দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কোনও দেশের জনসংখ্যার এক বিরাট অংশ কোনও রোগে আক্রান্ত হলে তাদের মধ্যে সেই রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মায়। তাকে বলে হার্ড ইমিউনিটি। কিন্তু ভারতের মতো দেশে হার্ড ইমিউনিটি করোনা অতিমহামারীকে পরাস্ত করতে পারবে না। বৃহস্পতিবার এমনই জানাল স্বাস্থ্যমন্ত্রক। মন্ত্রকের এক অফিসার বলেন, আমাদের দেশের জনসংখ্যা বিপুল। তাছাড়া বেশিরভাগ জায়গায় জনঘনত্বও খুব বেশি। এই অবস্থায় হার্ড ইমিউনিটির মাধ্যমে কাজ হবে না। ভ্যাকসিন চাই। তবেই কোভিড ১৯-কে পুরোপুরি রোধ করা যাবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ওই কর্তা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “কোনও রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য পরোক্ষে সাহায্য করে হার্ড ইমিউনিটি। তার মাধ্যমে কোনও জনগোষ্ঠী একটি রোগ থেকে রক্ষা পায়। যখন জনসংখ্যার এক বড় অংশ কোনও রোগে আক্রান্ত হয় ও সেরে ওঠে, তখন হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়। অথবা ভ্যাকসিনের মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হতে পারে।”
চলতি সপ্তাহে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৫ লক্ষ। অতিমহামারীতে যে পাঁচটি দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে সব থেকে দ্রুত হারে ভারতে ছড়াচ্ছে করোনা। আমেরিকায় রোজ সংক্রমণের হার ১.৬ শতাংশ। ব্রাজিলে ২.৩ শতাংশ। কিন্তু ভারতে দৈনিক সংক্রমণের হার ৩.৬ শতাংশ।
গত কয়েক মাস ধরে সরকার বলে আসছে, আমাদের দেশে করোনা থেকে বহু লোক সেরে উঠছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মত হল, যে রোগে মৃত্যুর হার চার শতাংশেরও কম, সেখানে সেরে ওঠার হার দিয়ে কিছু বোঝা যায় না। চলতি সপ্তাহে মুম্বইয়ে সাত হাজার মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা যায়, তাঁদের বেশিরভাগই উপসর্গহীন অথবা কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন। তাঁরা থাকতেন মুম্বইয়ের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। এই সমীক্ষা থেকে অনেকের ধারণা হয়, ভারতে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হতে শুরু করেছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ১৮ জুন ভারতে কোভিডে মৃত্যুহার ছিল ৩.৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার তা কমে হয়েছে ২.২১ শতাংশ। গত চারদিনে দৈনিক গড়ে ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার জনের টেস্ট হয়েছে। দেশের ২১ টি রাজ্যে কোভিড পজিটিভ হওয়ার হার ১০ শতাংশের কম। পাঞ্জাব, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীরে পজিটিভ হওয়ার রেট পাঁচ শতাংশের কম।
বিশ্ব জুড়ে এখন ২৪ টি ভ্যাকসিন পরীক্ষার স্তরে আছে। তার মধ্যে ভারতে তৈরি দু’টি ভ্যাকসিন আছে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার স্তরে। বিশ্বে তিনটি ভ্যাকসিন এখন তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার স্তরে আছে। সেই ভ্যাকসিনগুলি বানিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন ও চিন।