দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সেই মতো সপ্তম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে চলেছেন নীতীশ কুমার৷ আজ, সোমবার বিকেলে পাটনায় এনডিএ জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। তাঁর সঙ্গে শপথ নেবে বিহারের নতুন মন্ত্রিসভাও। রবিবার তাঁর বাসভবনে জোটের বৈঠকের পর নীতীশ নিজেই এ কথা জানান।
এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রী বাছাই পর্ব মোটের উপর মসৃণ ভাবে মিটে গেলেও জয়ী জোটের দুই প্রধান শরিকের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ ঘিরে। সূত্রের খবর, বৈঠকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দেন সুশীল মোদীকে সরিয়ে অন্য কাউকে উপমুখ্যমন্ত্রী করতে চান তাঁরা। আর তাঁরা যে নীতীশ ঘনিষ্ঠ কোনও ব্যক্তিকে এই পদে বসাতে চান না, সেটাও কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায় জেডিইউ প্রধানের কাছে। সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের মত বিহারেও তাঁরা দুই উপমুখ্যমন্ত্রীর ফর্মুলা চালুর কথা বলেন। যে দু’জনের নাম প্রস্তাব করা হয় তাঁরা হলেন – বর্ষীয়ান বিজেপি বিধায়ক তারকেশ্বর প্রসাদ এবং রেণু দেবী। কাটিহারের বিধায়ক তারকেশ্বর কিংবা বেতিয়া থেকে চারবারের জয়ী রেণু দেবী, কেউই নীতীশ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নন। নামদুটি বিশেষ পছন্দ না হলেও ‘বড় দাদা’ বিজেপির সামনে নীতীশের কিছু বলার ছিল না বলেই সূত্রের দাবি। পরে এই বৈঠকেই বিজেপির পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হন তারকেশ্বর। এ পর্যন্ত বিষয়টি একরকম ছিল। কিন্ত, রাত বাড়তেই বেঁকে বসেন নীতীশ। সূত্রের দাবি, দুই নয়, এক উপমুখ্যমন্ত্রীর জন্যই চাপ দিতে শুরু করেন তিনি। আপত্তি ওঠে তারকেশ্বরকে নিয়েও। এর পর বিজেপির একটি অংশ থেকে তাঁর পরিবর্তে বিধায়ক কামেশ্বর চৌপালের কথা বলা হয়। এখন, এক না দুই, তারকেশ্বর নাকি কামেশ্বর, নাকি দু’জনেই – সেটা সোমবার সকালের পরই স্পষ্ট হবে।
অন্যদিকে, পদ হারিয়ে ক্ষুব্ধ সুশীল মোদী৷ সরাসরি টুইটারে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি লেখেন, ‘আমার ৪০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার অনেক কিছু দিয়েছে। আগামী দিনেও যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, পালন করব৷ কর্মীর পদ তো আর কেউ কাড়তে পারবে না!’ বলাবাহুল্য টুইটকে ভালো ভাবে নেননি পাটনায় উপস্থিত রাজনাথ সিং, ভুপেন্দ্র যাদবরা। সূত্রের খবর, রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় জয়সওয়ালের মাধ্যমে সুশীল মোদীকে জানিয়ে দেওয়া হয় সে কথা। তৎক্ষণাৎ ফলও হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও দুটি টুইট করে তারকেশ্বর প্রসাদ ও রেণু দেবীকে অভিনন্দন জানান সুশীল৷ দিল্লিতে বিজেপি সূত্রের খবর, ক্ষোভ প্রশমন করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হতে পারে সুশীল মোদীকে।
এ দিকে, সূত্রের খবর, সদ্য সমাপ্ত ভোটে জেডিইউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে চাইছিলেন না তিনি৷ তাঁর প্রস্তাব ছিল, বিজেপির কোনও বিধায়ককে মুখ্যমন্ত্রী করা হোক৷ রাজনাথ সিং সাফ জানিয়ে দেন, ‘বিহারের জনতাকে বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পূরণ হবে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বেই।’ রাজনাথকে সমর্থন করেন বৈঠকে উপস্থিত বিজেপির অন্য দুই কেন্দ্রীয় নেতা ভূপেন্দ্র যাদব এবং দেবেন্দ্র ফড়ণবীশও৷ এরপর নীতীশ আর আপত্তি করেননি।