যাকমেল করছে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রেরবিধায়ক।
শুক্রবার দুপুরে বাড়িতে বসে বিশ্বজিৎ দাস বলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের কে সামনে রেখে বিজেপিকে ব্ল্যাকমেল করছে শান্তনু ঠাকুর দলের নেতাকর্মীদের জনপ্রতিনিধিদের যোগ্য সম্মান দিচ্ছেন না ,এমনকি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মানছেন না ৷তার এই মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠে আসে তিনি কি তাহলে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছেন এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আমি চিরদিনই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসি এক্ষেত্রেও তাই করছি তবে দলত্যাগ প্রসঙ্গে এখন কোন উত্তর দিতে চাননি তিনি।
উল্লেখ্য,বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস এবং নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং। দুজনেই কয়েক মাস আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সুনীল সিং সম্পর্কে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের শ্যালক। ভোটের আগে রাজ্য বিধানসভার শেষ দিনটিতে সব সদস্যই ছিলেন কমবেশি হালকা মেজাজে। তারমধ্যে হঠাৎই মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে ঢোকেন বিজেপিতে যোগ দেওয়া দলত্যাগী দুই বিধায়ক। বনগাঁ উত্তরের বিশ্বজিৎ দাস এবং নোয়াপাড়ার সুনীল সিং। সুনীল মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে আগে বেরিয়ে গেলেও বিশ্বজিৎ ছিলেন প্রায় আধ ঘণ্টা। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ঘর থেকে বেরিয়ে দুজনেই দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
মুখে তাঁরা উন্নয়নের কথা বললেও থেমে থাকেনি রাজনৈতিক জল্পনা। আর কয়েক দিনের মধ্যেই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতিতে বিধায়ক কোটার কাজ অথবা কোনও অর্থ বরাদ্দ হলে সে বিষয়ে টেন্ডার ডাকার মত সময়ও আর হাতে নেই। তাহলে সব জেনেশুনে ভোটের দোরগোড়ায় উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে কেন গেলেন তাঁরা? প্রশ্ন উঠে ছিল তখনই৷
উল্ল্যেখ্য, এদিন বিশ্বজিৎ দাস দেশের সময় কে জানান, বৃহস্পতিবার ঠাকুর নগরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাছিল। সেখানে নিরাপত্তার কড়াকড়ি নিয়ম দেখিয়ে তাঁকে আটকে দেওয়া হয় সভাস্থলের বাইরে। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তিনি পৌঁছান অমিত শাহের সভামঞ্চে। তবে এ দিন বক্তৃতায় তাঁর নাম নেননি শাহ। ক’দিন আগে বিধানসভা চত্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রণাম করে এমনিতেই বিতর্কে জড়িয়েছেন বিশ্বজিৎ। এ দিন শাহ তাঁর নাম না নেওয়ায় ফের স্থানীয় রাজনীতিতে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
বিশ্বজিৎ দাসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এদিন শান্তনু ঠাকুর (বনগাঁ সাংসদ ) বলেন, ‘তিনি কেন এমন কথা বলছেন জানিনা। কে কাকে ব্ল্যাকমেল করছে তাও বুঝতে পারছি না। সিএএ আইনটি আমি আনিনি। মতুয়ারা চাইছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে ঠাকুরনগরে উপস্থিত হয়ে এ সম্পর্কে বক্তব্য রাখুন। তাই তিনি এসেছিলেন। কবে সিএএ লাগু হবে তা কেন্দ্র সরকারই ঠিক করবে।’ ‘‘আমার বিরুদ্ধে বলার জন্য বিশ্বজিৎকে কেউ প্রভাবিত করছেন। কারা প্রভাবিত করছেন, উনি সেটা আগে বলুন।’’ অমিতের সিএএ আশ্বাস নিয়ে শান্তনুর বক্তব্য, ‘‘সিএএ আমি আনিনি। এনেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সুতরাং এই নিয়ে কিছু বলার অর্থ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেই অপমান করা।’’
এদিন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানান, তিনি দলবদল করছেন না। তাঁর কথায়, ‘এই সময় অন্য দল ছেড়ে সকলে বিজেপি-তে যোগদান করতে চাইছে। কেউ বিজেপিছেড়ে যাবে না।‘ প্রসঙ্গত, সোমবার বিধানসভার শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে দলবদলের জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন বনগাঁ উত্তরের বিজেপি-র বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। এর মধ্যে বিশ্বজিতের বাড়িতেও পুলিশি নিরাপত্তার প্রস্তাব যাওয়ায় জল্পনা বেড়েছিল। কিন্তু, এই নেতা আপাতত দলেই থাকছেন বলে জানান দিলীপ ঘোষ।
আজ বিশ্বজিৎ দাসের এমন মন্তব্যের জেরে রাজনৈতিক মহল এ ফের বনগাঁর বিজেপি নেতার তৃণমূলে ঘর ওয়াপসির জল্পনা বাড়ল