দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিরোধীদের মত না নিয়ে ‘অগণতান্ত্রিক উপায়ে’ রাজ্যসভায় দুটি কৃষি বিল পাশ করানো এবং রাজ্যসভায় বিশৃঙ্খলতার দায়ে দুই তৃণমূল সাংসদ–সহ ৮ সাংসদকে এক সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড করার ঘটনার নিন্দা করে সুর চড়ালেন মমতা। আজ সোমবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, রাজ্যে টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি করে যাবে তৃণমূল।
এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যসভায় গতকাল যা ঘটেছে, তাতে কৃষকদের জন্য তৃণমূল–সহ অন্যান্য বিরোধী দল সংসদে যে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তাতে আমি গর্বিত। আমি কিন্তু এটা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, একটা পার্টির চেয়ারপার্সন হিসেবেও বলছি। গতকাল তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা ওখানে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেছে। মুখ বুজে বসে থাকাটা বিরোধীদের কাজ নয়। তাও ক্ষমতার জোরে গায়ের জোর দেখিয়ে ডিভিশন না দিয়ে বিল পাশ করেছে বিজেপি।”
কেন্দ্রকে ঠুকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তারা একটা করোনা মহামারীকে ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে, তার উপরে এই কৃষিবিল নিয়ে এলে সেটা আরও এখ মহামারীর কারণ হবে। তাঁর কথায়, “৭৩-এর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে ওরা। আর মেজরিটি থাকা মানে এই নয় গায়ের জোরে দেশটার গণতন্ত্র ভেঙে দেবে। ৮ জন সাংসদকে বহিষ্কার করে থামেনি, নিন্দার প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। দেশের মানুষের জন্য প্রতিবাদ করতে গেছে আর তার পাল্টা নিন্দা প্রস্তাব! আমি গর্বিত ওদের (ডেরেক, দোলা) জন্য।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, হিটলারি কায়দায় দেশ চলছে। সারা ভারতবর্ষের খুব দুর্দিন আসছে। তারই মধ্যে আলু, পেঁয়াজ এসব আবশ্যিক কৃষিপণ্য রাজ্যের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রকে দুষে মমতা বলেন, ‘‘বাজারে আগে ফসলের দাম বাড়লে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম। রাজ্যের সব ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে। ফোড়ে-জোতদারদের জন্ম দিয়েছে এরা। তারা চাষির সব জিনিস লুঠে নেবে।
দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। করোনা ঠেকাতে পারল না। খাদ্যের মহামারী নিয়ে এল। এক দিকে করোনা, তার উপর বিজেপির এই বুলডোজ করা বিল ‘মরোনা’। কৃষক বিল যে ভাবে পাশ করা হয়েছে। আমি বলি ছিঃ ছিঃ। বিজেপি দেশের লজ্জা, লজ্জা, লজ্জা।”
মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারির সুরে আরও বলেন, আগামীদিনে শ্রমিক ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দল এক হবে। কারণ শ্রমিকদের ওপর প্রত্যাঘাত আর কৃষকদের প্রতি বজ্রপাত সংবিধান মানে না। গতকাল রবিবার যা হল, তাতে ব্ল্যাক সানডে ব্ল্যাক সানডে হয়েই থাকবে। ওরা সংবিধান মানে না। গায়ের জোরে বিল পাস করিয়েছে। কৃষক, ক্ষেত-মজদুরদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হল। গণ আদালতে সংবিধানের গণহত্যা হল।”