দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে গেলে সবচেয়ে আগে দরকার বিশ্বাস। দুই দেশই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে তখনই আসবে যখন বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা হবে। আগ্রাসন দেখিয়ে জবরদস্তি অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে, আন্তর্জাতিক নীতির সম্মান রক্ষিত হবে এবং বিশ্বাস রেখেই দুই দেশ শান্তির শপথ নেবে, মস্কোয় সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর বার্ষিক সম্মেলনে চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর উদ্দেশে এমনই বার্তা নিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।

সামরিক স্তরে দফায় দফায় বৈঠকের পরেও সীমান্ত সমস্যার সমাধানে এসে পৌঁছতে পারেনি ভারত ও চিন দুই দেশই। বরং সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে শান্তি বজায় রাখার যে আলোচনা হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে তার মর্যাদা ভেঙেছে চিনই। নতুন করে আগ্রাসনের চেষ্টা দেখিয়েছে তারা। যার কারণে রীতিমতো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে লাদাখ সীমান্তে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা তথা এলএসি-তে কীভাবে স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনা যায় সেই নিয়ে আজ মুখোমুখি বৈঠকে বসেছেন রাজনাথ সিং ও চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল উই ফেঙ্গে।

সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ মীমাংসার জন্য আলোচনা চলছে দু’তরফেই। এই বৈঠকেই চিনকে বার্তা দিয়ে রাজনাথ এমন কথা বলেছেন।

লাদাখে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রথম নয়। আগেও বহুবার হয়েছে। কিন্তু সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে বৈঠকের পরে তার সমাধানও করা গেছে। কিন্তু ১৫ জুন গালওয়ানের মুখোমুখি সংঘাতের পরে সীমান্ত পরিস্থিতি চরমে ওঠে। দফায় দফায় বৈঠকেও শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। বরং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এখন প্যাঙ্গং লেকের পাহাড়ি এলাকায় সামরিক বহর নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুই দেশের বাহিনীই।

কিছুদিন আগেই নতুন করে সামরিক পদক্ষেপ করে সংঘর্ষে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চিনের বিরুদ্ধে। বেজিং বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে দাবিও করেছে নয়াদিল্লি। সীমান্তে পরিস্থিতি এখন রীতিমতো উত্তেজক। এমন অবস্থায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপায় খুঁজতেই আলোচনার টেবিলে বসেছেন দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যার সূত্রপাতের পর থেকেই উত্তাপ নিরসনের চেষ্টা করে যাচ্ছে পুতিনের দেশ। সাংহাই কঅপারেশন অর্গানাইজেশনের ৯টি দেশের মধ্যে ভারত ও রাশিয়ার মতো সদস্য চিনও। আলোচনা টেবিলে দুই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মুখোমুখি উপস্থিতি দুই দেশের মধ্যে লাগাতার উত্তেজনার প্রশমনের উপায় হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই আজকের বৈঠক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে, রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগুর সঙ্গে রাজনাথের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেরও গুরুত্ব আছে। আন্তর্জাতিক থেকে আঞ্চলিক সব বিষয়েই আলোচনা হবে দু’জনের মধ্যে। প্রতিরক্ষার বিষয়টাও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ার থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনার ব্যাপারেও আলোচনা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here