দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অতিমারী সঙ্কটে দেশে লকডাউন শুরু হবার পর থেকেই কর্মহীন অধিকাংশ যৌনকর্মীরা। পেট চালাতে অন্য পেশায় যেতে চেয়েও পারছেন না তাঁরা। কারণ মাথায় ঋণের বোঝা। টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন মহাজন, কারবারের মালিক, দালালরা, যাঁদের থেকে টাকা ধার করতে হয়েছিল লকডাউনের সময়। জানাচ্ছে সাম্প্রতিক সমীক্ষা।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং অরগানাইজেশনের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, সোনাগাছির প্রায় ৮৯% যৌনকর্মীদের ওপর ঋণের ফাঁস চেপে বসেছে। ৭৩% যৌনকর্মী এখন এই পেশা ছেড়ে অন্য কোন পেশায় যুক্ত হতে চাইছেন। সোনাগাছি এলাকায় অন্তত সাত হাজার যৌনকর্মীর বাস। সমীক্ষায় সোনাগাছির ৯৮% যৌনকর্মীর সঙ্গে কথা বলে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, জুলাইয়ে লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ার পর থেকে এখন ৬৫% মত কাজ শুরু হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্ণধারের কথায়, মাথায় ঋণের বোঝা নিয়ে এখন কিছুই করতে পারছেন না যৌনকর্মীরা। লকডাউন প্রায় উঠে গেলেও সংক্রমিত হওয়ার ভয় পুরোপুরি ভাবে কাজে ফিরতে পারছেন না তাঁরা। এই সময় দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারের উচিত বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে এসে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো।
আরও একটি সংস্থা দুর্বারের এক কর্মী জানাচ্ছেন, যৌনকর্মীদের পরিচালনায় একটি সমবায় ব্যাঙ্ক থাকলেও ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে মহাজন, দালাল বা কারবারের মালিকদের থেকেই ধার করতে পছন্দ করেন যৌনকর্মীরা। কারণ সেক্ষেত্রে কোনও কাগজ–পত্রের প্রয়োজন হয়না।
এ বিষয়ে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। বলেন, ‘এ ধরনের কোনও সমীক্ষা ব্যাপারে তাঁর কিছুই জানা নেই ন। কিন্তু যৌনকর্মীরা যদি সরকারকে লিখিত জানায়, তাহলে এই বিষয়টা নিয়ে আমরা এগোতে পারি। গত মার্চের লকডাউনের পর থেকে যৌনকর্মীদের সাহায্যার্থে বেশকিছু পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। তাঁদের জন্য বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
দীর্ঘদিন ধরে ঋণের জালে আটকা পড়ে শোষণের শিকার হচ্ছেন এশিয়ার বৃহত্তম ‘রেডলাইট’ এলাকা সোনাগাছির যৌনকর্মীরা৷ এখন দেখার রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য কত দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়।